ফুটবল বিশ্বকাপের আগমনী ঘণ্টা বাজলেই সারাদেশ ছেয়ে যায় বিভিন্ন দেশের জাতীয় পতাকায়। দেয়ালে দেয়ালে শোভা পায় প্রিয় দল ও খেলোয়াড়ের নাম। প্রিয় দলের খেলা থাকলে শহরের গলিতে গলিতে তা বড় পর্দায় দেখানোর ব্যবস্থা হয়। পছন্দের দলের সফলতায় মিষ্টি বিতরণের খবরও মেলে হামেশাই।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বিশেষ করে ফেসবুকে এ যুগে সেই উন্মাদনা পেয়েছে নতুন মাত্রা। মাঠে যখন খেলোয়াড়েরা খেলে, সমর্থকেরা খেলে সামাজিক মাধ্যমে। নিজের প্রোফাইলে, কভার ফটোতে শোভা পায় প্রিয় দল বা খেলোয়াড়ের ছবি। খেলা চলাকালে তার আপডেট দিয়ে চলে স্ট্যাটাস। পছন্দের দলের জয়ে উচ্ছ্বাস আর স্তুতিতে ভরে যায় সমর্থকদের ওয়াল, পরাজয়ে হতাশাও প্রকাশ করেন তারা। চলে প্রতিপক্ষ দলের সমর্থকদের পাল্টাপাল্টি খোঁচাখুচি ও খুনসুটিও।
বাংলাদেশের সমর্থকদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয় লাতিন আমেরিকান দলগুলো। আরও নির্দিষ্ট করে আর্জেন্টিনা এবং ব্রাজিলের সমর্থকই বেশিরভাগ।জার্মানি, স্পেন বা ইতালির সমর্থকও রয়েছেন তবে তা আর্জেন্টিনা বা ব্রাজিলের সমর্থকদের তুলনায় অনেক কম।
বাংলাদেশের সমর্থকগোষ্ঠী যেন পুরো দুই শিবিরে বিভক্ত; আর্জেন্টিনা এবং ব্রাজিল শিবিরে। এই দুই দলের সমর্থকদের নিজের দলের প্রতি ভালোবাসার প্রকাশ এবং প্রতিপক্ষ দলের সমর্থকদের খোঁচাখুঁচি অনেকটা বাড়াবাড়ি পর্যায়েরই। একথা বললেও অত্যুক্তি হবে না যে, বাংলাদেশের গ্রামাঞ্চলে ফুটবল বিশ্বকাপ মানে এখনও অনেকে আর্জেন্টিনা এবং ব্রাজিলকেই বোঝে।
কিন্তু এ মাতামাতি থেকে কখনও কখনও ছড়ায় অযৌক্তিক ঘৃণা। এ নিয়ে মন কষাকষি বা হাতাহাতির খবরও আসে!
ফুটবল খেলা নিয়ে পরষ্পর বিপরীত দলের সাথে বিরোধ করা বোকামি ছাড়া কিছুই না । আমার মতে ফুটবল বিশ্রী একটা খেলা , সারাক্ষন বল নিয়ে দৌঁড়াদৌড়ি এদিকে দর্শক পপকর্ন চাবাতে চাবাতে ধেতরা বানিয়ে ফেলে মাগার গোলহয় না । পুরো নব্বই মিনিট শুধু শুধু দৌঁড়ায় এমন প্লেয়ার যার পাবে দির্ঘ্য ১০ মিনিটেও বল আসেনি তারপর ও দৌড়ায় , তবুও আশা একবার তো বলটা পায়ে লাগাই । যারা ফুটবলের ভক্ত তারা এতোই কঠিন ভক্ত যে মনেহয় কারো বন্ধু কিংবা ভাই টিভিতে ফুটবল খেলছে পারলেতো নিজেই খেলা শুরু করে।
আচ্ছা দেখেছেন কি প্রত্যেক দল ১১ জন প্লেয়ার খেলে আর্জেন্টিনা এবং ব্রাজিল দুই দলেরই সমার্থক রা অর্থাত্ আর্জেন্টিনার সার্পোটাররা শুধু মেসি আর তেভেজ নিয়েই পড়ে আছেন তেমনি ব্রাজিলেও , কোনো প্লেয়ারের নাম জানুক আর না জানুক মেসি আর তেভেজ এর নাম ঠিকই জানে বাকি প্লেয়ার দের কোনো নাম নেই , কারন মেসি বেশী গোল দিতে পারে ,অনেকে তো আর্জেন্টিনা বলতেই মেসিকে বোঝে আজব তৈল যুক্ত ভক্ত !
মেসি বাদে বাকি প্লেয়ারা যে বলটা একবারো ছোঁয়ার জন্য দৌড়ালো জনগন তো তার নাম মুখে ও নিলো না , দেখা গেছে বল অন্য প্লেয়ারের পায়ে দর্শক তখন ও মেসি মেসি করে চেচাচ্ছে , অর্থাত্ যা বোঝা যায় ফুটবল খেলা হচ্ছে শুধু শুধু গাঁধার দৌড়ানো যদি না আপনি মেসি না হন। তাছাড়া পা ভাঙ্গার জন্য অন্যতম খেলা হলে ফুটবল , ৯০ মিনিট চিনির বলদের মত হা করে থেকে ফলসরূপ একটা কি দু টা গোল ! মাত্র ।
ফুটবল খেলা চলাকালীন সময়ে ভক্তদের আপন আত্বীয় বানিয়ে ফেলবে এমন অবস্তা , অনেক ভক্ত তো তার প্রিয় প্লেয়ারের বায়ো নিয়ে এমন আলাপ জুড়ে দেয় যেন তারা উভয়ে ন্যাংটা কালের বন্ধু । হয়তো তার ভুলে যায় প্লেয়ার গুলো পৃথিবীর অন্যপ্রান্তে আছে , ভালো বাসা যেন দুরত্ব কমিয়ে দেয় । এক একটা দলের জন্য এরা এতো উল্লাস করে , ওখানে যদি বাংলাদেশ ফুটবল খেলতো তাহলেও মনেহয় এতো উল্লাসের সৃষ্টি হত না ।
আমি ফুটবল খেলা পছন্দ না করার কারন অন্য দেশনিয়ে লাফালাফি করতে ভালো লাগে না , তবে সমান্য ব্রাজিলের সাপোর্ট করি কারন পতাকাটা বাংলাদের সাথে কিছুটা মিল আছে ;) মনে মনে ভাবার চেষ্টা করি ওটা বাংলাদেশ খেলছে তবে ফুটবল নিয়ে কখনোই আহামরি উল্লাস নেই আমার ।
আমি সেই দিন ফুটবল খেলা ভালোবাসবো যেই দিন বাংলাদেশ ফুটবল বিশ্বকাপ জানিনা এই স্বপ্ন ৫০বছরেও পুরন হবে কিনা ।
তবুও কখনো অন্যদের মত মেসির সাথে আত্বীয়তা পাতানোর কোনো দরকার নেই কিংবা ম্যাসিকে নিয়ে এতো তেলাতেলির দরকার নেই ম্যাসির মাথায় এমনিতেই অনেক তেল ।
বাংলাদেশ খেলায় যতোই পছনে থাক ও নিয়েই আমার অসীম আনন্দ । ক্রিকেট আমার অত্যন্ত প্রিয় খেলা বাংলাদেশ খেলে বিধায়ই প্রিয় , অনক কেই দিখেছি নিজ দেশ জিতবে না জেনে অন্য দেশের সার্পোট করা শুরু করে দিছে ,
যখন ক্রিকেটের গেমস খেলি তখন বাংলাদেশের সাথে অন্য বড় দশকে হাড়িয়ে দেই আর মনেমনে ভাবি এমন যেন সত্যি সত্যি বাংলাদেশ বড় কোনো দলকে হাড়িয়ে দিছে ।
মূলত প্রসংঙ্গ ছিলো ফুটবল ,
যারা আগামী দিনের আআর্জেন্টিনা আর ব্রাজিল নিয়ে লাফাবেন তাদের বলছি ।
বিদেশী দেশ নিয়ে না লাফিয়ে দেশের কথা ভাবুন , ঐ আআর্জেন্টিনা আর ব্রাজিল যতোই ডাইহার্ড ফ্যান হন যদি ওটা সর্বক্ষনই অন্যের দেশ একসেকেন্ডের জন্যও বাংলাদেশ হবে না । নিজে একজায়গায় থেকে অপর স্থানের সফলতার খুশিতে গড়াগড়ি খাওয়া কতো টা হাস্যকর ভেবে দেখেছেন কি ?
ভাবুন বাংলাদেশের মানুষ যতো ঐসব দেশকে ভালোবাসে তার কিছু অংশ যদি বাংলাদেশের প্রতি থাকতো তাহলে ঐরকম ফুটবল কাপে বাংলাদেশ নামের একটা দল থাকতো বলে মনেহয় ।
অন্যদলের জার্সি যতোই দাম দিয়ে কিনুন ওটা শুধুই একটা গেঞ্জি মাত্র ঠিক আপনার বাসার আর দশটা গেঞ্জির মতই ।
সবই আপনার পাগলামির ফল , অর্থাত্ কিছুক্ষনের জন্য ভারসম্য হারানো পাগলের মত ।
আপনি ফুটবলকে ভালোবাসুন কিন্তু হাজার টাকা দিয়ে মেসির জার্সি কেনার কোনো সার্থকতা নেই , আপনি কখনোই মেসি হবেন না কিংবা আপনার শত ভালোবাসার পরও ম্যাসিকে কেউ বাংলাদেশি বলবে না ।
ফুটবল নিয়ে যতোই লাফালাফি করুন আর উল্লাস করুন , নিজ দেশে ঐ আআর্জেন্টিনা কিংবা ব্রাজিলের পতাকা লাগাবেন না , ভেবে দেখুন আপনি কিছুক্ষনের জন্য হলেও নিজ স্বাধীনতা হারাচ্ছেন ।
একটা কথায় মাথায় রাখুন নিজ দেশের লোকের থেকে ঐ ফুটবল দল গুলো আপন না , সামান্য দলের সাপোর্টের জন্য মারামারি কাটাকাটির যেন পাগলের চরিত্রের চর্চাকরা । আপনি যদি কোনো বিপদে পড়েন তাহলে হয়তো আপনার সাহায্যের জন্য তারাই এগিয়ে আসবে যাদের আপনি ভিন্নদলের সার্পোটার বলে মারতে ধাও করেছিলেন তাই এগিয়ে আসবে , আপনার বিপদে ম্যাসি কিংবা কাকা এগিযে আসবে না । ব্যাপার টা মাথায় রাখুন ।
প্রিয় ফুটবল দল হেরেছে বলে যাদের ভাংচুর করা অভ্যাস তারা মাথায় রাগবেন ,
আপনি কার উপর রাগ ঝাড়ছে ? নিজের ক্ষতিকরে যদি রাগ মেটাতে চান তবে এমন ভাবে নিজের ক্ষতিকরুন যাতে অন্যের ক্ষতি নাহয় । আপনার দল হয়্তো হেরেছে কিন্তু অনের দল জিতেছে ।
খেলাধুলা শুধুই বিনোদন মাধ্যম , খেলা উপভোগ মানসিক উন্নতির জন্য ,সেটা নিয়ে দাঙ্গা বাঁধানোর মত মাথায় কেঁড়া সম্পান্ন লোকদের খেলা থেকে দুরে থাকার অনুরোধ ।
যে যাই করুন , নিজদেশ টাকে ভালোবেশে করুন , আপনি কখনোই ভাববেন না আপনি দেশকে খুব ভালোবেশে ফেলেছেন ,তাহলে তা পুতুল খেলার মতো মিথ্যা । ভাবুন আপনি দেশে ভালোবাসতে পারেন নি আপনার কাজ ভালোবাসার প্রমান ফুটিয়ে তোলা অর্থাত্ দেশের প্রতি আপনার অনেক দায়িত্ব সেক্ষেত্র প্রতিটা লোকই দেশের অবিভাবক । আশা করি সকলেই দেশের প্রতি ভালোবাসা রেখে আগামী ফুটবল খেলা দেখবেন ।
মো:মেহেদী হাসান।
প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী,
আর.পি ফাউন্ডেশন।