মঙ্গলবার, ২৮ মে, ২০১৯

কবি শাহীন রেজা'র এক গুচ্ছ কবিতা


শিল্পসাহিত্যঃ 
সংযম
শাহীন রেজা

তিনি বলেছেন, সংযমী হও।
তোমার সামনে ছড়িয়ে থাকবে সকল প্রলোভন কিন্তু তুমি কিছুতেই নিজেকে হতে দেবেনা তাদের আহার।

দেহের চেয়েও যে হৃদয় পরিশুদ্ধ জরুরি
তা আমাদের বুঝতে হবে এই মাসটিতেই। সংযমী হতে হতে আমাদের পরিনত হতে হবে সেই বিশুদ্ধ হীরকখন্ডে; যার দ্যূতিতে
আলোময় সমগ্র বিশ্ব সকল চরাচর।

রমযান মানে সংযমের খেরোখাতা;
সে খাতায় বাঁধতে হবে পঞ্চইন্দ্রিয়কে এবং
সত্য ও বোধনমন্ত্রে জাগ্রত বিবেককে
তুলে দিতে হবে তাঁর সেই বিশালত্বে
আর বিলীন হয়ে যেতে যেতে উচ্চারণ
করতে হবে তাঁরই কীর্তিগাঁথা
আপন খেয়ালে।

রিপু দমনের মাস রমযান,
সংযমী হতে হতে তাঁর করুণা লাভের এইমাসে
এসো আমরা বিনয়ী হই,
কঠিন ও কঠোর প্রার্থনায় সঁপে দেই
আমাদের মুহূর্তগুলো।

______________________
তাহলে সে কথাই থাকল
শাহীন রেজা

তাহলে সে কথাই থাকল; নক্ষত্রপুর থেকে সূর্যগাড়িতে চড়ে তুমি পা রাখবে ছায়াবীথিতে আর আমি অগ্নিশ্বর থেকে মেঘঘুড়িতে চেপে যথাসময়ে জলসবুজের আস্তানায়;
নুহাশপল্লীতে আমাদের স্বাগত জানাবেন স্বয়ং হুমায়ূন আর তারসাথে বাঁশীতে সুর তুলে অশ্রুযাদুকর বারী সিদ্দিকী।

নাহ আমরা বিষণ্ন হবনা মোটেই; কারন সময়টা বর্ষাকাল নয় আবার চান্নিপসর হতেও দেরী বেশ খানিকটা অতএব লোবানের ভয় নেই একদম। তুমি তো জানোই আমার সব সহ্য হয় কিন্তু মৃত্যুর ঘ্রাণ আমি সইতে পারিনা কিছুতেই। নুহাশে আর সবকিছুর সাথে যেটা আমাদের উদ্বেল করার জন্য প্রস্তুত তা হচ্ছে কিছু উত্তেজিত কামিনী আর তার সাথে অসংখ্য মাতাল মল্লিকা। আমি নিশ্চিত তোমার পাগলি খোঁপায় গুঁজে দেব কিছু একান্ত সৌরভ।

এইসব নয় সেইসব দিনরাত্রির উন্মাদনা আমাদের উতল করে তুললে আমরা সহজেই খুঁজে নিতে চাইব কানকাটা রমজানকে। দূর থেকে যদিও আমাদের সাহস জোগাবেন দূর্বার বাকের তবুও আমরা সন্ত্রস্ত থাকব মীর্জার মেজাজ মর্জিতে।

তাহলে সে কথাই থাকল; আমরা মিলিত হব দারুচিনির স্বপ্নে বিভোর চন্দনসভায় আর আমাদের চারদিকে উড়তে থাকবে নন্দিত নরকের বিশাল শিশিরসম্ভার; যার পাখায় পাখায় আলোর ডাহুক শুধু প্রতীক্ষায় অনন্ত ভৈরবীর।




_______________________
কেউ জানেনা
শাহীন রেজা

কোথায় তুমি কোথায় তুমি মোহন জাম
বুক পকেটে লুকিয়ে আছে হলুদ খাম

সাতক্ষীরা সেই অনেক দূর বৃষ্টি-বাসে
স্মৃতির কদম কেমন সুবাস ছলকে আসে

পেয়ারা গাছে বুলবুলিটা করুণ ডাকে
এত খুঁজি তবুও আমি পাইনা তাকে

অরূপ শালিক কোথায় থাকে কোন গলিতে
শিকড় ছাড়ে বকুল সে গাছ কোন পলিতে

কোথায় তুমি কেমন আছ কেউ জানেনা
উদোম বুকে হাওয়ার কুমীর আর টানেনা

যেথায় থাক যেমন থাক ভালই থেকো
সেই চুৃুমুটা গোপন গালে লুকিয়ে রেখো

ছিলাম আমি ছিলাম সেদিন বড্ড আপন
উদাস রোদে পেখম মেলে ময়ূর যাপন

সেই আমিটা তেমনি আছি মেঘের পাখি
তিরিশ ফাগুন ছাতিম ডালে লুকিয়ে রাখি

বড়শীটা নেই বড়শীটা নেই মাছের ভীড়ে
মুখ লুকিয়ে পঁচিশ কাঁদে আস্তে ধীরে

কেউ জানেনা কেউ জানেনা গোপন ঘুড়ি
উড়তে গিয়ে হয়েই গেল কখন চুরি।
Share: