বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০১৯

তুমি বিজয় ৭১' -এঞ্জেল নিপা


 ত্রিশ লক্ষ শহীদের মায়ের
প্রসব যন্ত্রণার মৃত্যু ঘটিয়ে পেয়েছি বাংলাদেশ,
অক্ষরের শাণিত বর্ণমালা মাটি খুঁড়ে ভাস্কর্য
 গড়তে চেয়েছিলাম, নিয়মের দোলাচলে
হঠাৎ সমাধি হল শেষ ।
যৌবনের তেজোদীপ্ত সাহসিকা জ্বালিয়ে
যে সোনালি  দেশ গড়তে চেয়েছিলাম,
ভিনদেশী  পিশাচের থাবায়
বাঁচতে চাওয়া মানুষের লাশের স্রোতে মৃত্যুপুরীতে রূপান্তরিত হতে শুনেছিলাম।
 জিজ্ঞাসা তাড়া করে ফেরে অনন্ত
গহ্বরে বারবার,
কী হারালাম কী  পেলাম দেশ জনতার
শান্তির লাগি, কেন চিরস্থায়ীভাবে
ফিরে পেলাম সর্বময় স্বাধীন নামটা?
এখনও  সন্তর্পণে ব্যাকরণে মনের গহীনে
 হারানো অমোঘ টানেরবন্ধন কেঁদে কেঁদে ঘরে ফেরে।
তবু শব্দবাজি আলোর দ্রুততার লক্ষ্যে,
সে অম্লান স্বাধীনতায়
শকুন্তলার পোকাদের ধ্বংসাত্মক গতিবিধি নস্যাৎ করার আসরে
ফসলের মাঠে দৃশ্যত নবান্ন কই ?
 শ্রদ্ধায় ভেসে যাবে ধরিত্রীর সকল মাখলুকাত
দেখে এ দেশময় দেশাত্মবোধ, যদি এমন হতো,
বুঝতাম দেশ আমার কোথায় মিশে আছে।
ঝঞ্ঝাট মুক্ত শঙ্কা ভুলে
তবুও বাঁচার স্বাদ এসে যায়,
তরতাজা শরীর থেকে জান বেরিয়ে যেতে
কত প্রিয় স্বজনদের বিচ্ছেদ দেখতে হয়েছে।
আহা!
আরও  কত যন্ত্রণাময় একেকটি  নয়মাস দেখতে
হবে ,এভাবে কতকাল আমরা সইবো দহন।
এবার সবাই মিলে বিজয়ের মাসে এসো
ত্রিশ লক্ষ রত্নগর্ভার জরায়ুর মর্মপীড়ায়
আর্তনাদের মূল্য দিতে, আসবেন কিন্তু
বাংলাদেশ বাংলাদেশ প্রতিধ্বনি তুলে
বাংলা মায়ের সঙ্গ নিতে।

মঙ্গলবার, ২৬ মার্চ, ২০১৯

কবিতা রক্তাক্ষরে স্বাধীনতা কবি আয়েশা মুন্নি

বাঙালির গৌরবময় ইতিহাসে
২৫ শে মার্চের ভয়াল কাল রাত্রি
তার একখণ্ড ইতিহাস...
স্বাধীনতা শব্দটির পূর্ণাঙ্গ মহাকাব্য। 
সেদিনের নিরস্ত্র আপামর বাঙালির কান্না
আজও থামেনি,
আজও কান পেতে শুনি সেই মর্ম বিলাপ।
চোখ খুললেই আজও দেখি ম্যাগনেসিয়াম ফ্ল্যাশের আলোতে সেই ঝাঁঝরা দেহগুলো
আবাল- বৃদ্ধ - যুবক - বনিতার!
সেদিনের সেই মহাকাব্যে, মহাত্যাগে
স্বীয় আত্মার বলী দিয়ে
রক্তগঙ্গায় সাঁতরিয়ে
বাঙালিরা যে ইতিহাস রচনা করেছিল
সেই ইতিহাসের সোপানে আমাদের চির মুক্তি
আমাদের স্বাধীনতা - প্রিয় বাংলাদেশ।
তাই আজ...
বুকের জমিনে রক্তাক্ষরে পতাকা এঁকে
পালন করছি - মহান স্বাধীনতা দিবস।

শুক্রবার, ২২ মার্চ, ২০১৯

অনুগল্পঃ-অচীন-লাশ গল্পকার মাসুদ চয়ন


শীত শীত আবহ।কুয়াশার বুক কেটে এগিয়ে যাচ্ছে পথিক।
পথিমধ্যে একটা পঁচা গলিত লাশ দেখে থমকে দাঁড়ালো।
উইপোকারা ডিবি সাজিয়েছে লাশের বুকে।অসহ্য গন্ধ!তবুও পথিক সঠান দাঁড়িয়ে থাকে।পরিচিত কারো লাশ মনে হয় তার কাছে।মানুষ তো জন্মান্তরবাদ পরিচিত।ওটা মানুষের লাশ।মেয়ে মানুষ। গঠনে পাহাড়ের মতো খাঁজ।আঁকাবাকা নদীময় ভাঁজ।নাক খুলে গন্ধ শুঁকে যায়।কাছে গিয়ে উইপোকার ডিবি নাড়িয়ে-চাড়িয়ে দেখে।
উইপোকারা সারি বেঁধে পালাতে থাকে।বেশিদিনের পুরনো লাশ নয়।দিন পনেরো কি বিশ হবে বুঝি।মুখ থ্যাঁতলানো।চোখ তুলে ফেলা হয়েছে।নাক কেটেছে গভীর ক্ষত করে।মুখ দেখে চেনা দায়।অথচ এ পাড়ার কেউ হতেও পারে।নারীর লাশ
আহা কষ্ট! কার ঘরনী ছিলো?।চুলের উপরিভাগ টেনে তুলে ফেলা হয়েছে চামড়া শুদ্ধ।গলিত মগজে জমাটরক্তে সাদা কালো ডোড়া পোকার কিলবিল নৃত্য দৃশ্যত।বিবস্ত্র শরীর কে যেনো পুরনো চাদরে আবৃত করে দিয়েছে।ডানহাতে শক্ত মুট করে রাখা একটি চিরকুট।
খুলে দেখে পথিক।রক্তাক্ষরের লেখা'আমি যুদ্ধ শিশুর জন্ম দিয়েছি,কোনো মানবিক হৃদয় এই জনহীন পথ বেয়ে গমনকালে তাকে কোলে তুলে নিয়ো।ও নিস্পাপ,আমি শত্রু বন্দী হলেও।পাশের জারুল ঝোঁপে ওকে তুলে রেখেছি।আমাকে পাশবিকভাবে রেপ করে চলেছে। টানা দু'সপ্তাহ ১৩ জন যোদ্ধা।এরপর কি হবে জানিনা।তবে মৃত্যু অতি সন্নিকট।পথিক অশ্রুছল চোখ নিয়ে নবজাতককে খুঁজে পায়।দেহ নেই নিথর অবুঝ কংকাল।পথিক শুন্য আকাশ পানে মাথা তুলে চিৎকার করে কেঁদে যায়।
"আমি যুদ্ধে যাবো,যুদ্ধ শিশু সম্ভ্রম হারা জননী বোনকে বাঁচাবো।আমি বীর হতে চাইনা রক্ষক হবো যুদ্ধ ময়দানে পথে ঘাটে।একটা মানবিক রাইফেল দাও দূর আকাশ।

সোমবার, ১৮ মার্চ, ২০১৯

কবিতা-হৃদি ব্যঞ্জনা কবি-আয়েশা মুন্নি

ভালবাসার তৃষ্ণায় আমি অমরত্ব চেয়েছি ---
পাহাড়,হিমালয়,নদী,সাগর,আকাশ
আর সূর্য্যের রাজসভায়।
তুমি প্রশস্ত বুক পেতে দাঁড়িয়ে আছো
প্রতিহত করার ভূমিকায়।
মেঘ প্রাচীরের ঢাকে মৈথুনরোদ
তীব্র সূর্য্যরে উজ্জ্বলতায় যখন
আলোর উৎস খোঁজে !
বেদনার ক্ষীণশ্বাসে তখন
অন্তর পোড়া কালো ধোঁয়ায়
দু’চোখের পাতা ফুলে ভারি হয়,
ময়ূরের পেখমের মত।
হৃদয়ের অপ্রকাশিত ব্যাকুলতার
হৃদ্দিক ব্যঞ্জনায়
আমার আবাদি সংসার।
তবুও তোমার চোখের গহীনে
অস্থির অপ্রতিরোধ্য আমার চোখ জোড়া
খুঁজে ফিরে প্রতিনিয়ত
অজানা মহাদেশ, অজানা কোনো উপকূল।
বুকের ভেতর অনুভূতির নিহত আবেগ
হৃদয়ের মর্মায়িত তৃষ্ণার্ত বেদনারা
হৃদাকাঙ্খার কাছে হার মেনে ফিরেছে
পবিত্রতার বাঁশির লহরে।
আমার ভালবাসার বহতা
কাঙালিনী নদী, তোমার হৃদয়ে
অনন্ত থেকে অনন্তময়তা খুঁজতে খুঁজতে ক্লান্ত।
তবুও ---
আমি ঠিকই স্বপ্নের ঐ আকাশ কিনেছি,
আর তোমার চাঁদে অনন্তগ্রহণ।

বুধবার, ১৩ মার্চ, ২০১৯

পলাশে দেশ বন্ধু পলিমার ফ্যাক্টরিতে চুরি

জুয়েল পলাশ প্রতিনিধিঃ
নরসিংদীর পলাশ উপজেলার চরসিন্দুর ইউনিয়নে অবস্থিত দেশ বন্ধু গ্রুপের পলিমার ফ্যাক্টরিতে চুরির ঘটনায় রাকিব ভূইয়া (২৫) নামে এক জনকে আটক করেছে পুলিশ। পরে রাকিবের দেওয়া তথ্যমতে বিপুল পরিমাণ তামার তার ও রঙের ড্রাম উদ্ধার করা হয়। আটককৃত রাকিব ভূইয়া গাজীপুরের কালীগঞ্জ উপজেলার একুতা গ্রামের কালাম ভূইয়ার ছেলে। সে চরসিন্দুর ইউনিয়নের সুলতানপুর গ্রামের সাখাওয়াত হোসেনের বাড়িতে ভাড়া বাসায় বসবাস করত। থানা পুলিশ জানায়, সম্প্রতি দেশ বন্ধু গ্রুপের পলিমার ফ্যাক্টরিতে চুরির ঘটনা ঘটে। এতে ফ্যাক্টরিতে থাকা তামার তার,রঙের ড্রাম ও বিভিন্ন মালামালসহ প্রায় সাত লাখ টাকার মালামাল চুরি করে নিয়ে যায়।

পুলিশ আরও জানান, ফ্যাক্টরিতে চুরি হওয়ার ঘটনায় দেশ বন্ধু গ্রুপের পক্ষ থেকে থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করার পর থানার এসআই মীর সোহেল রানা সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে মঙ্গলবার রাতে সন্দেহভাজন হিসেবে রাকিব ভূইয়াকে আটক করে। পরে রাকিবের দেওয়া তথ্যমতে অভিযান চালিয়ে সুলতানপুর গ্রাম থেকে প্রায় ২ লাখ টাকা মূল্যের তামার তার ও ৫০ হাজার টাকা মূল্যের তিন ড্রাম রঙ উদ্ধার করে।  এবিষয়ে পলাশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মকবুল হোসেনে মোল্লা জানান, আটককৃত রাকিব ভূইয়ার বিরুদ্ধে থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়। তাকে সাত দিনের পুলিশ রিমান্ড চেয়ে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।

মঙ্গলবার, ১২ মার্চ, ২০১৯

কবিতা - অপরিত্যাজ্য আত্মা কবি- আয়েশা মুন্নি

ভীষণ মন খারাপের বেলাভূমিতে
ঘৃণার নিকষ কালো মেঘে ছাওয়া
আঁধারে ঢাকা স্বপ্নিল প্রান্তর।
আবেগের ভয়াবহ মত্ততায়
অসমাপ্ত স্বপ্নেরা নিহত।
অনুর্বর মগজের
সন্ন্যাসী ভালবাসা
অন্ধকারের ফুল হয়ে ফোটে।
ধূসর নিঃস্তব্দতায়
নীরবে, নিভৃতে, সংঙ্গোপনে স্পর্শের অনুভবে
অপরিত্যাজ্য দু'টি আত্মা।
অংকুরিত ক্ষোভে
কষ্টের কালো রঙ,
কবিতার আশ্রয়ে
ক্লান্তিতে হেলান দিয়ে
বিবেকের কাঠগড়ায় বন্দি।
মুক্তোর মত স্থির সুখ
বেদনা হয়ে লুটায়
ছায়াহীন পাহাড় চূড়ায়।
হৃদয়ালক্ষে ---
শব্দ,বাক্য,অক্ষরে
বিন্দু বির্সগে
প্রকৃতির মতো অকৃত্রিম হই।
অতঃপর
হৃদয়ে বজ্রপাতের কম্পনে,
নির্জন দ্বীপের মত নিঃসঙ্গ হই।

রবিবার, ১০ মার্চ, ২০১৯

তুমি ছুঁয়ে দিলে কবি ফাহমিদা ইয়াসমিন



তুমি ছুঁয়ে দিলেই আমি হব আকাশের নীল মেঘ ।
আর তুমি হবে সেই মেঘের দিগন্তরেখা
তুমি ছুঁয়ে দাওনি বলে,
আমি আজো...
বকুলতলায় মেঘ বালিকা হয়ে অপেক্ষা করি;
তুমি মুখ তুলে তাকালেই
আকাশটা হয়ে যাবে আয়না ।
আর আমি সূর্যের লাল কৃষ্ণচূড়া দিয়ে খোঁপা বাঁধবো।

বৃহস্পতিবার, ৭ মার্চ, ২০১৯

এখানেই থাকি আমি কবি টিপু সুলতান

মাটি ও ঘাস,টিনের চাল,নীল আকাশ;আমাদের প্রকৃতি।
তুমি চেয়ে দেখ লাবণী,এই কংক্রিটের শহরে
দোকান ভরা বিস্কুট,কলা রুটি হরদম চলছে বিক্রি;
ঈষৎ চালের শাদা ভাত,আলু ভর্তা আর সবজী-ডাল
এসবে বিবর্ণ মানুষ ঝুলছে প্রাচীন হতে আধুনিক
অথচ তোমার থেকেও সুন্দর,এখানেই থাকি আমি-

আকাশের দিকে তাকাও
শাদা বকের পালক ভেজা সোনালি বনায়ন ভোর
জলপাই গাছের ওপরে নেমেছে রুপসী বাংলা
কেবল সুখ অরণ্যে বাহারি সংসার,এখানেই থাকি আমি।

 ★

চোখগুলো তাঁর কান্না আঁকে
টিপু সুলতান

গড়িয়ে যাচ্ছে নাভিকাটা প্রাচীন দীর্ঘশ্বাস
নীরব প্রসন্নতার গহীন...
গুরুধুম ঘন আমাজন জঙ্গলের মত সহৃদয়ে;

একেকটি নক্ষত্র বাঁশপাতার আবছায়ায় শোয়ানো
কাঠের জানালায় উইপোকা কুরেকুরে নির্ঘুমের শব্দ বোনে
ভাঁটফুলের বুনো গন্ধ আছড়ায় উঠানের দিক
কেবল প্রিয়ের অব্যক্ত বেদনায়-কমল মন
চোখগুলো তাঁর কান্না আঁকে,বৃত্ত পৃথিবী নির্ঘাত প্রমাণ-




চোখ ভরা দ্বিতল চিলেকোঠায় উস্কানো শহর।
কাঁচা পাতার হাততালি ওড়ে
কুহক পাখির ডানায় গত বসন্তের ফাল্গুনী বৃষ্টি
অগোজ মাদকরসে ভেজায় নাগরিক শহর-পল্লী;

অসংখ্য প্রমুখ নামধর আমাদের আত্মীয়
বিরাট উর্বরে শেকড় লটকানো ঘাস,
পায়চারি পাতা দোলানো গাছ
দ্বিবীজ সোনালিধানের লাইব্রেরী,
বখতিয়ার ঘোড়া ফেরা ক্ষুরের স্রোত
উভচর শেয়ালকাঁটার দেহ মাড়িয়ে
রাতচোরা জ্যোৎস্নার শাদা মোম জ্বলে দিগন্তগামী-

*

বুধবার, ৬ মার্চ, ২০১৯

কবিতা অম্লান একুশ কবি আয়েশা মুন্নি

১৯৫২ সাল।
রাজপথ রক্তে হয়েছিল লাল।
২১ শে ফেব্রুয়ারি,
"আমি কি ভুলিতে পারি",
শহীদ মিনার আর প্রভাত ফেরি।

ভাষা শহীদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে
যে অমর কবিতার জন্ম,
বাঙালি জাতির হৃদয়ের ক্যানভাসে
খোদাই করা সালাম, রফিক, বরবত, জব্বার
আরো নাম না জানা কতো গর্বিত সন্তান।

রক্ত দিয়ে অর্জিত এ বাংলা ভাষার অহংকার,
শির উঁচু করে দাঁড়ানো আন্দোলন স্বাধীকার।
একুশ হল বাংলা ভাষার তাজ,
শোকের গাঁথায় সাদা কালো সাজ।

ভাষায়, সার্বভৌমত্বে, সাংস্কৃতিক স্বাতন্ত্রতায়,
একুশ মানে দুর্বার, জয় দূর্জয়, নির্ভীক নির্ভয়।
এখন একুশ ঊর্ধ্বশিরে বিশ্বময় জাতির জাতিত্বে
বিশ্বমঞ্চে স্বর্ণখচিত সিংহাসনে আসীন স্বস্তিতে।

তাই
একুশ, বাংলা ভাষাভাষীদের হৃদয়ে,
 চির ভাস্বর, চির অম্লান।

সোমবার, ৪ মার্চ, ২০১৯

ফখরুল হাসান এর ছোট গল্প ♦প্রণয়িনী♦

সদ্য বিধবা রুনার, কিছুদিন আগেই স্বামী মারা গেলো হার্ট এ্যাটাকে। জগৎসংসারে সবকিছুর প্রতি নিরাশ হয়ে পড়েছিলো রুনা। বিধবার অভিশাপটা বয়ে বেড়ানোর যন্ত্রণায় টিকতে পারছিলো না সে। চারপাশের পরিচিত মানুষদের কথাদূ্ষণে বেঁচে থাকার পরিবেশটাই পাল্টে যাচ্ছিলো। নিজকে ঘুটিয়ে নিচ্ছিলো রুনা। ২১ বছর বয়সে বিয়ে। ২২ বছর বয়সে বিধবা! নিয়তির কী নিষ্ঠুর খেলা! অথচ রুনাকে প্রথম দেখেই বিয়ের প্রস্তাব দিয়ে পাঠিয়েছিল সেলিম। মৌপুর গ্রামে একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে দেখা হয়েছিল দুইজনের। সেদিন রুনার পরনে ছিলো নীল কালারের কারুকাজ করা কামিজ আর সালোয়ার, খোঁপায় গোঁজা ছিলো বকুল ফুলের মালা, হাত দুইটি মেহেদিতে টকটকে লাল, নাকে কাঁচের নীল ফুল আর কানে ডিজাইন করা নীল রঙের দুল! তাকে দেখে সেলিমের মনে ধরেছিল। রুনা যেন মৌপুর গ্রামের মৌচাকের মৌরানী। সরকারি চাকরি করা এমন জামাই তো হাত ছাড়া উচিত নয়। যদিও সেলিমের বয়স আর রুনার বয়সের ব্যবধান ছিলো ১৫ বছরের। বিয়ের অল্প কিছুদিন পরেই মারা যায় সেলিম। আর রুনার নামে শুরু হয় বদনাম! যেন সেলিমের মৃত্যুর জন্য রুনাই দায়ী। রুনার জন্য বুঝি অপেক্ষা করছে বাকি সময়টুকু বঞ্চনা আর লাঞ্ছনার  অন্ধকার এক ভবিষ্যৎ। কিন্তু না মানুষের কথাদূষণে খুব বেশিদিন অন্ধকারে রাখতে পারেনি রুনাকে। পঁয়ত্রিশ বছর বয়সেও রুনাকে দেখে মনে হবে বিশ বছর বয়সের তরুণী। তার দিকে তাকালে যে-কোনো পুরুষের চোখ প্রথমে স্থির হবে তার সুডৌল বুকের দিকে, তারপর অপূর্ব সুন্দর মুখের দিকে।
চাকরির সুবাদে সুমনের সাথেে পরিচয় হয় রুনার, তাকে দেখেই ভালো লেগে যায় সুমনের! সেই থেকে তাদের সম্পর্কটা গভীর থেকে আরো গভীরে পৌঁছে যায়। সুমনকে একান্ত করে পাবার পর থেকে । রুনা যেন সেই আগের উচ্ছল তরুণী হয়ে গেছে। তরুণী , রুনার মুখ দেখলে মনে হবে কচি শসা। গোলাপের পাপড়ি যেন ঢেউ খেলে যাচ্ছে তার সারা দেহে। এখন সুমনের স্পর্শে রুনা প্রজাপতির মতো ডানা মেলে উড়ে চলে। রুনার কৃষ্ণপক্ষের আঁধার ঘরে। অমাবর্ষার চাঁদ হয়ে মনের জানালার ফাঁক দিয়ে ডুকে আলোয় ঝলমল করে সুমন নামের চাঁদ। সুমনও অফিস শেষে প্রায় রাতে রুনার প্রেমসুদা পান করে বাড়ি ফেরে। সেই রাতের স্বাভাবিক অবস্থাতেও থাকে না সুমন । মদ আর রুনার শরীরের নেশায় বুদ হয়ে থাকে। আর রুনাও যেন নতুন জীবন পেয়েছে সুমনের কাছে এসে !

২য় পর্ব

সকাল বেলা অফিস থেকে আজ ফোন এসেছে! সকাল মানে সকাল ৭টা! বুধবার কোম্পানির চট্টগ্রামে নতুন ব্রাঞ্চের উদ্বোধন উপলক্ষ্যে একটা জরুরী মিটিং ডেকেছে। মঙ্গলবার সকালে দুদিনের জন্য চট্টগ্রাম চলে যেতে হবে সুমনকে তাই জানাতে ফোন!সুমনের কাজে অফিস কর্তৃপক্ষ খুশি হয়ে নতুন ব্রাঞ্চের দায়িত্ব দিলো।  ফোনটা রেখেই সুমন ভাবছে রুনার কথা, তাকে সাথে করে চট্টগ্রাম নিয়ে যেতে পারলে অফিসের পর সময় নিজের করে নিতে পারতো। তিন চার দিন রুনাকে আশ মিটিয়ে কাছে পাওয়া যেত । রুনারও ইদানীং খাই এত বেড়ে গেছে যে সে একবার সুমনকে প্রস্তাব দিয়েছিল । দূরে কোথাও দুজনে হারিয়ে যাবে। সেদিন সুমন দুষ্টুমি করে বলে ছিলো দিনে মিটিং আর রাতে রুনার সাথে নিশ্চিন্তে ডেটিং! তবে দুষ্টুমিটাই কী আজ সত্যি হতে যাচ্ছে!
মোবাইল হাতে নিয়ে রুনাকে কল দিলো সুমন। কল বেজেই যাচ্ছে কিন্তু রিসিভ হচ্ছে না! মনে হয় রুনা গভীর ঘুমে অচেতন। কিছুক্ষণ পর সুমন আবার কল দিলো।
'হ্যালো '
'হ্যালো'
'তোমার ঘুম ভাঙলো থাহলে?'
'হ্যাঁ কেনো কোন সমস্যা?'
'না'
'তাহলে এতো সকালে কল দিলা যে?'
'কল দিয়েছি আমার বিয়ের দাওয়াত দিতে।'
'আরে ধ্যাত বলো না'
'আমি মঙ্গলবার চট্টগ্রাম যাচ্ছি '
'বলো কী!'
'হ্যাঁ সত্যি বলছি'
'ওয়াও আমিও যাবো তোমার সাথে!'
'হুম সেজন্য তো কল করা!'
'তাই!'
'হ্যাঁ তাই।'
'লাভ ইউ বেবি'
'লাভ ইউ, রেডি থেকো'
'ওকে বেবি'
'বাই'
'বাই'
কোম্পানি সুমনকে, পুরো প্রোগ্রামের কো-অর্ডিনেটর বানিয়ে পাঠিয়েছে । এখন কতটা সময় সে বের করতে পারবে সন্দেহ আছে। রুনাও সুমনকে কিছু জিজ্ঞেস করার সুযোগ পাচ্ছেনা। সুমনের অফিসের কাজের প্রচন্ড চাপ । শুধুমাত্র রাতটুকুই দুইজন দুজনাকে কাছে পায়। বাহিরের পৃথিবী নয় রাতের বিছানাই যে তাদের ভ্রমন করার জায়গা! এ-কদিন ধরে অফিসের কাজের চাপে রুনাকে ঠিকমত সময় দিতে পারেনি সে ।
সুমন আজ ভোর ৫ টায় উঠে পড়লো ঘুম থেকে। কাল শুক্রবার অফিসের কাজ নেই। তবুও ঘুম ভেঙে গেলো! পাশে হাতড়ে দেখলো রুনা নেই।

৩য় পর্ব

সুমন, রূমের বাইরে এসে দেখলো কেউই ওঠেনি। আহ! ভোরের স্নিগ্ধ বাতাস, কতদিন গায়ে মাখেনি। খুব ইচ্ছে করলো ছাদে উঠে বাতাস লাগাতে। উঠেও গেল ছাদে। সুমন ছাদে উঠে বু্ঝতে পারলো ছাদ সেরকম ব্যবহার হয়না। হয়তো কেউ বেড়াতে এলেই ব্যবহার হয়। এমনিতেও কয়েটা জলের ট্যাংক ছাড়া কিছু নেই সেখানে । ছাদে উঠতেই ভোরের স্নিগ্ধ বাতাস গায়ে এসে লাগলো সুমনের, চাকরি আর নেশার বাহিরেও যে একটা পৃথিবীর আছে! সেটা আজকে অনুভব করলো সুমন। ধীরে ধীরে হাঁটছে সুমন হঠাৎ কানে এল হালকা গানের শব্দ। প্রথমে ভাবলো মনের ভুল, কিন্তু না, আবারো আসছে। মনে হচ্ছে রুনার গলা। আসছে কোথা থেকে। বুক ঢিপঢিপ করতে লাগলো সুমনের । জলের ট্যাঙ্কের দিকে এগিয়ে গেল সুমন । সাতসকালে সুমনের চোখ দুটি ঝলসে গেল ! রুনা প্রায় অর্ধনগ্ন, পাতলা হাউসকোট গায়ে, রুনার পড়নে শুধু হাফ প্যান্ট। সুমনের মাথায় আগুন ধরে গেল রুনাকে দেখে । জলের ট্যাঙ্কে হেলান দিয়ে পরম স্নেহে রুনার মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে আর ‘ ঠোঁটে ঠোঁটে রেখে পাখি যেভাবে তার বাচ্চাদের আদার খাওয়ায় সেভাবে ঠোঁট রেখে। দুহাতে রুনার গলা জড়িয়ে ধরে জোরে চাপ দিয়ে সুমনের বুকের সাথে রুনাকে মিলিয়ে নিলো । হাউসকোটের ভেতরে থাকা তুলতুলে নরম মাংসদ্বয়  যেন দুইজন মিশে যাবার মাঝে বাঁধা সৃষ্টি করছে!
'সুমন কি করছো?'
'কেউ তো এসে পরতে পারে।'
বলে সুমনের বাহু থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে নিলো রুনা।
সুমন হাতছানি দিয়ে রুনাকে কাছে ডাকলো।
'কেউ আসবে না।'
'দেখবেও না ডার্লিং!'
গত তিনরাত ধরে বিছানায় আমার রুনা আমাকে যে কি চরম সুখ দিচ্ছে তা বলার নয়,
তুমি এসো, বলে সুমন তার কোলে তুলে নিলো রুনাকে। তারপর সুমনের মাথার চুলে রুনার আঙুল দিয়ে বিলি কেটে বললো,
‘অনেক হয়েছে।'
রাতে বিছানায় সুমনের সাথে যা ঘটেছে তা ভেবে ভোরের আলোয় রুনা ইতস্তত করতে লাগলো দেখে রুনাকে ধরে টেনে সুমন তার বুকে জড়িয়ে ধরলো।
'আমাকে ছাড়ো তাড়াতাড়ি।'
সবাই উঠে পড়বে বলে রুনা ট্যাঙ্কে হেলান দিয়ে হেলে গেল একটু। সুমন রুনার সামনে বসে রুনার ঠোঁটে মুখে গালে চুমুর পর চুমু দিয়ে যাচ্ছে । রুনাও মিষ্টি করে হাসলো সুমনের দিকে তাকিয়ে।
‘অসভ্য ছেলে'
রাতে এতবার আদর দিলাম তাও আবার সকাল সকাল!
'রাক্ষস একটা।'
বলে লজ্জায় সুমনের বুকে মুখে লুকিয়েছে রুনা ।
'ও রুনা সুইটহার্ট!'
আমার জান বলে সুমন চোখ বন্ধ করে রুনার ঠোঁট কামড়ে ধরে প্রণয়নে ঝড় তুলতে লাগলো।

ছোট গল্প- আমি মিন্টু বলছি - শ ফি ক ন হো র


আমাদের পরিবারের সদস্য সংখ্যা চারজন, আমার একবোন,মা-বাবা । বাবা প্রাইমারি স্কুলের মাস্টার, মা সংসারের কাজ নিয়ে ব্যস্ত । ছোট বোনটার বিয়ে হয়ে গেছে ।মা’ সারাদিন একা বাড়িতে থাকে । বাবা স্কুল থেকে এসে ছেলেমেয়েদের প্রাইভেট পড়ায়, ‘বাড়তি কিছু টাকা সংসারে যোগ হয়, ‘ মা’ চাইত আমার বিয়ে দিয়ে তারা, সুখে — শান্তিতে বাকি দিনগুলি অতিবাহিত করবে ।বাবা কখনো আমাকে বলেনি খোকা, তোর জন্য মেয়ে দেখছি; বা আমাদের ঘরে একটা বউ দরকার । আমি রাত করে বাড়ি ফিরতাম; বলে বাবা আমার প্রতি ভীষণ নারাজ, মাঝে মধ্যে আমার সঙ্গে কথা বলা বন্ধ করে দিতেন । আমার ভীষণ রাগ হত । আমি রাতে একাকী খুব কান্না করতাম । মা বুঝতে পারত;তবুও কিছুই বলতো না ।

আমি কিছুদিন পরে রাগ করে বাড়ি থেকে চলে যাই । মা’বাড়ি থেকে যাবার দিন, আমাকে একবার ও বললো — না, খোকা তোর বাবা রাগ করে না হয়;কথা গুলো বলেছে-তুই বাড়ির ছেলে, বাড়িতে থাক । মা’ নিবর ভূমিকা পালন করলো । আমার অভিমান আরও কঠিন হতে লাগলো । মনে -মনে শতবার বলেছি, তোরে মরে গেলেও কোনদিন এ বাড়িতে আসব — না ।আমি সকালে উঠে চলে আসলাম নগরবাড়ি ঘাটে,সেখান থেকে নৌকা যোগে ঢাকা ।

হাকিম বিশ্বাসের ছেলের মারফত গার্মেন্টসে একটা চাকরি হলো আমার তাও অনেক কষ্টে ।
প্রথম দিন অফিসে এসেই ধাক্কা খেলাম । সুপারভাইজার যাচ্ছে তাই বলে বকাবাজি করতে লাগলো । গার্মেন্টস না কি পতিতালয়,বুঝে ওঠার আগেই নাজমা, নামের একটা মেয়ে বললো ভাই । এখানে সবার সঙ্গে বাজে আচরণ করা হয় । কেউ কিছুই বলে না । মুখ থেকে কোন কথা বের হলে সোজা গেট দিয়ে চলে যেতে হবে । অবাক হলাম ! এই পরিবেশ গার্মেন্টসে । ‘যাব কোথায় ?' বাড়ি থেকে তো রাগ করে চলে এসেছি । ‘ভাগ্যে যা আছে —তাই  হবে ?'এভাবেই কেটে গেল, আলিফ গার্মেন্টসে দু’বছর । বাড়ি থেকে কেউ আমার খোঁজখবর নেয়নি । আমি তো মনে-মনে ভেবে নিয়েছি;এ পৃথিবীতে আমার আপনজন  বলে কেউ নেই । কেউ যখন জিজ্ঞাসা, করত ভাই আপনার পরিবারে কে -কে আছেন ? বুকের ভিতরটা কেঁপে উঠত ।মিথ্যে করে বলতাম, ‘কেউ নেই আমার, । নিজেকে সুখী মানুষ মনে হত তখন ।চোখ বেয়ে জল গড়িয়ে পড়ল ,আমি পাশের পুরাতন কাপড় দিয়ে চোখ মুছতে মুছতে সেখান থেকে চলে গেলাম ।

রাতে মায়ের জন্য খুব কষ্ট হত । মাকে ভীষণ মনে পড়ত । চাপা অভিমানে মাকে ভুলে গেলাম ।মীরা ,তখন আমার স্ত্রী । আমাকে মাঝে মধ্যে প্রশ্ন করত ।তোমার বাবা’ মায়ের জন্য মসজিদে শুক্রবার মিলাদ দিতে পার । ‘মানুষ বাবা মায়ের জন্য কত কি করে , তুমি না— তোমার বাবা মায়ের এক মাত্র সন্তান । আমার বুকের পাঁজর টা তখন ভেঙ্গে খান খান হয়ে যায় । মা"তুমি আমাকে ক্ষমা করে দিও । রঙিন স্বপ্নের মোহ মায়ায় সব কিছু অবলীলায় ভুলে আছি ।পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন আমি ।

বাবা আগের মত টিউশনি করাতে পারে না,সংসারে অভাব,মা' প্যারালাইজড দু'বছর হল । মা' আমাকে বাড়ি যেতে বলেছে; গজেন মাঝি সন্ধ্যায় নৌকা ছেড়ে দিবে ।
আমি গজেন চাচাকে আশ্বস্ত করলাম, কাকা আমি দু'একদিনের মধ্যে বাড়ি যাবো;আপনি বাবাকে বলবেন ।পাটের নৌকা নাজিরগঞ্জ ঘাটে রেখে আগে তোমাদের বাড়ি সংবাদ দিয়ে, তারপর  আমি বাড়ি ফিরব চিন্তা কর না ।

আমি বাড়ির জন্য কিছু কিনে দিতে চাইলাম ! গজেন মাঝি বলল- মিন্টু তোমার মা' তোমাকে দেখতে চেয়েছে ।যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বাড়ি যেতে বলছে । আমার সাত বছরের ছেলে সোহান, দাদা দাদিকে কখনো দেখেনি । বউকে বাসায় এসে বললাম , ‘আমরা আগামিকাল গ্রামের বাড়ি যাব ।'বউ পুলকিত হল । সারারাত ঘুম আর চোখে আসলো না ।ভোর রাতে অপ্রত্যাশিত ম্যানেজার স্যারের ফোন আলিফ গার্মেন্টসে আগুন লেগেছে। ফায়ার সার্ভিসের ১১টি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করেছে । আমার বাড়ি যাওয়া হল না । গ্রামের বাড়ি থেকে কে — যেন ফোন করেছিল; আমি মিন্টু বলছি, কত বার একই কথা ।ওপর পাশ থেকে কি ভেসে আসছে কিছুই বুঝতে পারছি না ।  মানুষের  কান্নার আহাজারিতে কানে কিছুই ঢুকছে না।বিকট শব্দে কিছুই শুনতে পাচ্ছিলাম না তখন । সে ফোন টা ছিল আমার বাবার পৃথিবী ত্যাগের কলিং-বেল ।


মা'বাবার লাশ ছুঁয়ে শপথ নিয়েছে আমার মুখ দেখবে না । পরের সপ্তাহে গজেন মাঝির সঙ্গে দেখা ।চাচা আমার দেখে মুখ ফিরেয়ে নিলেন । চাচা কেমন আছেন । কে আপনি ? আমি !আপনাকে চিনতে পারছি না । গজেন কাকা, আমি মিন্টু । আমাকে চিনতে পারছেন না । সত্যি করে বলেন, আমাকে চিনতে পারছেন— না । আমার চোখ ঝাপসা হয়ে আসছে । তোকে চিনলে তোর বাপের আত্মা কষ্ট পাবে রে মিন্টু ।‘ বুকের ধন কী এত টা হারামি হয়। 'তুই এমন হারামি রে মিন্টু তোর মৃত বাপের লাশটা দেখতে গেলি না ।তোর মা"যতটা না কষ্ট পেয়েছে তোর বাবার চলে যাওয়াতে তার চেয়ে বেশি কষ্ট পেয়েছে তার না যাওয়াতে । তুই চলে যা মিন্টু আমার খুব কষ্ট হচ্ছে ।

মা"শোকে পাথর হয়ে গেছে । মা কানে শুনতে পায় না । যখন মা- মা- মা বলে ডাকলাম মা" কোন সারা শব্দ দিল না । চোখে দেখে না । মা"আমি মিন্টু বলছি;
দেখ তোমার বউ মাকে নিয়ে এসেছি ! মা"সোহান তোমার নাতি ।মায়ের চোখ দিয়ে অশ্রু গড়িয়ে পড়ল । আমার সঙ্গে মা"কখনো কথা বলেনি অভিমানে ….!

শনিবার, ২ মার্চ, ২০১৯

জান্নাতুল রিকসনার এক গুচ্ছ রোমান্টিক ছড়া-কবিতা


সত্যি
করে বল্

জ্বালাই তোরে খুব কি বেশি
সকাল, দুপুর, সাঝে?
ব্যাঘাত ঘটে আমায় নিয়ে
সকল কাজের মাঝে?

আমি কি তোর পথের কাঁটা?
পায়ে বিঁধি রোজ?
ব্যথার ভয়ে তাই কি আমার
নিসনা কোনো খোঁজ?

আমি কি তোর চোখের কুটা
চোখ বুঝে তাই রাখিস?
কষ্ট পাওয়ার ভয়ে কি তুই
দূরে দূরে থাকিস?

ও ছড়াকার

ও ছড়াকার,লিখো একটা
ফাগুনেরই ছড়া।
কথাগুলা সাজানো আর
আবেগে কড়কড়া।

কৃষ্ণচূড়া ফুলের মত
আগুনঝরা রূপ,
মৌমাছিরা মধু লুটে
থাকে যেমন চুপ।

সূর্যমুখী, গাদার মত
হলদে বরণ রং,
ফুল বাগিচা দেখায় যেমন
ভিন্ন সাজের ঢং।

ও ছড়াকার,লিখো কিন্তু
মিষ্টি একটা ছড়া।
হাসনা হেনার সুবাস যেমন
মনটা আকুল করা।


স্বাদের বরই

টসটস রসে বরইগুলো
খেতে ভারী স্বাদ,
বন্ধু আমার, খাওয়ার লোভে
ঘুমায়নি কাল রাত!
নেমন্তন্ন করেছিলাম,
চুপিচুপি তারে
শর্ত জুড়ে দিয়েছিলাম
না কয় যেনো কা'রে।
যথারীতি বরইগুলো
থলেই ছিল ভরা!
খেতে খেতে সবই সাবাড়,
কী আর ছিল করা!
রেগেমেগে বন্ধু আমার
হয়ে গেলো চুপ।
এমনতর ঘটানোতে
কষ্ট পেলাম খুব।

একুশে বই মেলার সমাপনী অনুষ্ঠানে সেরা ৫ম স্থান অর্জন করে যাত্রাপথ

নিজস্ব প্রতিবেদক:
 দীর্ঘ ২বছর পর নরসিংদীতে জেলা প্রশাসন কর্তৃক আয়োজিত হয় অমর একুশে বই মেলা।নরসিংদী শিল্পকলার সামনে প্রায় ৪৭টি স্টল নিয়ে এবারের বই মেলা পরিচালিত হয়।উক্ত বই মেলায় অংশ গ্রহন করে বিভিন্ন প্রশাসনিক সংগঠন,সামাজিক সংগঠন ও অনেক লাইব্রেরি।উক্ত বই মেলায় অংশ গহণ করে সামাজিক সংঠন যাত্রাপথ।দীর্ঘ ৩বছর ধরে কিছু কলেজ পড়ুয়া এবং বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া যুবক-যুবতী নিয়ে গড়ে উঠে উক্ত সংগঠনটি।
সংগঠনের মূল লক্ষই হচ্ছে মানব সেবা মূলক কাজ।এবারের বই মেলায় তাদের স্টলটি ছিল খুবই আকর্ষণীয়।খুব কম মূলে বই বিক্রি করে অর্জন করা অর্থ গরিবদের পিছনে ব্যায় করাই হলো তাদের মূল উদ্দ্যেগ।তাদের এই রকম উদ্দ্যেগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন হাজারো মানুষ।বই মেলায় অনেকে তাদের এই উদ্দ্যেগকে স্বাগতম জানিয়ে তাদের সাথে যুক্তও হয়েছে।গত ২৭-০২-২০১৯তারিখ রাত নরসিংদী জেলা প্রশাসন কর্তৃক আয়োজিত অমর একুশে বই মেলার সমাপনী অনুষ্ঠানে সেরা ৭টি স্টল হতে ৫ম স্থান অর্জন করে যাত্রাপথ।সেরা ৫ম স্থান অধিকার করায় যাত্রাপথের প্রতিষ্ঠাতা ও সাধারণ সম্পাদক ইফতেখায়রুল হক ইফাত এর হাতে ক্রেস্ট তুলে দেয় মাননীয় জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সৈয়দা ফারহানা কাউনাইন।সম্মাননা হাতে পেয়ে যাত্রাপথ সংগঠনের প্রায় সকলে খুবই আনন্দিত।পরবর্তীতে তারা সর্বদা বই মেলা এবং সকল সামাজিক কর্ম কান্ডে অংশ গ্রহণ করবে বলে আশা প্রকাশ করে এবং সংগঠনকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য সকলের সাহায্য সহযোগীতা কামনা করে সংগঠনটির প্রতিষ্ঠাতা ও সাধারণ সম্পাদক ইফতেখায়রুল হক ইফাত।

শুক্রবার, ১ মার্চ, ২০১৯

কবিতা 'বর্ণ' কবি জুয়েল বড়ুয়া

চোখলাল করে আর কত কাল?
বিবেকহীন হয়ে চোখ ঘুড়িয়ে চলা।
ব্যস্ত মানুষ, ব্যস্ত চরণ যেন চেতনা হারা।
অঙ্গুল তুলে বলি, এই শোন শহীদের গর্জন,
এখনো নিঃশব্দে ভাসে, শুনে কি জনগন?
বলে, যত্নে রাখ বর্ণ ও ভাষা বাঙালির শ্রেষ্ঠ ধন।
আধুনিকতা ছলে, বিক্ষত আজ রক্তের ভাষা,
প্রতিটি বর্ণ রক্ত-সমুদ্র থেকে আসা।
প্রবল সময়-স্রোতে হারিয়েছে অনেক,
এখনো শহীদ-সমাধিতে প্রভাত-আলোর অভিষেক।