শিল্পসাহিত্য
#দুইতলার_মেয়েটি #ছোটগল্প #প্রথম #পর্ব
#ফখরুল_হাসান
আব্বু আম্মু যাবে কক্সবাজার ঘুরতে। তাই আব্বু আম্মুর প্রয়োজনীয় জিনিস গুলো তাদের সাথে গুছিয়ে দিচ্ছি । প্রতি বছর এই সময়টা তাঁরা ঘুরে ঘুরে আমাদের এই সুন্দর দেশটা দেখেন। প্রকৃতির অপূর্ব সুন্দরের লীলাভূমি আমাদের এই দেশ। প্রতি বছর আমিও যাই আব্বু আম্মুর সাথে কিন্তু, এবার
আমার যাওয়া হবেনা, সামনে ভার্সিটির সেমিস্টার ফাইনাল। ঘুরতে যেতে আমার খুব ভালো লাগে, তাই একটু মন খারাপ লাগছিলো। মনে হচ্ছিলো এই পড়াশুনার জন্য আর কত স্যাক্রীফাইস করতে হবে কে জানে? কিন্তু ছাড়তেও তো পারিনা ভবিষ্যতের কথা ভেবে। ঢাকার এই ফ্ল্যাটটা বাবা কিনেছিলেন।
যিনি বাড়িটা তৈরি করেছিলেন, তিনি অবসর প্রাপ্ত সরকারী অফিসার। তিনি নিজে থাকবেন বলে , বাড়ির সামনে প্রচুর জায়গা রেখেছেন। মাঝে উঠোন
চারদিক দিয়ে উচু বিল্ডিং দিয়ে প্রাচীর দেয়া । সহজে কেউ বাড়ির ভেতরে ঢুকে যেতে পারবে না। নানান রকমের গাছপালার সমাহার দেখেই বোঝা যাচ্ছে তিনি রুচিশীল মানুষ। তিন তলা বিল্ডিং তৈরি করে পরে টাকার অভাবে বিক্রি করে দেন কিছু পজিশন।
আব্বু আম্মু যেদিন প্রথম আসে বাড়ি কিনতে বাড়ির সামনে বিরাট অংশ দেখেই পছন্দ করে ফেলেন। বাড়ির ভিতরে ঢুকে তো অবাক ! ঢাকা মহানগরীর মাঝে সবুজে ঘেরা এমন বাড়ি আছে ভাবনার বাহিরে। সেই থেকে এই বাড়িতেই আমাদের বসবাস। ভদ্রলোক নিজে থাকার জন্য দুইতলা আর বাকি ফ্লোর গুলো বিক্রি করে দেন। এই বিল্ডিংয়ে নিজে থাকতেন দুইতলা। দুইটি মাত্র ছেলেমেয়ে। ছেলের বিয়ে দিয়েছেন। মেয়ের জন্য পছন্দসই পাত্র খুঁজে হয়রান। আর আমরা থাকি তিনতলা। এ ছাড়াও আর একটা ফ্যামিলি থাকে চারতলাতে। আব্বু আম্মুর যাবার সময় এসে গেলো। আমি ওনাদের বিমানবন্দর দিয়ে এলাম। বাড়ি ওয়ালার ফ্যামিলীর সাথে আমাদের খুব ভালো সম্পর্ক। ওনার ওয়াইফ আমাকে তার নিজের ভাইয়ের মতো ভালোবাসেন। উনার কোন ভাই বোন নেই। ওনার ওয়াইফ আর ছোট বোন। আমার এই কদিনের খাওয়া দাওয়ার ব্যাবস্থা করে, বাড়ি ওয়ালার বাসাতেই। আমি ফিরে এসে খেতে বসবো এমন সময় কলিং বেল বেজে উঠলো। গিয়ে খুলে দেখি বাড়ি ওয়ালার বোন দাঁড়িয়ে। হাতে একটা প্লেট ঢাকা। বলল ভাবি তোর জন্য পাঠিয়ে দিয়েছে, খেয়ে নিস। ঢাকনা সরিয়ে দেখি ভাত, সবজি, ডাল আর মুরগির ঝাল ফ্র্যাই। বাড়ি ওয়ালার বোনের নাম মুনা । মুনার এজ ৩০+ । সি.এ পাস করে এখন একটা মালটিন্যাশনাল কোম্পানিতে রিজিওনাল একাউন্ট ম্যানেজার হিসাবে কাজ করছে। দেখতে বেশ দারুন। হাইট প্রায় সাড়ে ৫ ফিট। ফর্সা বাট হাল্কা মোটা হয়েছে তাই একটু তুলতুলেও লাগে। ফিগার ৩৫-৩২-৩৮। রেগুলার পার্লারে যায় তাই চেহারায় একটা অন্যরকম টোন আছে। এলাকায় ছেলেরা শুধু না অনেক বিবাহিত লোকও ওর জন্য পাগল। আমি প্রথমে মুনাকে আনটি বলে ডাকতাম। কিন্তু উনি আমাকে আপু বলে ডাকতে বলেন। আমি মুনা আপুকে থ্যাংকস জানিয়ে দরজা বন্ধ করবো ভাবছি, তখন দেখি মুনা আপু হাসি হাসি মুখে আমার দিকে তাকিয়ে একটু ঘরের দিকে উকি মারার চেষ্টা করছে। আমি ব্যাপারটা বোঝার জন্য ওর মুখের দিকে কৌতুহল ভরে তাকালাম।
#দুইতলার_মেয়েটি #ছোট_গল্প_দ্বিতীয়_পর্ব
#ফখরুল_হাসান
মুনা আপু পরের দিন সকালে আমায় ডেকে বললেন, আপু তাঁর বান্ধবীর সাথে সন্ধ্যায় মুভি দেখতে যাবে। যমুনা ফিউচার পার্কে। আমি যেন বিকালে ইস্টার্ণ প্লাজা মার্কেট থেকে তার মোবাইলটা সাড়িয়ে আনি। দুদিন আগে বান্ধবীর বিয়েতে গিয়ে নাচানাচি করে মোবাইলের স্ক্রিনটা ভেঙে যায়। মুনা আপু বাসা থেকে বের হবার সময়, আমাকে বলে গেলো মোবাইলটা ওয়ারড্রোবে রেখেছে ,আমি যাবার সময় যেনো নিয়ে যাই। কিছুক্ষণ পর আপুর রুমে গিয়ে আমি তো অবাক হয়ে গেলাম! আমার মনে হলো , মুনা আপু গায়ে গতরে বড় হয়েছে ঠিকই কিন্তু বুদ্ধিশুদ্ধি এখনো হয়নি। কোনোকিচ্ছু সামলে রাখতে জানে না। নিজের কাপড়চোপড়, জুতো, অফিসের ব্যাগ, পারফিউম সব ঘরের ভিতর ছড়িয়ে ছিটিয়ে একদম একাকার। বাসার যেখানে সেখানে ব্রা-প্যান্টি ফেলে রেখেছে। খাটের উপরে ফেলে রেখেছে ডি প্লাস ব্রা-প্যান্টি। ওয়ারড্রোব খুলে দেখি ডি প্লাস ব্রার উপরে মোবাইল। মুনা আপুর সাপের মতো শরীরে এত বড় বড় স্তন গুলো বড্ড বেসামাল থাকে সবসময়। একটু নড়াচড়া করলেই ভয়ংকর ভাবে দোলা খেতে শুরু করে। লম্বাও মেয়েটা কম নয়। পাঁচ ফুট চার ইঞ্চি। পাতলা কোমর, উঁচু পাছা দেখলে যে কোনো ছেলে কাত হয়ে যাবে। বুঝতে পারছি যে আমাকে দেখাতেই রুমে সবকিছু ইচ্ছা করে এলোমেলো করে রেখেছে। রুমে সময় নষ্ট না করে দ্রুত চলে গেলাম মোবাইলটা নিয়ে ইস্টার্ণ প্লাজায়।
দোকানের ছেলেটা ফোনটা চার্জ দিতে বলেছিলো বলে চার্জারে কানেকশন দিলাম আমার রুমেই। সাথে সাথে মোবাইলটা অন হয়ে গেলে। আই ফোন সেভেনে এই এক জ্বালা, চার্জার লাগালেই সেট অন। মোবাইলটা অন হয়ে গেলো সাথে সাথে। যথারীতি লক করা। কেন যেন হঠাৎ করে আপুর ফোনটা ঘাটতে ইচ্ছে হলো আমার। আগ্রহটা তৈরি হয়েছে মুনা আপুর কারণেই। কার সাথে কথা বলে, কার সাথে চলাফেরা করে বা কার সাথে সেলফি তোলে এগুলো চেক করে দেখার আমার কোনো আগ্রহ নেই। আমার আগ্রহ মুনা আপুর মোবাইলের ফটো গ্যালারি । কিন্তু পাসওয়ার্ড কোথায় পাই! আমি জানি আপুর পাসওয়ার্ড টা পাঁচ সংখ্যার। কিন্তু পাসওয়ার্ডটা কী? ভাবতে ভাবতে একটা আন্দাজে মনে পড়লো আমার বা মুনা আপুর নাম্বার এর প্রথম সংখ্যাগুলো দিয়ে দেখি। সেটা দিতেই মোবাইলের লক খুলে গেল। মোবাইলের সব কিছুই ঠিক ঠাক। কিন্তু সেলফি গুলোর দিকে চোখ পড়তেই মাথাটা আমার গরম হয়ে গেল। মুনা আপু সেলফি তুলেছে অন্তত কয়েকশ। প্রতিটাতেই খুব যত্ন করে মেকআপ করা। কিন্তু তাদের সব কয়টাতেই তার শরীরে বাঁকগুলো বাড়াবাড়ি রকমের চোখে পড়ছে। গায়ের জামা কাপড় ও অসংলগ্ন। একটা সেলফিতে তো প্রায় দুটো বুকই ডীপ নেক নাইট টিশার্টের ফাক দিয়ে বের হয়ে এসেছে। সেটাতে আবার ঠোঁট পাউট করে মুনা আপু সেলফি তুলেছে, যেন কোন প্রেমিককে দিচ্ছে। চিকন স্লিভের টিশার্ট পড়া একটা পিকে নিজের কোমড়ের ওপর টিশার্ট তুলে নিজের নাভী আর টাইটস পড়ার জঙ্ঘার ছবি তুলেছে মুনা আপু। একটা না ,এমন ছবি পেলাম অন্তত দশটা। একেকটা একেক কালারের টাইটস পড়া । আমার মনে হলো মুনা আপু যেন আগুনের গোলা । এমন আগুন ঘরে রাখলে, ঘর পুড়তে বাধ্য।
#দুইতলার_মেয়েটি #ছোট_গল্প_তৃতীয়_পর্ব
#ফখরুল_হাসান
'বেশ ভালোইতো আছিস !'
'কেন আপু?'
'খুব এনজয় করবি এই কদিন, তাইনা?'
'কেন, এতে এনজয় করার কি আছে?'
'কেন আবার, এ কয়দিন একা থাকবি, ড্রিংক করবি, বান্ধবীদের নিয়ে আড্ডা মারবি, রাতে মজা করবি সেটা এনজয়মেনট না?'
'ও তাই বলো !'
'তাছাড়া কাল শুক্রবার তাই আজতো পার্টি নাইট তাইনা?'
'না না তেমন কিছু না !'
এই এখন খেয়ে দেয়ে একটু টিভি দেখে তারপর ঘুম দেব। তারপর কাল উঠে নাস্তা করে একটু আড্ডা মারব। বিকেলের কোন প্ল্যান নেই। কথা গুলো শুনে কিছুক্ষণ কি যেন ভাবলো মুনা আপু , তার পর বললো।
'বাহ, তবে তুই তো ভালো ছেলে।'
'ভালো কি না জানি না। তবে তুমি যা বলছো সেগুলো আমার পছন্দ না।'
'তাহলে তো তুই সত্যি ভালো ছেলে।'
জানিস, আমরা যখন এই রকম সুযোগ পেতাম তখন সব মেয়েরা একসাথে হয়ে যা যা করতাম তা তুই আন্দাজও করতে পারবি না।
'তুই ভালো ছেলে, যা খেয়ে দেয়ে শুয়ে পড়।'
কাল দেখা হবে। এই বলে মুনা আপু উপরে চলে গেলো। আমি খেতে খেতে আমাদের কথাবার্তা গুলো ভাবতে লাগলাম মুনা আপু কথা গুলো যা যা করতাম তা তোরা আন্দাজও করতে পারবি না।
যাই হোক, খাওয়া শেষ করে লাইট অফ করে শুয়ে টিভি দেখছি একবার ভাবলাম মুনা আপুর মোবাইল-এ কল দিই, তারপর আবার ভাবলাম কি জানি কি ভাববে, তাই আর কল দিলাম না। একটু পর একটা এসএমএস করলাম গুড নাইট বলে। মুনা আপুকে। তারপর শুয়ে পড়লাম। কিন্তু ঘুম আসছিল না। এইভাবে প্রায় ৩০ মিনিট কেটে গেছে, হঠাৎ মোবাইলটা বেজে উঠলো। দেখি মুনা আপু ফোন করেছে। রিসিভ করতেই মুনা আপু বলল,
'কিরে, কি করিস?'
'না তেমন কিছু না!'
'ঘুম আসছে না নাকি?'
ফোনের ওপাশ থেকে মুনা আপুর গলাটা কেমন যেন অন্য রকম লাগলো। আমিও বললাম,
'না আপু, ঘুম আসছেনা।'
তারপর একটু ফাজলামো করে বললাম।
'তাইতো তোমার কথা চিন্তা করছি।'
ওপার থেকে কোন জবাব এলো না। তাতে আমি একটু ভয় পেয়ে জিজ্ঞেস করলাম,
'রেগে গেলে নাকি, মজা করলাম বলে?'
'না রে রাগ করিনি। বাট…!'
'বাট কি?'
'আসলে আমারও ঘুম আসছিলো না!'
তাই ভাবলাম তোর সাথে ফোন-এ একটু গল্প করি।
'এটা তো বেশ ভালো।'
'তাই না?'
'হ্যাঁ।'
দু'তলা আর তিনতলা ফোন-এ গল্প করছে। একটা কাজ করি চলো, তুমি নিচের বারান্দাতে দাড়াও, আর আমি উপরের বারান্দাটাই দাড়াই তারপর গল্প করি, শুধু শুধু মোবাইল কোম্পানি-কে টাকা দিয়ে কি হবে?
মুনা আপু হাসল, কিন্তু কোন রেসপণ্ড করলো না।
তারপর আপু হঠাৎ করে বলল
'এই শুভ্র, ছাদে যাবি?'
'এখন?'
'হ্যাঁ, এখন।'
'তোমার ভাইয়া, ভাবী যদি কিছু বলে?'
'ওরা টের পাবে না।'
'কেন?'
'ঘুমিয়ে পড়েছে, তুই ছাদে চলে যা আমি একটু পরে আসছি।'
এই বলে ফোনটা কেটে দিলো মুনা আপু।
#দুইতলার_মেয়েটি_ছোট_গল্প_চতুর্থ_পর্ব
#ফখরুল_হাসান
লজ্জায় আমার সারা শরীর কাঁপতে থাকে। ঘামতে শুরু করে। সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে পারলাম না। দ্রুত নিচে নেমে আসলাম। রুমে গিয়ে পানি পানের জন্য গ্লাস নিলাম তিন চার বা পাঁচ গ্লাস পানি গিলে ফেললাম । মনের ভিতরে তার একটা খটকা লেগেই থাকে। মুনা আপুর মুখ কেন লাল হয়ে উঠছে, আর তার সারা শরীর ঘামে বৃষ্টিতে ভেজার মতো হয়ে ওঠেছে কেন? এক চরম সত্যের মুখোমুখি পড়ে গেলাম । আমার আগের বিশ্বাস সব ধ্বসে পড়তে থাকে ! বিজ্ঞানের ভাষায় সম্পর্ক যদি মানসিক এর চেয়ে শারিরীক হয় তবেই নাকি ভালবাসা বেশী হয়। কে না নীরবে বসে বসে কামচিন্তা করতে পছন্দ করে? আমার মনে হয় যারা অস্বীকার করে তারা মিথ্যে বলে। রুমে এসে বেশ কিছুক্ষন চুপচাপ শুয়ে শুয়ে ভাবতে থাকলাম কিছুক্ষন আগের অনুভূতিগুলো। নারীর লজ্জা হচ্ছে লজ্জাবতী গাছের মতো। হাত লাগলেই শেষ। সেটা স্বামীর হাত হোক বা অন্য কোনো পুরুষের। এই হাত লাগা মানে শুধু শারীরিক স্পর্শ না,পুরুষের সঙ্গতায়ও নারীর লজ্জা কেটে যায়। যেমন রাতে ছাদে চক্ষু লজ্জা উঠে গেছে মুনা আপুর। কনজারভেটিভ ফ্যামিলির মেয়েকে ওড়না ছাড়া দাঁড়াতে বললে সে লজ্জায় মরে যাবে। অথচ মুনা আপু ! ভাবতে ভাবতে কখন ঘুমিয়ে পড়লাম জানিনা, ঘুম ভাঙলো কলিং বেলের শব্দে। দরজা খুলে দেখি মুনা আপু দাঁড়িয়ে আছে চায়ের কাপ হাতে। কোন কিছু না বলেই হঠাৎ কপালে একটা চুমুর সাথে গুডমর্নিং উইশ করে আমাকে দুপুরে ওদের ওখানে খেতে যেতে বললো।