শনিবার, ১৫ এপ্রিল, ২০১৭

নারী পুরুষ মিলেইতো নারীর মুক্তি নাকি?


পুরুষ যুগ যুগ ধরে যা গ্রহণ করে এসেছে নারী তাই দিয়ে আসছে.......
নারী পুরুষ মিলেইতো নারীর মুক্তি, নাকি? নারী একা অথবা পুরুষ একা চিৎকার করে কিছুইকি হবে? কোন নারী ফেইসবুকে একটা হট পিকচার আপলোড করলেই অমনি পুরুষের প্রশংসায় সেই পোস্ট এবং সেই নারীর ইনবক্স ভর্তি হয়ে যায়। তাহলে বেচারি নারী আর করবে কি? মগজটাকে পকেটে ঢুকিয়ে চেহারাটাকে শো অফ করে। এর কারনটা অত্যন্ত সিম্পল। নারী পুরুষের জন্মই হয়েছে একে অন্যকে চাইতে। পুরুষ নারীকে চাইবে, আর নারী পুরুষকে তাঁকে চাওয়াবে। পুরুষ যুগ যুগ ধরে যা গ্...রহণ করে এসেছে, তাই নারী দিয়ে এসেছে পুরুষকে। প্রেম, প্রীতি, ভালোবাসা, সন্তান, সংসার সবই। তাইলে নারী পুরুষ মিলে আজ নতুন করে কার মুক্তির কথা, কিসের মুক্তির কথা বলে বুঝিনা!! কিসের এতো আন্দোলন?
অনাদিকাল ধরেই পুরুষের একটা অবস্হান তৈরী এসেছে, সাথে নারীর ও। পুরুষ নারীকে ভালোবাসবে, নারীরা ভালোবাসাবে। পুরুষ চাইবে, নারী চাওয়াবে। পুরুষ নেবে, নারী দেবে। এখন কথা হোলো শুরু থেকেই গিভ এন্ড টেক কিন্তু এক রকমই চলছিলো। এবার পুরুষ নারীকে শর্ত দিয়ে বসলো, 'তুমি যদি তোমাকে সব পুরুষকে দাও তাহলে আমি তোমাকে চাইনা!' নারীতো মহা টেনশনের পড়ে গেল!! কারণ সেওতো একইভাবে শুধু সেই এক পুরুষকে একান্তই নিজের করে চায়। নারীকে চাওয়া যেমন পুরুষের রক্তের ভিতর, পুরুষকে তাঁকে চাওয়ানোও তেমনই নারীর রক্তের ভিতর।
এভাবে নারী পুরুষ একে অন্যকে চাইতে চাইতে, প্রেম, ভালোবাসা, জীবন, বেঁচে থাকার এইসব খেলা খেলতে খেলতে দুজনে আজ এই অবস্থানে এসে পৌঁছেছে। আজকের নারী পুরুষ হঠাৎ করে, নিজের শিক্ষা-দিক্ষা, বিবেক-বুদ্ধি, আদর্শ, নৈতিকতা, অভিজ্ঞতা ইত্যাদি মানবিক গুণাবলীর সাহায্যে নতুন করে নিজেকে একটা অবস্থানে বসাতে চাইছে এটা ঠিক, চাওয়া উচিত ও বটে। তবে ব্যাপারটা হলো কি এই নতুন অবস্হানটা নারী পুরুষ কারোরই মগজের ঠিক জায়গামতো বসছে না। অন্তত নারীর না। তাই আজকালের নারী মগজের ধোলাই বাদ দিয়ে, চেহারাটাকে বাজারে খাওয়ানোর চেষ্টা করাটাকেই বেশী লাভজনক মনে করছে। কিন্তু ভুলে গেলে চলবেনা নারীকে আজকের এই অবস্থানে পুরুষের আকাঙ্ক্ষাই বসিয়েছে। বুঝা কঠিন নয় যে দুর্গতি দুজনেরই হয়েছে। এর সমাধান ও তাই দুজনকে মিলেই করতে হবে।

 আমরা মানুষেরা জীবনের যেদিকটায় মনোযোগ দিবো আমাদের জীবনের সেইদিকই বেশী বিকশিত হবে। একজন মানুষের জলন্ত বিশ্বাসে, মনোযোগের ফলে মরুভূমি শহর হয়ে যায়। তাহলে নিজের এই মনোযোগকে কি নারী কেবল বাহ্যিক আর শারীরিক সৌন্দর্য বর্ধনে কাজে লাগাবে কিনা এই সিদ্ধান্ত নারী একা নিতে পারবেনা, এখানে পুরুষের ও ভূমিকা আছে। ওই যে বললাম, "পুরুষ যুগ যুগ ধরে যা গ্রহণ করে এসেছে তাই নারী দিয়ে এসেছে পুরুষকে।" পুরুষালী কামনা বাসনা অস্বাভাবিক কিছু নয়। তবু শুধু শরীরের সৌন্দর্য বর্ধন করে পুরুষকে তুষ্ট রাখতে পৃথিবীতে কোন নারীর জন্ম হয়নি। সুতরাং, কেবল পুরুষের কামনা বাসনা পুরণের স্থুলতা থেকে নারীকে পুরুষ মুক্তি দিক, নিজেও মুক্তি পাক। কারণ আজকের এই প্রযুক্তির যুগে যখন হাত বাড়ালেই বাহ্যিক সৌন্দর্য হাতের মুঠোয় ধরা পড়ছে, তখন এই স্থুল বাহ্যিক সৌন্দর্য আর নারী পুরুষ কারো পক্ষেই যথেষ্ট নয়। সো ইটস টাইম টু ওয়েইক আপ।

লেখক : -ফেরদৌসি বিকন,ডাবলিন ট্রিনিটি কলেজের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী।
Share: