রাজধানীর কাকরাইল মসজিদে তাবলিগ-জামাতের দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় ছয় মুরব্বির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।আজ শনিবার বিকালে তাবলিগ-জামাত ও পুলিশ সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।শনিবার দুপুরে অনুষ্ঠিত বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, দুইপক্ষের দুইজন করে চারজনকে সাময়িকভাবে কাকরাইলে যাওয়া-আসা নিষিদ্ধ করা হয়। তারা হলেন- আব্দুল্লাহ মনছুর, ড. এরতেজা হাসান, ইঞ্জিনিয়ার মাহফুজ ও ড. আজগর। এছাড়া আগামী ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত তাবলিগ-জামাত সদস্য ওয়াসিফুল ইসলাম ও সুরা সদস্য মাওলানা জুবায়ের সাহেব কাকরাইলের বাইরে থাকবেন।প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শনিবার সকালে কাকরাইল মসজিদে তাবলিগ-জামাতের বৈঠক বসে। এ সময় মাওলানা সাদের বিতর্কিত বক্তব্যকে ঘিরে সাদপন্থী ও তার বিরোধীপক্ষের মধ্যে বাগবিতণ্ডা শুরু হয়।একপর্যায়ে সাদবিরোধীরা বলেন, মাওলানা সাদ যদি তার বিতর্কিত বক্তব্য থেকে সরে না আসেন তাহলে তাকে বাংলাদেশে ঢুকতে দেয়া হবে না। একথা বলার সঙ্গে সঙ্গে তাদের দুইপক্ষের মধ্যে মারামারি শুরু হয়।এক তাবলিগকর্মী বলেন, মাওলানা সাদ ভুল করেছে একথা বলায় আমাকে মারধর করা হয়েছে। সাদপন্থী ও সাদবিরোধীদের মধ্যে বিরোধের জের ধরে মারামাররি ঘটনা ঘটে বলে জানা গেছে।কাকরাইল মসজিদের বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে ঢাকা মহানগর পুলিশের রমনা বিভাগের উপ-কমিশনার মারুফ হোসেন সরদার বলেন, ‘মসজিদের পরিবেশ রক্ষায় ও বিশৃঙ্খলা এড়াতে কাকরাইল মসজিদ থেকে বহিরাগতদের বের করে দেয়া হয়েছে। মসজিদের স্বাভাবিক কাজকর্ম চলবে। বাইরে থেকে কেউ এসে মসজিদে অবস্থান করতে পারবেন না। তবে নামাজ আদায় করা যাবে।উল্লেখ্য, রাজধানীর কাকরাইল মসজিদে তাবলিগ-জামাতের সদস্য মাওলানা জুবায়ের এবং সুরা সদস্য ওয়াসিফুল ইসলামের গ্রুপের মধ্যে ধস্তাধস্তির ঘটনা ঘটে। ঘটনাটি ২০১৭ সালের ১৪ নভেম্বর।এসময় জুবায়ের পাকিস্তান গিয়ে একটি জামাতে অংশ নিয়ে আহমেদ লাকশাহ নামের একজনের সঙ্গে দেখা করেন। তিনি জুবায়েরের কাছে বাংলাদেশের তাবলিগ-জামাতের সদস্যদের জন্য একটি বার্তা দিয়েছিলেন। তবে বাংলাদেশে এসে তিনি সে বার্তা জানাননি। সুরা সদস্যরা অন্য মাধ্যমে বার্তার বিষয়টি জানতে পারেন। সুরা সদস্যদের বৈঠকের সময় বিষয়টি উঠে আসে এবং তখনই দুইপক্ষের সংঘর্ষ শুরু হয়। এরপর দিল্লির নিজামুদ্দিন মারকাজের বর্তমান মুরব্বি মাওলানা সাদ কান্ধলভীর বিতর্কিত বক্তব্য নিয়ে দুইপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ ঘটে। তাবলিগ-জামাতের দুই পক্ষের বিভেদের মধ্যেই ফের আজ শনিবার সকালে মারামারির ঘটনা ঘটেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে দুইপক্ষকে মসজিদ থেকে বের করে দেয়া হয়।অপরদিকে বিষয়টি নিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল মন্ত্রণালয়ে কয়েকবার বৈঠকও করেছেন। এরপরও দুই পক্ষকে সমঝোতায় আনা সম্ভব হয়নি। এর আগেও তাবলিগ-জামাতের বিরোধ নিয়ে এই দুই পক্ষের মধ্যে মামলা-পাল্টা মামলা হয়েছে।