কবি পারুল নূর এ নিশা'র গুচ্ছ কবিতা
নিঃসঙ্গতার অনুষঙ্গ
নিঃসঙ্গ জীবনের অনুষঙ্গ একাকিত্ব
দেহ আর চিত্ত;
জীবন নিজেই একটা দোতারা।
কখনো প্রজ্জ্বলিত কখনো আঁধারময়
কিছু বিরহের গান কিছু পিছুটান,
হৃদের তানপুরা আর সেতারে একাকীত্বের
সব সুর রটে যায় হৃদের বেতারে ।
নিমগ্ন মন যখন একাকীত্বে ডুবে তখন,
স্বপ্নেরা সাথি হারা।
দুঃসময় প্রাচীর ঘিরে একাকীত্ব বুক চিরে।
আকাশে বাতাসে গোপনে কি প্রকাশে
সব ছন্নছারা, ছন্দহারা।
রাতের আকাশ পানে তাকালাম দেখি
চন্দ্রাটাও সাথী হারা,
তাই দেখে হাসছে মিটি মিটি ধ্রুবতারা।
দিবসের সূর্য্য ও একলা দিশেহারা,
বিরহের যন্ত্রণার রোদ্দুরে পোড়ায় চারধারা।
আমার একাকীত্ব সময় ভুলে থাকা তোমায়
মর মরে ব্যথা জাগে দুর্নিবার
বিষাদের হাওয়ায় উড়ে চলা
শুকনো পাতার।
নিদ্রাহীন দুটিচোখে ভেসে ওঠে বার বার ;
সেদিনের সেই অকারণ...!
আজ দোলা দিচ্ছে যে বিচ্ছেদের জাগরণ ।
মুজিব বাংলার চিরদিনের
একটি আধার জাতির ভবিষ্যত,
ঘুমের ঘোরে বিভোরে স্বপ্ন দেখতে ঘাত প্রতিঘাত।
সময় তোমায় অপেক্ষায় হারালো,
বিবেক বিশ্বাসে বঙ্গবন্ধু।
বিশ্বাস নদীর এপার ওপারে,
পারাপারে ঠাই নাই মধ্য পথে ডাকাতি,
চাঁরিদিকে বাঁচাও বাঁচাও চিৎকারে এখনো কাঁদে জাতি।
অবক্ষয়ের দূর্গতি।
বড় অপ্রস্তুত কাঁচা হাতে তুলে দিলে স্বাধীনতা মুজিবইতো,
আজ যে প্রানের সঞ্চার উজ্জ্ববিত
সেই ছিলো তোমার অহংকার,
আবার পুত্র হয়ে এসো পিতা,
কাধে পিঠে চড়িয়ে শোধ দেব
সে দিনের ঋনের।
আজন্ম বাংলার তুমি,
তোমার বাংলা চিরদিনের।
তুমি ছাড়া এঠো হাতে ঘেটে ফেলে,
সেই স্বাধীনতা,
ফিকে হতে শিখে গেছে
মায়ের সবুজ শাড়ি লাল টিপে টিপে মোড়া।
সম্ভ্রম ঢাকা বড় দায়,
তোমাকে হারানো পথে ফিরে ফিরে চায়।
বাংলার মা আজো,
আর একবার বজ্র কন্ঠ লয়ে বাজো।
উৎপিড়িত
অমিমাংসিত মাংসাশী জীব
হয়ে ওঠে মানুষ যখন ;
উজ্জিবিত ধাবিত কেবল ।
হিংসার দুশ্চরিত্র চরিতার্থ করে ভক্ষণ
বিশ্বায়নের যুগে দূর্গন্ধ ছড়ায়
কুসংস্কার বাতাসে।
আদি হিংস্রতা লোভ লালসা হানাহানি
কি হবে পরিচ্ছদে অপরিচ্ছন্নতা ঢেকে সমাজ।
অবিরাম বেড়ে চলছে সভ্যতা নামে
অসভ্যতা নাগ পাশ।
শিশু-নারীর প্রতি বৈরী,
কবে হবে তৈরী
সভ্য সমাজ ।
শোভা বর্ধনের আসবাব
নারীর প্রতি সদভাব।
চাকচিক্যময় খেলনা ভেবে নারী ,শিশু
ছুড়ে ফেলার এ কেমন মনোভাব !
মানসিকতা বিবেকের দায় ভার
অসহায় নিপিড়িত নির্যাতনের বেড়া জাল,
উৎপিড়িত হবে আর কতো কাল ?
জগৎ-জয়ী-নারী
চার দেয়ালে, মনের বেখেয়ালে
অন্তরের যন্ত্র বাজিয়ে,
নিরাশার সুরে গেয়েছ নিরন্তর।
নতুনের জাগরণে জাগো হে জননী,
ভগ্নি, জায়া প্রভাত করো পোহায়ে জীবনের রজনী।
বোরখার আবডালে শুধু সান্ত্বনা
আর মনের বিপরীত ইচ্ছার প্রবঞ্চনা !
তোমার ভালোবাসার কোমল ছোঁয়াতে জেগেছে,
সব পাষাণের সান্ত্বনা। বাহুডোরে বাঁধা
প্রেমের তৃষ্ণা মেটানো বীর,
রণাঙ্গনের জন্যে সাজিয়ে
মনে বিহবলতা বাজিয়ে
পাঠাও বীরাঙ্গনা।
মনের অঙ্গনে ব্যথার চিত্তে
চিতা সাজিয়ে দিতে, হও তুমি সুকঠিন।
এই পৃথিবী তোমার-আমার
এই পৃথিবী তোমার-আমার
ভালোলাগার ভালোবাসার
হাজার রকম যুদ্ধ শেষে
কাঙ্খিত ক্ষণ কাছে আসার ।
এই পৃথিবী তোমার-আমার
লক্ষ তারার আকাশ দেখার
বাতাস থেকে সুর নিয়ে
সমারোহে কীর্তন শেখার।
এই পৃথিবী তোমার-আমার
বন-বাদাড়ে ঘুরে বেড়ার
জীবন মাঝির নৌকো টানে
মান শেষে ঘরে ফেরার।
এই পৃথিবী তোমার-আমার
ছোট্ট একটি সংসার গড়ার
সেই সংসারে জন্ম নেবে
অভিনব সব কাব্য-ছড়ার।
এই পৃথিবী তোমার-আমার
সুখ সাগরে সাঁতার কাটার
সাঁতার শেষে পাতাল থেকে
ডুব মেরে মুক্তা আনার।
এই পৃথিবী তোমার-আমার
পরাজয় ভুলে যাওয়ার
ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে
বৃহৎ কিছু কাছে পাওয়ার।
এই পৃথিবী তোমার-আমার
স্বপ্ন গড়ার স্বপ্ন ভাঙ্গার
টুকরো টুকরো স্বপ্ন গুলো
জরিয়ে নতুন পৃথিবী গড়ার ।
এই পৃথিবী তোমার-আমার
ভালোবাসার অটুট বিশ্বাস
সেই বিশ্বাসে আমি তোমার
তুমি কেবল শুধুই আমার ।