উলুধ্বনি
ফখরুল হাসান
আমন্ত্রিত অতিথির মাঝে আমিই কেবল তোমার চোখে খুনের আসামি !
হ্যাঁ আমি খুনী , বীরত্বের সাথে খুন করেছিলাম শত যুবকের স্বপ্ন
আমার অপরাধ,
নিষ্ঠুর ভাবে লুট করেছিলাম তোমার সরলমন ।
সীমাহীন শূন্যতার দুর্ভিক্ষের মাঝে উপহার দিলে
আপন সত্তা
ধর্মের বেড়াজাল তুচ্ছ করে ,
তুলে দিলে দুর্মূল্য সম্পদ তোমার হৃদয় ।
ধর্মের দন্ড, সমাজের রক্ত চক্ষু উপেক্ষা করে অসীম দুঃসাহসে
হৃদয়ের সীমান্তে ,
প্রেমের পতাকা হাতে পাশে দাঁড়ালে
কিন্তু,
ধর্মের শ্যাওলা পড়া দেয়াল অন্ধ সভ্যতার কাছে বন্দীত্ববর করলো পবিত্র প্রেম !
তাই বছরের পর বছর নির্বাসিত জীবন নিয়ে বিচ্ছিন্ন হয়ে বেঁচে থাকা ।
আঠারো বছর পর প্রেমের আকাশে পূর্বাভাস দিলো ক্ষণিকের দেখার ।
হয়তো তুমিও আমার মতো প্রতিক্ষার প্রহর গুণেছ ।
কীর্তনের ঢাক , বাদ্যযন্ত্রের আওয়াজ আর তোমার চিরচেনা উলুধ্বনি
আহ্
পূর্বে নিমন্ত্রণ থাকা সত্ত্বেও খাওয়া হয়নি তোমার হাতে বানানো
নারিকেলের নাড়ু
তোমাকে দেখে দেখে মধ্য রাত হয়েছে
তা বুঝতে পেরেছি
পাশে বসে থাকা ভদ্রলোকের কথায়
সর্বগ্রাসী তৃষ্ণা আর ক্ষুধার যন্ত্রণা মুহূর্তেই
বিদায় নিলো এক কাপ চা আর উলুধ্বনির শব্দে ;
ধোঁয়া উড়া চায়ের কাপে ভেসে উঠলো আশ্চর্য লাবণ্যমণ্ডিত সেই প্রিয় মুখ ।
হঠাৎ বিদ্যুত্ চলে গেল, কীর্তনের ঢাক তোমার উলুধ্বনি মাঝে খুঁজে ফিরি
হারানো অতীত
চায়ের চুম্বনের মাঝে অনেকেই খুঁজে চারটি চোখের রহস্য ।
লজ্জায় ভয়ংকর নিস্তব্ধতা নেমে আসে আমার মাঝে
কীর্তনের আসর থেকে উঠে
চা পান করা ঠোঁটে আশ্রয় নেয় ধোঁয়ায় কুণ্ডলি
তোমার তন্দ্রাচ্ছন্ন চোখ দুটিতে
মুহুর্তেই নেমে এলো ক্রোধের বৃষ্টিধারা
আমি ভয়ে ভয়ে হাত থেকে
ফেলে দিলাম সদ্য আগুন দেওয়া সিগারেট ।
এরি মাঝে বীর হনুর বীরত্ব, সীতা উদ্ধারের সাথে পালা হলো শেষ ।
ঢাক আর বাদ্যযন্ত্রের তালে ব্রাহ্মণ নিলো বিদায়
এমন দুঃসাধ্য হয়নি আমার,
তোমার সাথে বলবো কথা
ক্লান্তি আর বিষাদের রাত্রির শেষ সম্বল হলো
এককাপ ধোঁয়া তোলা চা ও ব্রহ্মাণ্ড কাঁপানো উলুধ্বনি ।