শুক্রবার, ২২ মার্চ, ২০১৯

অনুগল্পঃ-অচীন-লাশ গল্পকার মাসুদ চয়ন


শীত শীত আবহ।কুয়াশার বুক কেটে এগিয়ে যাচ্ছে পথিক।
পথিমধ্যে একটা পঁচা গলিত লাশ দেখে থমকে দাঁড়ালো।
উইপোকারা ডিবি সাজিয়েছে লাশের বুকে।অসহ্য গন্ধ!তবুও পথিক সঠান দাঁড়িয়ে থাকে।পরিচিত কারো লাশ মনে হয় তার কাছে।মানুষ তো জন্মান্তরবাদ পরিচিত।ওটা মানুষের লাশ।মেয়ে মানুষ। গঠনে পাহাড়ের মতো খাঁজ।আঁকাবাকা নদীময় ভাঁজ।নাক খুলে গন্ধ শুঁকে যায়।কাছে গিয়ে উইপোকার ডিবি নাড়িয়ে-চাড়িয়ে দেখে।
উইপোকারা সারি বেঁধে পালাতে থাকে।বেশিদিনের পুরনো লাশ নয়।দিন পনেরো কি বিশ হবে বুঝি।মুখ থ্যাঁতলানো।চোখ তুলে ফেলা হয়েছে।নাক কেটেছে গভীর ক্ষত করে।মুখ দেখে চেনা দায়।অথচ এ পাড়ার কেউ হতেও পারে।নারীর লাশ
আহা কষ্ট! কার ঘরনী ছিলো?।চুলের উপরিভাগ টেনে তুলে ফেলা হয়েছে চামড়া শুদ্ধ।গলিত মগজে জমাটরক্তে সাদা কালো ডোড়া পোকার কিলবিল নৃত্য দৃশ্যত।বিবস্ত্র শরীর কে যেনো পুরনো চাদরে আবৃত করে দিয়েছে।ডানহাতে শক্ত মুট করে রাখা একটি চিরকুট।
খুলে দেখে পথিক।রক্তাক্ষরের লেখা'আমি যুদ্ধ শিশুর জন্ম দিয়েছি,কোনো মানবিক হৃদয় এই জনহীন পথ বেয়ে গমনকালে তাকে কোলে তুলে নিয়ো।ও নিস্পাপ,আমি শত্রু বন্দী হলেও।পাশের জারুল ঝোঁপে ওকে তুলে রেখেছি।আমাকে পাশবিকভাবে রেপ করে চলেছে। টানা দু'সপ্তাহ ১৩ জন যোদ্ধা।এরপর কি হবে জানিনা।তবে মৃত্যু অতি সন্নিকট।পথিক অশ্রুছল চোখ নিয়ে নবজাতককে খুঁজে পায়।দেহ নেই নিথর অবুঝ কংকাল।পথিক শুন্য আকাশ পানে মাথা তুলে চিৎকার করে কেঁদে যায়।
"আমি যুদ্ধে যাবো,যুদ্ধ শিশু সম্ভ্রম হারা জননী বোনকে বাঁচাবো।আমি বীর হতে চাইনা রক্ষক হবো যুদ্ধ ময়দানে পথে ঘাটে।একটা মানবিক রাইফেল দাও দূর আকাশ।
Share: