রবিবার, ২৬ জানুয়ারী, ২০২০

মুক্তিযোদ্ধার মেয়ে তারানার গল্প -শরীফ সাথী


মুক্তিযোদ্ধার মেয়ে তারানার গল্প


শরীফ সাথী



অল্প করে গল্প বলার অভ্যাস ছিল তারানার,

থেমে থেমে বলতে পারতো টাকার ভিতর বারানার।
দিন গোনা মাস নেই মনে তার জন্ম ষাটের কবে?
বয়স খুবই কম ছিল তার সাত না আটের হবে।
মায়ের হাতের রান্না খেয়ে বাবার বুকে ঘুম দিতো,
বাবার কত হাসি মুখের আদর সোহাগ চুম নিতো।
বলতো বাবা, আমরা আছি পরাধীন এক দেশ নিয়ে,
শোষণ দূষণ শাসন ভরা কষ্ট ব্যথা ক্লেশ নিয়ে।
স্বাধীন সোনার বাংলা গড়ব স্বপ্ন চোখে উঁকি দেয়,
একাত্তরে শেখ মুজিবের ডাকে বাবা ঝুঁকি নেয়।
আকাশ বাতাস ভারী তখন বড্ড ভয়াল রাত ছিল,
চারিদিকে নির্মমতার দংশনী সংঘাত ছিল।
সবার চোখে সাগরের জল কখন জানি ছেঁয়ে গেছে,
বুকের মাঝে রক্ত নদীর উতলা ঢেউ বেয়ে গেছে।
বিকট শব্দের মাঝে হঠাৎ কান্নাকাটির আওয়াজে,
আহাজারি আকুতি আর কত কিছু পাওয়া যে।
করুণ কণ্ঠে বোনের ডাকা আর্তনাদের দুখ দেখেছি,
ছেলে হারা কত মায়ের শোকবিহ্বল মুখ দেখেছি।
মেঠো পথে সবুজ মাঠে রক্তে ভেজার ছাপ দেখেছি,
বিবর্ণমুখ পাগলীনির খোকারে সংলাপ দেখেছি।
সুদীর্ঘ পথ ন' মাসের এক ইতিহাসের নতুন রবি,
উদিত হয় বাংলাদেশে চিত্রিত হয় বঙ্গ ছবি।
বাংলা জুড়ে বিজয় এলো লাল সবুজের বৃষ্টি হল,
সার্বভৌমের স্বাধীনতা অবশেষে সৃষ্টি হল।
যুদ্ধে যাওয়া বাবার কথা মনে পড়ে খুব আমার,
নিরব হয়ে আজও আমি খুঁজে দেখি ডুব আঁধার।
যুদ্ধে যাওয়ার আগে যেমন দেখেছিল দৃষ্টি ভরে,
যুদ্ধ শেষে আর ফেরেনি ডাকেনি আর মিষ্টি করে।

শরীফ সাথী
গীতিকার বাংলাদেশ বেতার
Share: