বৃহস্পতিবার, ২৯ নভেম্বর, ২০১৮

নিজের ছায়ার চেয়ে বাস্তবিক - নাজমীন মর্তুজা

উজ্জ্বল তামার মুখ
সবুজ ঘাস, পরাধীন ধান
রোদ পড়ে চন্দনে,
ফাল্গুনে কেনা আলো
হলুদ পাটল রঙ।
তাকে দেখে গায় গান
কাকাতুয়া হরিয়াল
তার চোখ চেয়ে
কলার ভেলা ভেসে যায়
মধ্য আকাশে দশমীর চাঁদ ওঠে।
নীল ছায়া ,ছায়া দেয় ,চোখে
তার শ্লেষ গালবাদ্য রগড়
তাকে পায়নি যারা তারা
নাম দেয় কলঙ্ক।
ব্যর্থতার গোপন খেলা
পরাজিত হৃদয়ের ।
সে পায় অংশত যে গায়
অংশত মনের গীতিকা
উড়ে শুকপাখি ,কথা
বলে ,গান বলে, জীবন বলে
টুকে রাখে কবি তুলোটে
যেন সব কথার গা মাথা মুছে
শব্দে বসায়, সুর দেয় ।

বৃহস্পতিবার, ২২ নভেম্বর, ২০১৮

ফাহমিদা ইয়াসমিন এর দুটি প্রেমের কবিতা

তোমার জন্য মন কাঁদে


তুমি কেন বদলে যাও
হঠাৎ করে,
কিসের আশায় দূরে থাকো
কোনসে ঝড়ে।
তোমায় আমি ভালোবাসি
আপন মমতায়
আমার মতো কেন তুমি
খোঁজনা আমায়।
তোমার জন্য মন কাঁদে
বারে বার,
তুমি আমার ভালোবাসার
সেরা উপহার।


ভালবাসি
.

তুমি আছো আমার আকাশে
তারাদের মতো
রাত হলে চুপ করে দেখে যাই।
তুমি কোন তারাটা বলোনা আমায়।
আমি প্রতিটা সময় চেয়ে থাকি
প্রতিটা তারায়
তোমারি আশায় তোমাকে দেখবো বলে।

বুধবার, ১৪ নভেম্বর, ২০১৮

ভালোবাসা - ফাহমিদা ইয়াসমিন

ক্লান্তির পর যখন চোখ বুঁজি
তোমাকে দেখি
নিরবে ভাসে জল
নদী হয় নিরবধি।
জীবনের সব পাখি দূরে চলে যায়
তখন তুমি আসো
কোন ক্লান্তি নাই
পাশে বসো
ভালোবাসো খুব ভালোবাসো।
আমি বলি কি দেবো তোমায়
এখন তো আমার বিকেল বেলা
সন্ধ্যা হয় হয়।
তুমি বলো মন থেকে একটি হাসি দাও ।

মঙ্গলবার, ১৩ নভেম্বর, ২০১৮

অবিবেচক এ কে রাসেল

পরের ক্ষেতে দিনে ও রাতে
খাটছে যারা কামলা,
অঝোর ঘামের শ্রমের মূল্য
লুটে নিল আমলা।
অবিবেচক নির্বাচকে
পেল যখন ভার
কেবা আমি কেবা  তুমি
গোন,তার ছেড়াদের তার।
স্বজনপ্রীতির পাল্লা ভারি
সিকি আনায় লাখ,
আছে যার ঝুলি ভরা
সেও দূরে থাক।
পাঠক আমি দূরেই থাকি
বন্ধ রাখি চোখ
এই ধরাতে বাড়ছে যখন, অবিবেচক ।

সোমবার, ৫ নভেম্বর, ২০১৮

হেমন্তের দিনে-ফেরদৌসী খানম রীনা

হেমন্ত নিয়ে এলো
নবান্নের উৎসব।
কৃষকের ঘরে ঘরে
যেন কলোরব।

নতুন ধানের ঘ্রাণে
পাড়া-পড়শির নেই ঘুম।
ঘরে ঘরে পিঠা -পায়েস
খাওয়ার পরে গেছে ধুম।

 সোনালী ফসল রয়েছে
দিগন্ত জুড়ে।
দেখে কৃষাণ-কৃষাণীর
মনটা গিয়েছে ভরে।

সারাদিন কৃষক তাই
কাজ করে মাঠে।
কৃষকের ছেলে-মেয়েরা
মন দেয় পাঠে।

হেমন্তের সকালে শিউলির
সুবাসে মন যায় ভরে।
অপরূপ সৌন্দর্যে শিউলি ফুল,
মনটি নেয় কেড়ে।

গাছে গাছে পাখিদের কলরবে,
মন থাকে না অার ঘরে।
হেমন্তের অাবেশে মুগ্ধ মন
হারায় ঐ সুদূরে।

ভোর বেলা শিশির কণা
দেখতে লাগে বেশ।
হেমন্তের অাগমনে পল্লী গাঁয়ে
অানন্দের নেই শেষ।

হেমন্তের হিমেল হাওয়া
হৃদয়ে দেয় দোলা।
শিশির সিক্ত স্নিগ্ধ ভোর
যাবেনা কখনোও ভোলা।

ছড়া কৃষকের হেমন্ত ছড়াকার জুবায়ের হোসেন

শীতল বাতাসে কৃষকের খুশিতে
এলো বাংলায় হেমন্ত,
আনন্দ উৎসবে বয়ে গেছে
সাড়া মাঠের প্রান্ত

গান ধরেছে মাঠে মাঝে
গ্রামের কৃষক গায়ক
সুরে সুরে ধান কাটছে
কৃষক ভাই আজ নায়ক।

নবান্ন উৎসব হবে বাংলার
প্রতি ঘরে ঘরে,
কৃষাণী তার মনের খুশিতে
ফসল মারাই করে।

কৃষক ছেলে স্কুল ফেলে
মাঠের দিকে ছুটে,
বাবা তাহার রৌদ্র তেজে
সোনার ফসল কাটে।

হেমন্ত এলে কৃষক চেয়ে
সুখী নাই কেউ,
বছর ঘুরে এলে হেমন্ত
বেয়ে যাই নবান্ন ঢেউ।

বুধবার, ৩১ অক্টোবর, ২০১৮

আঁশটে গন্ধ -মনি রায় ঘোষ



চারদিকে ইলিশ প্রেমীর অভাব নেই।বাঙালি মানেই ইলিশ ভক্ত তাতে যতই কাটা থাকুক না কেন।যতই আকাশ ছোঁয়া দাম হোক না কেন।
একটা একটা করে কাটা বেছে বেশ রসিয়ে কষিয়ে খেতে হয় তবেই না ইলিশের আসল স্বাদ পাওয়া যায়।কিন্তু এই ইলিশ যদি খুব সস্তা হত যদি অন্য মাছের মত চাইলেই কেনা যেত তবে কি একইরকম  সম্মান পেত এই মাছের রানী?যদি রোজ দুবেলা ভাতের পাতে দেখা যেত চিরকাঙ্খিত এই লোভনীয় মাছ তবে কি স্বাদে গন্ধে একইরকম মন জয় করতে পারত?ঘরময় আঁশটে গন্ধ ছড়াতো।একটু একটু করে  ইলিশপ্রেমীরা ইলিশ থেকে দুরে সরে যেত।বাজারে গিয়ে ইলিশের দিকে কেউ ফিরেও তাকাত না।মাছের রানী বলে কেউ পূজোও করত না আর।
ভালবাসা ও ঠিক তেমন।না চাইতেই পেয়ে গেলে এই বহুমূল্য শব্দ টাও মূল্য হারায়।কেউ যদি বারবার ভালোবাসি বলে কিংবা কেউ যদি বুঝতে পারে যে তাকে কেউ প্রয়োজনের তুলনায় বেশি ভালবাসে। তবে ইলিশের মতোই আঁশটে গন্ধ ছড়ায় সেই ভালোবাসা থেকে। বারবার না বলে যদি অনুভবে বুঝে নেয়া যায় তবেই ইলিশের মত রসিয়ে কষিয়ে উপভোগ করা যায়।আর আঁশটে গন্ধ ও সম্পর্ক টাকে নষ্ট করেনা।


সোমবার, ২৯ অক্টোবর, ২০১৮

মহান কবি - মনি রায় ঘোষ

এখন তুমি অনেক বড় কবি হয়েছো
বিশ্বজোড়া নাম হয়েছে তোমার।
পথ শিশুদের নিয়ে কবিতা লিখে,
সেরা কবির সম্মান পেয়েছো বারবার।
আজ মহান দরদী কবির শিরোপা নিতে
মঞ্চে উঠেছো।
সকলে তোমায় দুচোখ ভরে দেখছে,
তোমার মুখে জয়ের হাসি ফুটে উঠেছে।
নিজেকে তুমি ধরনীর রাজা ভাবছো।

কত ক্যামেরা কত আলো
তোমায় ঘিরে রয়েছে।
জনসমুদ্রের ভিড়ে তুমিই তখন সর্বেসর্বা।

শিরোপা হাতে নিয়ে তুমি
মঞ্চ ছেড়ে নেমে এলে।
দামী গাড়ি করে বাড়ির পথে রওনা হলে।
কিছুটা দুর যেতেই দেখলে লোকজনের হইচই
কত লোক রাস্তায় জমা হয়েছে।
জিজ্ঞেস করে জানতে পারলে একটা পথশিশু
গাড়ি চাপা পড়েছে।
রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে আছে রাস্তায়।
পুলিশের ভয়ে কেউ ছুঁয়েও দেখছে না।
কিন্তু তুমিতো দরদী কবি।এদের নিয়েই কবিতা লেখো।তুমি তো নিশ্চয়ই পুলিশের ভয়ে পিছিয়ে আসবে না।তুমি নিশ্চয়ই ওকে তোমার দামী গাড়ি করে হসপিটালে নিয়ে যাবে।
কিন্তু কই তুমি তো গেলেনা ওর কাছে।
অন্যদের মত বুদ্ধি করে এড়িয়ে গেলে।
গাড়ির জানালার কাঁচ টা তুলে দিলে
যাতে আর কিছু চোখে না পড়ে।
চালক কে বললে ঘুরিয়ে অন্য পথ ধরতে।
এসব ঝামেলায় যাওয়া নাকি মূর্খামি।
কে না কে চাপা পড়েছে তার জন্য একজন সনামধন্য কবি রাস্তায় নামবে তাতে কি তার সদ্য অর্জিত সন্মান থাকবে?

তুমি বুঝিয়ে দিলে কবি,
পথ শিশুদের নিয়ে কবিতা লেখা যায়
তাদের অসহায়তা দারিদ্র্যতাকে কলমের গোঁড়ায় দাঁড় করিয়ে মহান কবির শিরোপা পাওয়া যায়।
কিন্তু তাদের জন্য আইনি ঝামেলা কখনোই কাঁধে নেয়া যায়না।
নিজের ঠুনকো সম্মানের কথা না ভেবে
তাদের পাশে দাঁড়ানো যায়না।
এমন কবিতা নাই বা লিখলে কবি।
যে কবিতা শুধু কলমের কালি দিয়ে লেখা হয়
মানবিকতার ছোঁয়া তাতে বিন্দুমাত্র থাকেনা।
যে কবিতা লিখে মহান হওয়া যায়,
মহানুভবতা আসেনা।
ধিক্কার তোমার কবিত্বকে, ধিক্কার তোমার কবিতাকে।

কোয়েল নন্দী'র মাগ্নিফাইং গ্লাস

এক পুরুষের কোলে মাথা,এক পুরুষের কাঁধে হাত
এক পুরুষের শাড়ির টানে,রক্তে ভেজে ফুটপাত।

এক পুরুষ যত্ন করে,খোঁপায় লাগায় ফুল
এক পুরুষ খুলছে বেল্ট,ধরছে তোমার চুল।

এক পুরুষ আগলে তোমায়,আদুরে নাম ডাকে
এক পুরুষ দিচ্ছে ছ্যাঁকা,পা দুখানির ফাঁকে।

এক পুরুষের লোমশ বুকে,ডুকরে কাঁদো তুমি
এক পুরুষই কাঁদায় তোমায়,কান্না ভেজা জমি।

এক পুরুষ আবেগ বোঝে,গল্প শোনে রাত দুপুরে
এক পুরুষই,গল্প ভেঙে,যাচ্ছে ছেড়ে অনেক দূরে।

এক পুরুষ বন্ধু পিতা, স্বামী প্রেমিক, হৃদয় মাঝে
এক পুরুষই লম্পট বিশ্বাসঘাতক,ঘৃন্য ধর্ষক হয়ে বাঁচে।

বেজায় কঠিন পুরুষ চেনা,ভীত হৃদয় পালায় ত্রাসে
তাইতো নারী খুঁজছে পুরুষ মাগ্নিফাইং গ্লাসে।

সোমা বড়ুয়া রিমি গল্প অনুভূতি যখন অনুভবে



হুড তুলে রিকশা চড়া কোনকালেই আমার পছন্দের ছিলো না।সেদিন বিকেলে পিচ্চি শায়নকে কোলে বসিয়ে রিকশা করে শপিং মলের দিকে যাচ্ছিলাম। রাস্তায় পরিচিত-অপরিচিত অনেকেই আগ্রহ নিয়ে তাকাচ্ছিলো।এসব  একেবারেই ভালো লাগেনা,সবসময় ওদের এতো কৌতূহল থাকবে কেন?যেখানে আমার লুকিয়ে যেতে ইচ্ছে করে,নাহ ওদের কৌতূহল তখন বেড়ে যাবে।মাত্র দেড়-দুই বছরের শায়নটা ও এতো কিউট হয়েছে,মানুষ কার দিকে তাকায় সেটাই বুঝে উঠতে পারিনা।তাও ওদের বুঝা উচিত ভূত দেখার মতো ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে থাকা মানে অন্যকে অপ্রস্তুত করে ফেলা।শায়নকে কোল থেকে নামানোর ও কোন উপায় নেই,নামালেই অমনি হেঁটে হেঁটে এর ওর কাছে চলে যায়।তারপর, আবার এটা কি আপনার ছেলে,অনেক কিউট তো,এমন আরো কতশত প্রশ্ন।উত্তর দিয়ে দিয়ে পেরে না উঠলে তারপর এড়িয়ে যাই।
  কিন্তু,কলিগ পলাশ বাবু আজ কি জানতে চাইলেন ওর ব্যাপারে অমন করে।ওকে আমি কি আসলেই ভালোবাসি?এর অর্থ কি?নাহ,একটু কেমন জানি লাগছে।নতুন চাকরি,নতুন পরিবেশ,নতুন সব কলিগ,নাহ সবার প্রতি আন্তরিক হয়ে উঠতে না পারলেই খুব অভদ্রতা হবে।অমনিই পলাশ বাবুকে মেসেঞ্জারে নক করলো নীলা।
নীলা::হ্যালো স্যার ফ্রি আছেন?
পলাশ::হাঁ বলুন,কেমন আছেন?
নীলা::হুম আছি।আচ্ছা,আজ আপনি কেন এমন করে কথাটা বললেন?
পলাশ::কি বলেছি।ওহহ আচ্ছা,এমনি জানতে চাইলাম শায়নকে আপনি কতটুকু ভালোবাসেন,সেতো অনেক কিউট এমনিও,ভালো না বেসে পারা যায়না।
নীলা::আপনি কি বলতে চাচ্ছেন?স্পষ্ট করে বললে খুশি হতাম।এমন আচরণ আমি ডিজার্ভ করিনা।
পলাশ::সত্যি কথাই বলি,সেদিনে অফিসে গুঞ্জন শোনা গেলো ওকে নিয়ে।
নীলা::কেন?শায়ন আমার নাতি হয় সেটাতো বলেছি আপনাদেরকে।
পলাশ::কিন্তু,সেটাকে ফান ভেবেই উড়িয়ে দিয়েছি আমরা।আপনিতো আর কিছু বললেন না।
নীলা::ফান ভাবুন কিংবা সিরিয়াস ভাবুন সেটা যার যার পার্সোনাল ব্যাপার।বাট সে যে আমার হাজবেন্ড এর প্রথম  স্ত্রীর ঘরের মেয়ে কেয়ার ছেলে সেটাকি অকারণেই সবাইকে বলে বেড়াবো?
পলাশ ::আপনার জীবনে এমনটা কেন ঘটলো আর এটা হতে দিলেনই বা কেন সেটাই ভেবে পাইনা,কোনদিন বললেন ও না।
নীলা::কার জীবনে কখন কি ঘটে সেটাকি আগে থেকে বলতে পারা যায়?আমার হাজবেন্ড বা আমি কি জানতাম কেয়া ওর ছেলে শায়নকে নিয়ে স্বামীর ঘর ছেড়ে একেবারেই বাবার ঘরে এসে উঠবে!!!কেয়া ও কি জানতো!!!
আচ্ছা,কালকে অফিসে দেখা হচ্ছে।ঘুমিয়ে পড়ুন।শুভ রাত্রি।
পলাশ::ভালো থাকুন।শুভ রাত্রি,ম্যাডাম।
সিয়াম সাহেব বিষন্নমুখে বসে আছেন বারান্দায়।নীলা কাছে গিয়ে এক কাপ চা এগিয়ে দেয়।নাহ,সিয়াম সাহেবের কোন সাড়া নেই।নীরবতা ভেঙে নীলা বললো,শোন ভাবছি আজ বিকেলে কেয়াকে নিয়ে বাইরে একটু ঘুরতে যাবো।হঠাৎ অবাক করে দিয়ে সিয়াম সাহেব ডুকরে কেঁদে উঠলেন।নীলা,এতো করে বোঝায় তাও সিয়াম সাহেব যেন বুঝবেনা এমন।
সিয়াম সাহেব::নীলা,একটা সত্যি কথা বলবে?
নীলা::হ্যা,বলো।
সিয়াম ::আমার সাথে বিয়ে হয়ে তোমার কি আফসোস হয়না?
নীলা::নাহ,কেন হবে?
সিয়াম সাহেব এবার আরো চুপ হয়ে গেলেন। বিষন্নমনে জানলার দিকে তাকিয়ে আছেন।নীলা বুঝতে পারলো ব্যাপারটা।নীলা একসময়ে বন্ধুমহলে সবচেয়ে সুন্দরী,স্মার্ট,বুদ্ধিমতী মেয়েটি ছিলো।সিয়াম সাহেবকে যদিও ভালোবেসে বিয়ে করেনি,তবে বিয়ে করে অনেক ভালোবেসে ফেলেছে।সিয়াম সাহেবের জীবনে না এলে নীলা যেন নিজেকেই চিনে উঠতে পারতো না,এতো সমৃদ্ধ জীবন হতো না ওর।সিয়াম সাহেব ছিল নীলার বড় ভাইয়ার বন্ধু, একই সাথে ভার্সিটিতে পড়তো।সেসময় কেয়ার মায়ের সাথে উনার প্রেম ছিল,চার-পাঁচ বছর পর পরিবারের মতেই ওদের বিয়ে হয়।খুব ভালোবাসা ছিল ওদের মধ্যে।নীলা যদিও অনেক জুনিয়র ছিল,তাও ওদের এতো প্রেম-ভালোবাসা ছিল দেখে যে কেউ বলে দিতে পারবে ওরা কতটা ভালোবাসে দুজন দুজনকে।বছর ঘুরতেই কেয়া আসে ওদের কোলজুড়ে।কেয়া একটু বড় হলে,ওরা আবার বাচ্চা নেয়ার প্ল্যান করে।হঠাৎই কেয়ার মায়ের জরায়ু ক্যান্সার ধরা পরে।কিন্তু,সিয়াম সাহেব সেটা স্ত্রীকে বুঝতে দেননি,উন্নত  চিকিৎসা করিয়েছিলেন। তাও শেষমেশ  মৃত্যু এসে কেয়ার মাকে নিয়ে গেল কেয়ার কাছ থেকে, সিয়াম সাহেব ও একা হয়ে গেলেন।এভাবেই দিন কাটলো না।সিয়াম সাহেবের বাবা-মা নীলাদের বাসায় প্রস্তাব নিয়ে আসেন বিয়ের।উনাদের ইচ্ছেতেই বিয়েটা হয়েছিল।যদিও নীলার বাবা-মা ব্যাপারটা মানতে পারেনি,কিন্তু নীলা অমত করেনি বলেই বিয়েটা হয়েছিল।সিয়াম সাহেবের বাড়িতে এসে নীলার একবারের জন্য ও মনে হয়নি,কেয়া ওর মেয়ে নয় কিংবা সিয়াম সাহেব অন্য কারো স্বামী ছিল।নীলার খুব আপন মনে হতে লাগলো সবকিছু।কেয়া ও নীলাকে আপন করে নিয়েছিল।আর সিয়াম সাহেব ও নীলাকে এতোটা ভালোবাসবে সেটা নীলার ধারণায় ছিল না।তবে,নীলা কখনো চায়নি কেয়ার মায়ের স্মৃতি সিয়াম সাহেবের মন থেকে একেবারেই মুছে যাক।নীলা দেখতে চায়,তাঁর স্বামী অনেক বড় মনের মানুষ, যে কিনা তাঁর স্ত্রীদের অনেক ভালোবাসে।অধিকার না জন্মিয়ে অধিকার খাটাতে আসেন না এই পুরুষ।সিয়াম সাহেব তো তাঁর স্ত্রীকে মেরে ফেলেন নি,বা তাঁর থাকাকালে কোন নারীর দিকে খারাপ নজর ও দেননি।স্ত্রী মারা যাওয়ার পরে মেয়ের কথা চিন্তা করে আর বাবা-মায়ের ইচ্ছাকে মূল্য দিয়েই আবার বিয়ের পিড়িতে বসেছে।নীলাকে বিয়ে করে এনে ও কোন অধিকার বঞ্চিত করেনি।সর্বস্ব দিয়ে ভালোবেসেছে, সম্মান করেছে।কেয়াকে ও সুপাত্র দেখে বিয়ে দিয়েছে।তাহলে এই  মানুষটার দোষ কোথায়? এই মানুষটাকে তো অনেক ভালোবাসতে ইচ্ছে করে নীলার।শুধুই নিজের ভাবতে ইচ্ছে করে,এই মানুষটার কাঁধে মাথা রেখে হাজার জনম কাটাতে ইচ্ছে করে।অনেক ভালো আছে নীলা,অনেক সুখে আছে এই মানুষটাকে পেয়ে,কেয়াকে পেয়ে।কেয়া তো মা ডেকে ডেকেই অস্থির।কেয়ার মা ডাক শুনতে শুনতে নীলা যেন মাতৃত্ব আগেই চিনে গিয়েছিল।কেয়ার পরে কথা আসলো ওদের জীবনে।দুই মেয়ে নিয়েই ওদের ছোট্ট হাসি-খুশির সংসার ছিল।কেয়াকে সুপাত্র দেখে আমেরিকা প্রবাসী ছেলের সাথে বিয়ে দিয়েছিল।কিন্তু,মাসখানেক আগে কেয়া বাচ্চাসহ বাবার বাড়িতে চলে এসেছে একেবারে।এ কারণে সিয়াম সাহেবের মনটা বিষন্ন।একেতো প্রেসার ডিস্টার্ব করে,তার উপর এতো টেনশন সিয়াম সাহেব নিতে পারবে কিভাবে!!নীলা স্বাভাবিক হয়েই বলে,আচ্ছা প্লিজ তুমি এতো টেনশন করো না।
সিয়াম সাহেব বলে,আচ্ছা আমার জীবনে এতো অঘটন কেন বলোতো নীলা।
নীলা::আমাকে ও কি তোমার অঘটন বলে মনে হয়?
সিয়াম ::আমি তোমাকে কতটা ভালোবাসি সেটা কি কারো সাথে তুলনা করতে যাও তুমি?
নীলা::নাহ, এ কথা আর কক্ষনো বলবে না।আমি জানি,আমি তোমার ভালোবাসা পেয়েছি, যা অনেকেই পায়না,এর বেশি আমার আর কিছু চাইনা।
সিয়াম ::মাঝেমাঝে কি কষ্ট হয় তোমার?
নীলা ::সেই তুমি এখনো সেটা ভাবছো?
সিয়াম ::আমি তো দেখছিই তোমাকে কিরকম পরিস্থিতিতে পরতে হয়।
  হুম সেটা নতুন কিছু নয়,কয়েকদিন আগে অফিস কলিগ পলাশ বাবুও এরকম ইস্যু টেনে এনেছিলেন নীলা ভাবে।সামলে নিয়ে নীলা বলে,সে যাই হোক,ওদের কথায় আমি কান দেইনা।ওরা ভালো আছি দেখে হিংসে করে।আচ্ছা, বলোতো আমাদের মতো সুখী কয়জন আছে?
সিয়াম ::একটু ও কষ্ট হয়না নীলা!!
নীলা::তুমি ও কি আমার চোখের জল দেখার পৈশাচিক আনন্দ নিতে চাও?মানুষগুলো এমন কেন হয়?আমরা ভালো আছি জেনেও কেন খারাপ থাকার ইশারাতে ডাকছে?কেন আমাদেরকে আমাদের মতো থাকতে দেয় না?আমাদের সুখী হওয়াটাই কি অস্বাভাবিক? নীলার চোখের জল সিয়াম সাহেবের বুকে গিয়ে পোঁছোয়।দুজনের চোখের জলে ঝাপসা হয়ে যায় কিছু অনুভূতি, কিছু সময়।এভাবেই ঝাপসা আর স্পষ্ট হতে হতেই অনুভূতিগুলো অনুভবে মিশে যাচ্ছে।


           

কবিতা হিজড়া কবি ফেরদৌসী খানম রীনা


অামাদের এ সমাজে দেখি
কত হিজড়া,
এ সমাজের বঞ্চিত,
অবহেলিত তারা।

এক বিধাতার সৃষ্টি ওরা,
মানুষ রূপে গড়া।
তবু ওদের জীবনে নেই শান্তি,
দুঃখ-বেদনায় ভরা।

মানুষ হিসাবে তাদের ও
 অাছে বাঁচার অধিকার।
সবখানে ঘুরে বেড়ায়,
করে সবার কাছে অাবদার।

চায় টাকা নইলে যাবেনা,
বসে থাকে একমনে।
কেউ দেয় কেউ দেয় না
হতাশা তাদের জীবনে।

জন্মসূত্রে ওরা  মানুষ,
কোন মা-বাবার সন্তান।
শারীরিক বৈষম্যতার জন্য,
তারা হয় অপমান।

অামরা যদি তাদের প্রতি
হই একটু সদয়।
তবেই খুশি হবে হিজড়ারা,
বাচঁতে পারবে এ দুনিয়ায়।

হিজড়া হয়ে ওদের মনে,
অাছে কত দুঃখ!
সারা জীবন বয়ে কত যাতনা!
পায়না কোন সুখ।

তাই মনের দুঃখেই গান গায়,
মাঝে মাঝে নাচ দেখায়,
করে হাসি তামাসা,
সবাইকে হাসায়।

কেউ পরে শাড়ি অার চুড়ি,
কানে পরে দুল।
নিজেদের নাড়ী সাজাতে
করে না ভুল।

বিধাতা ওদের সৃষ্টি করেছেন,
এমন রূপে।
ছেলেও না মেয়েও অাশ্চর্য
এক কারুকার্যে।

মানুষ হিসেবে ওদের যদি
দেই একটু অাধিকার।
তবে খুশি হবে হিজড়ারা,
সাধ জাগবে বাঁচার।

হিজড়াদের অবহেলা না করে,
 দিতে হবে কর্মসংস্থান।
 কাজ শিখিয়ে যোগ্যতা বাড়িয়ে,
দিতে হবে তাদের সম্মান।

তবেই হিজড়ারা থাকবে ভালো,
হবে না লাঞ্চিত।
সমাজের কেউ ভাববে না,
ওদের অবাঞ্চিত।

রবিবার, ২৮ অক্টোবর, ২০১৮

ফাহমিদা ইয়াসমিনের একগুচ্ছ কবিতা



১.আকাশের মেঘে হয়োনা আড়াল
মন কাঁদে তোমারি জন্য
তুমি হীনা একাকী আমি
পৃথিবীর সব শূণ্য।
ঘুরি উড়ে যায়
আকাশের খুজে
তোমাকে দেখি মেঘ
মালায়।

২.
শরতের কাশবনে এসো প্রিয়
প্রেমের বাঁশি বাজাই
তুমি ছাড়া আমি
আমি ছাড়া তুমি
অসহায়।

৩.
চোখের জল বৃষ্টি হয়
তোমার জন্য কাঁদে
শীতের কুয়াশায়
স্মৃতি তোমার পিছু ডাকে।
একা বিকালে সূর্য নামে
বসে থাকি সাগরের তীরে
তুমারি প্রেমে সন্ধ্যা নামে
বসে থাকি অপেক্ষার টানে।

শনিবার, ২৭ অক্টোবর, ২০১৮

আমি সাহিত্যিক নই - মনি রায় ঘোষ

আমি সাহিত্যিক নই
সাহিত্যের ধারেকাছেও আমার বিচরণ নেই।
আমি কবি নই
গুছিয়ে কবিতা লেখা,ছন্দের মারপ্যাঁচ বোঝা, আমার কম্ম নয়।
আমি লেখিকাও নই
প্রতিবাদী ভাষা আমার আসেনা কোনকালেই।
আমি ধর্ষিতাকে কলমের গোড়ায় দাঁড় করাতে পারিনা।
মোমবাতি জ্বালিয়ে মিছিলে যোগ দিতে পারিনা।
কি লাভ করে??
পাতার পর পাতা ভরে কলমের কালি শেষ করেও শেষ পর্যন্ত লাভ টা কি হয়?
অপরাধী রা বুক ফুলিয়ে ঘুরে বেড়াবে।
তাদের শাস্তি দেয়া এই কলমের কম্ম নয়।

রোজ ধর্ষণ নিয়ে কত লেখালেখি হয়
ধর্ষকেরা কত লেখকের জন্ম দেয়।
কত লেখকের কলম প্রতিবাদে গর্জে ওঠে ।
সবিতো ওই দুদিনের খোরাক।
সকালে উঠে খবরের কাগজে হামলে পড়ে
খোরাক খোঁজে।
বড় বড় চোখ করে অপরাধ খোঁজে,
নতুন নতুন ধর্ষিতা দের খোঁজে।
যৌতুকের অভাবে পুড়ে যাওয়া নিথর শরীর খোঁজে
না পেলেই যেন মন কেমন করে ।

সকাল বেলা একটা ধর্ষণ কিংবা খুন কিংবা
বধু নির্যাতনের খবর না পেলে জলখাবার টা ঠিক জমে ওঠেনা।
লেখকদেরও কলম চলেনা আর পাঠক দেরও মন ভরেনা।
আড্ডাবাজ দেরও আড্ডা জমেনা।
মোটকথা দিনে একটা রসালো খবর ছাড়া বিনোদন অসম্ভব।
এই সমাজ কে প্রতিনিয়ত খোরাক জুটিয়ে
হিসেব মত অপরাধীরাও সমাজ সেবামূলক কাজেই নিজেদের ব্যাস্ত রাখে।

বৃহস্পতিবার, ২৫ অক্টোবর, ২০১৮

নিছক কল্পনা ইয়াসমীন নীলুফার



-হ্যালো...
-হুম্, বলো।
-আচ্ছা, তোমার একটা সবুজ
 শাড়ী আছে না?
-আছে।
-সে শাড়ীটা পড়ে এক্ষুণি  চলে আসো
নদীর কাছে।
-শাড়ীটা ছিঁড়ে গেছে।
-তোমার গোঁফওয়ালা দারোয়ানকে
বলো সদর দরজা খুলতে।
-কেন!
-আমি তোমার জন্য সবুজ শাড়ী
হাতে নিয়ে দাঁড়িয়ে আছি
সংগে তোমার প্রিয় বেলীফুলের মালা।
উফ্ তোমার বাসাটা এত্তো উপরে কেন!
আমার দম্ বন্ধ হয়ে যায়।
আমাদের যখন বিয়ে হবে
বাসা হবে নীচ তলায়..
আমি চড়ুই পাখির মতো ফুরুৎ
করে এসে তোমায় দেখে আবার
ফুরুৎ করে উড়ে চলে যাবো।
-আমার শাড়ী?
-এই যাহ্.. শাড়ীটাই তো কিনা হয়নি!
টাকা নেই বুঝতে পেরেছো?
তবে একটা সবুজ শাড়ী তোমার
জন্যে আনবোই আনবো।
-আর মালা?
-আরে এই ভর দুপুরে মালা পাবো কোথায়!
-আচ্ছা,এখন এসো।
-তুমি কি এখনো রেগে আছো?
-না।
অনেক বছর চলে গেলো..
সে মানুষটা আর আমার রাগ
ভাংগাতে আসে না।
কারণ,আমার কল্পনা করার
ক্ষমতাটাই হারিয়ে গেছে।

মঙ্গলবার, ২৩ অক্টোবর, ২০১৮

প্রথম দেখা ইয়াসমীন নীলুফার

প্রথম যে দিন দেখা হয়
তোমাতে আমাতে
এতো ভালবেসেছিলে
পারোনি বুঝাতে।

একটুখানি চাহনি আর
চোখের মদিরতা
কাছে এসে ভাংতে পারোনি
আমার নিরবতা।

আমি একটু লাজুক বেশী
তুমিও কি কম্
চুপি চুপি দেখছিলে তুমি
ভেবেছি আমার ভ্রম্।

আজকে যখন কাছে এলে
আমার যাবার বেলায়
সময় গুলো হারালাম হায়
আমি অবহেলায়।

সোমবার, ২২ অক্টোবর, ২০১৮

পারুল নিশার কবিতা এক হবো

ঠোঁটের কোণে হাসি থাকলে
ভালো থাকা কি বলে?
তবে এভাবেই জীবন তরী
যাচ্ছে দারুণ চলে!

উপরে মানুষ খুব সাধারণ
ভেতরে মানুষ সব পোকা
জন্ম হতে আজ অবধি
পেয়েছি কেবল ধোকা...!

সব ছেড়ে আবার একা হবো
একাকিনী নিশির মতো
হয়তো একদিন ঝরে যাবো
ঝলসানো রোদে শিশিরের মতো ---!

কবিতা আমার পাগলিটা কবি নুসরাত আক্তার শাহীন



বড্ড বেশি পাগলামী করিস তুই?
খুব বেশি খুশি হয়ে বাড়ীতে আগমন তোর!
বাড়ী থেকে হোস্টেলে যাওয়াটাই আপত্তিকর!
ওখানে আমার কেউ নেই  শুধুই পড়া আর পড়া,
এখানে আমার মা আছে! মায়ায় সব ঘেরা!
মায়ের আচঁলে সারাক্ষন তোর আনাগোনা,
মাকে ছাড়া এক মুহূর্ত তোর বাহিরে চলে না!
কখন যে এতটা বড় হয়ে গেলি রে,পাগলি,
বলতো?কিভাবে আমি তোকে আগলে রাখি?
তোর ছেলে মানুষি কিংবা আহ্লাদে আবদার,
পাঠিয়ে হোস্টেলে কান্নায় ভাসে  দু চোখ আমার!
পাগলিটা মায়ের শাড়ী পরে
মা তুমি সেজেছি,
জানো মা সবাই আমি বলে তোমার কার্বন কপি  হয়েছি!

কবিতা অপ্রেমিক কবি মনি রায় ঘোষ

কিছু প্রমিক চিরকাল অপ্রেমিক থেকে যায়
তাদের বোঝা দুষ্কর হয়ে দাঁড়ায়।
তারা নিয়মের গন্ডি পেরিয়ে নিজেদেরকে অন্য রুপে আবিষ্কার করে।
তারা প্রেমিকা কে আগলে রাখে মা এর মত।
প্রয়োজনে বাবার মত শাসন করে।
তারা বোনের মত বন্ধু হয়,
আবার ভাইয়ের মত খুনসুটি ও করে।
তারা প্রেম মানে শুধু শরীর খোঁজেনা।
তারা মন দিয়ে মন ছুঁতে পারে।
তারা সোনা মনা বাবু এসব বলে ডেকে মন ভোলাতে পারেনা।
এরা দিনে দশবার আই লাভ ইউ ও বলেনা।
এরা ভালবাসে নিজের মত করে।
তাই এরা প্রেমিকার চোখে অপ্রেমিক হয়েই থেকে যায়।

নার্সিসাস-সোমা বড়ুয়া রিমি


তুমি কি জানতে?
আমি হবো কোন নির্ঘুম রাত,
হবো জেগে থাকা বিষন্ন চাঁদ।
জানতে কি?
আমার বিশ্বাসের দেয়ালে অবিশ্বাসের দাগ,
আত্মায় আছে শতবর্ষের অভিশাপ।
কেন বললেনা--
প্রিয়ে ছেড়ে দিলাম লাজ,তুমি আমারই নার্সিসাস।
হ্যা, হ্যা তুমি আমারই নার্সিসাস সাজো,
বুঝলেনা, সেদিন ভালোবাসতে না পেরেও
কেন ভুলতে পারিনি আজো।

ইয়াসমীন নীলুফার দুটি কবিতা

খুঁজো না আমায়


আজ আমি ভুলে গেছি
ভুলে গেছি সব
বসন্তের আগমনী  আর
কোকিলের কলরব।

আজ আমি চাই না কিছু
কে দিলো দুখ আর কে দিলো সুখ
দেনা পাওনার হিসাব যতো
চাই না দেখতে ফিরে পিছু।

এই তো আছি একলা বেশ
যন্ত্রণা তোর কোথায় শুরু
কোথায়'ই বা শেষ
কাটবে কবে সব কিছুর রেশ!

কখনো যদি যাই চলে অজানার পথে
খুঁজো না আমায় মরু জল তটে
যে ফুল হারায় পথের ধূলায়
লাগে না যে তারে হায় কোনোই পূজায়।


কেন মনে পরে


কোলাহল মুখর দিনটা যখন
হয় নিরব নিস্তব্ধ
চোখের জলে বালিশ ভিজে
নির্বাক আমি স্তব্ধ।

অনেক মান আর অভিমানে আমরা দুজন দুই দিকেতে হাঁটি
আমাদের মন জ্বলে পুড়ে যায়
হয় না তবু খাঁটি।

তোমার পৃথিবী অনেক বড় আজ
শূন্য আমার মন
তোমায় কেন মনে পরে গো
আমার যখন তখন।

আমাদের মাঝে দুরত্ব অনেক
বাজে না যে সেই সুর
ভিন দেশে চলে গেলে তুমি
দূর হতে বহু দূর।

আর কখনো হবে না দেখা
তোমার আমার সনে
চোখের জলে আমরা ভিজি
সবার অলক্ষ্যে নির্জনে।

রবিবার, ২১ অক্টোবর, ২০১৮

তোমায় পাবো -ইয়াসমীন নীলুফার


এতো দিনে বুঝলাম আমি
জীবন নদীর বাঁকে
অতীত নিয়ে ভাগ্য যেনো
একটা ছবি আঁকে।

তুমি যখন পাশে ছিলে
ছিলো সুখের মেলা
এখন আমার দিবারাত্রি
ভাসায় দুঃখের ভেলা।

লিখতে গেলে কোন কিছু
লেখা হয় যে দায়
কেমন করে তোমায় ভুলি
স্মৃতি পিছন ধায়।

এমন করে বাকী জীবন
হয়তো বেঁচে রবো
এজনমে না হয়,না হোক
তোমায় পরজনমে পাবো।

শনিবার, ২০ অক্টোবর, ২০১৮

ফাহমিদা ইয়াসমিন এর এক গুচ্ছ রোমান্টিক কবিতা

স্বপ্নে আসে


মনের ঘরে চুরি করে
থাকে যে অধরা।
যায় না ছোঁয়া তার শরীরে
মিশে থাকে হাওয়ায়,
কানে কানে মধুর সুরে
মিলনের সুর শোনায়।
স্বপ্ন হয়েই থেকো প্রিয়
স্বপ্নেই দেখা দিও,
মনের গহীন থেকে
সবটুকু প্রেম নিও।


ভালবাসি তোমায়



দু'চোখে  ফুলেরা আজ
করুক হাসা হাসি
মনেতে মন সাজিয়ে
তোমায় ভালোবাসি।

কোকিলের কুহু সুরে
থাকো তুমি হৃদয়পুরে
মাতুক মাতাল মন কাননে
হৃদয়টাকে উজাড় করে।

যাবো গো দেখে
আকাশ বাঁকে হাসে কেমন শশি।


কোকিলের সুর



তোমার দিকে তাকিয়ে যখন
 থাকি
কত্ত কি যে ভাবতে আমি থাকি
ভা্নাগুলো ডানা মেলে
কত্ত কি যে বলে।
হয়তো তুমি হারিয়ে যাবে দূরে
নয়তো আমি হারাবো এক পুরে।
তবুও তুমি ভাবনি হয়ে থাকো
হৃদ মাঝারে আপর করো রেখো।
তুমি আমার কিরণ চন্দ্র তারা ভোর
তুমি আমার স্নিগ্ধ সকাল কোকিলেরি সুর।

বৃহস্পতিবার, ১৮ অক্টোবর, ২০১৮

নাজমীন মর্তুজার কবিতা আয়ত বাঁচা

ব্যথার  জলে খেয়া ভাসিয়ে
পৌঁছে গিয়েছি তোমার বুকের পারঘাটায়
গোমতী ধলেশ্বরীর বাঁধ ভেঙে
ভাঙা বেড়া কুঁড়ে ঘর হাঁকরে
মনস্তাপের গোলকধাঁধায় ।

বিকাশ গায়েন ডেকে যায়
বাঁশির সুরে
উঠে দাঁড়িয়ে পড়লাম যখন
ভাঙা আঙিনায়,
এই যে রাখলে দূরে ঠেলে
সমুহ বিনাশ মুছে,
অন্তসারহীন পৃথিবীতে ।

কেবল হোঁচট খেয়ে ইউক্যালিপটাস গাছ,
বিষণ্ণ ঝোপ ঝাড়
অযত্নে খোলা খোঁপা ।

শেষ কথা শেষ ছোঁয়া কবে যেন
ধারাপাত মনে নেই ঠিক;
আদরের মত পাগল
কেমন আছে ঠোঁট দুটো ?

ছুঁয়ে যাও জন্ম তিলক
বুকের মাঝখানে স্পর্শ ঘ্রাণে ।

ধুসর কুয়াশায় মোড়া
মনসিজে আকরিক ডুবলে
অনন্ত কুয়োর জলে ।

বুধবার, ১৭ অক্টোবর, ২০১৮

নরসিংদীর মাধবদীর আস্তানায় দুই নারী জঙ্গি আত্মসমর্পণ

নিজস্ব প্রতিবেদক:
আত্মসমর্পণ করেছেন নরসিংদীর মাধবদীর আস্তানার দুই নারী জঙ্গি। নরসিংদীর শেখেরচরের গতকাল নিহত দুই জঙ্গির সঙ্গে আত্মসমর্পণ করা ২ নারী জঙ্গির যোগাযোগ ছিল বলে  ব্রিফিং করেছে কাউন্টার টেররিজম ইউনিট। চার জঙ্গির মধ্যে তিনজনই মানারাত বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী 
উল্লেখ্য, নরসিংদীর শেখেরচরের ভগিরথপুর 'জঙ্গি আস্তানা' থেকে দু'জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। সোয়াতের অভিযানে নিহতরা নব্য জেএমবির সদস্য বলে ধারণা পুলিশের। কাউন্টার টেররিজম ইউনিট জানিয়েছে, জঙ্গিদের আত্মসমর্পণের আহ্বান জানানো হলেও সাড়া না দেয়ায় ভগিরথপুরের আস্তানায় শুরু হয় অভিযান 'গরডিয়ান নট'।
এর আগে মাধবদী ও শেখেরচরের বাড়ি দুটি ঘিরে রাখে কাউন্টার টেররিজম ইউনিট ও র‌্যাব।

রাতভর ঘিরে রাখার পর মঙ্গলবার ১২টার দিকে, নরসিংদীর মাধবদী উপজেলার গাঙপাড় এলাকার একটি ৭ তলা ভবন ও শেখেরচর উপজেলার ভগিরথপুর মাজার বাসস্ট্যান্ডের চেয়ারম্যান সড়কের ৫ তলা ভবনে অভিযান শুরু হয়। এতে অংশ নেয় পুলিশের বিশেষায়িত ইউনিট 'সোয়াত'। এসময় কয়েকটি গুলির শব্দ পাওয়া যায়।

জঙ্গি আস্তানা সন্দেহে সোমবার রাত ৯টার দিকে বাড়ি দুটি ঘিরে ফেলে কাউন্টার টেররিজম ইউনিট ও পুলিশ সদর দপ্তরের ল' ফুল ইন্টারসেপশন সেলের সদস্যরা। খবর পেয়ে তাদের সঙ্গে যোগ দেয় র‌্যাব। এরপর রাতভর বাড়ি দুটি ঘিরে রাখা হয়। ভোরে ঘটনাস্থলে পৌছায় 'সোয়াত' টিম। তাদের সঙ্গে যোগ দেয় বোমা নিষ্ক্রিয়কারী দল।পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের প্রধান মনিরুল ইসলাম বলেন, 'এখনো পুরোপুরি সার্চ করা হয়নি। তাদের ব্যাকপ্যাক, ব্যাগ এগুলোর কিছু কিছু রয়ে গেছে, যেগুলো সার্চ চলছে। বোম্ব ডিসপোজাল টিম ঢুকছে। সেটি শেষ হলে হয়তো তারপরে বলতে পারবো তবে আমাদের ধারণা এখানে কোন শিশু নেই।'

সকাল থেকে জঙ্গিদের আত্মসমর্পণের আহ্বান জানায় কাউন্টার টেররিজম ইউনিট। কিন্তু তাতে কোনো সাড়া না পাওয়ায় অভিযানের সিদ্ধান্ত নেয়া হয় বলে জানায় পুলিশ। অভিযান শুরুর আগে নিরাপত্তার স্বার্থে ভবনের অন্যান্য ফ্লাটের বাসিন্দাদের সরিয়ে নেয়া হয়। বিচ্ছিন্ন করা হয় বিদ্যুৎ ও গ্যাস সংযোগ। বাড়ি দু'টির ৫শ গজের মধ্যে জারি রয়েছে ১৪৪ ধারা।সাড়ে ১২টার দিকে শেখেরচর উপজেলার ভগিরথপুরে যান পুলিশের মহাপরিদর্শক জাবেদ পাটোয়ারি। এসময় তিনি কাউন্টার টেররিজম ইউনিট ও র‌্যাবের সঙ্গে কথা বলেন।

মাধবদী উপজেলার গাঙপাড় এলাকার ৭ তলা ভবনের মালিক আফজাল হোসেন এবং ভগিরাথপুরের পাঁচতলা ভবনের মালিক বিল্লাল হোসেন নামে এক কাপড় ব্যবসায়ী বলে জানিয়েছেন এলাকাবাসী।

মঙ্গলবার, ১৬ অক্টোবর, ২০১৮

আইরিন সুলতানা লিমা'র এক গুচ্ছ কবিতা

অপরিণামদর্শী



অতঃপর নিরুদ্দেশের পথে যাত্রা
অগত্যা গন্তব্যহীন এ যাত্রা
পথিমধ্যে থমকে দাঁড়ানো
অতঃপর আবার পথ চলা
কবিরা প্রেমবিলাসী, অপরিণামর্শী
সমাজ সংসার তুচ্ছ অতি
নিয়মের বেড়াজাল পেরিয়ে
কল্পিত স্বর্গালোকে তাদের বসবাস।

তবে সব লেখক কবি নন
মনের কবিত্বই আসল কবিসত্বা।
দু'কলম লিখলেই মেলেনা
আসল কবির পরিচয়

কত কবি কবিতা লেখে
মনের জানালায় চুপটি করে
কেউ দেখেনা, কেউ বোঝেনা
কবিযে ভাষাজ্ঞানহীন।




তুমি নেই বলে



তুমি নেই বলে
আনন্দলোকে আনন্দ নেই
জলপুকুরে সাঁতার কাটে না
সফেদ বকেরা।

তুমি নেই বলে
ধমনীতে নৃত্য হয় না,
হৃদয়ে শিহরণ জাগে না
প্রজাপতির ওড়াওড়িতে।

তুমি নেই বলে
ভোরের আলোয় ফুল ফোটে না,
পাখির ডাকে ঘুম ভাঙে না
সূর্যালোক ফিকে লাগে।

তুমি নেই বলে
রাতের জোনাকিরা আলো দেয় না
দীঘির জল ঘোলাটে লাগে
পূর্ণিমা রাত লাগে অমাবস্যা।

তুমি নেই বলে
দু'চোখ বেয়ে জল গড়ায় না
ঠোঁট দুটো তাদের বন্ধন ছিড়ে না
মৌচাকে মধু জমে না।

তুমি নেই বলে
কাশফুলেরা ছাঁই রং হয়ে গেছে
নদীর উত্তাল থেমে গেছে
দক্ষিণ হাওয়ায় মন মাতাল হয় না।

তুমি নেই বলে
বেসুরা লাগে শিল্পীর গান
যামিনীর নৃত্য যেন ব্যাঙ্গলম্ফ
বৃষ্টির শব্দ যেন কান্নার সুর।

তুমি নেই বলে
শিশিরে পা ভেজাতে ইচ্ছে করে না
ভরদুপুরে গাছের ডালে ওঠে
গান গাওয়া হয় না।

তুমি নেই বলে
শাপলা ফুলেরা নেতিয়ে পড়েছে
মালা গাঁথা হয় না এখন আর
শাপলা, বকুল ফুলে।

তুমি নেই তাই, আমি এখন
এক বিজন মরুভূমি
তপ্ত দেহ নির্জনাকায়
পড়ে আছে একা নিরালায়।



তোমাকে অভিনন্দন



তোমাকে অভিনন্দন
হে প্রিয়তম!
যদিও তুমি হাঁটো-
স্রোতের বিপরীতে
তবুও তোমায় দিলাম-
কয়েকফোঁটা জল
যেন তা তোমার
ছুয়ে যায় হৃদয়।
কয়েকফোঁটা জলে তোমায়
জানাই অভিনন্দন!

যদি না হয়-
হৃদয় ছোঁয়া,
আর কোন দিন
না হয় দেখা;
তবে আমি কেজি দরে
বেচে দেবো সেই আবেগ
যত্ন করে আমি যাহা-
জমিয়েছিলাম...
একদিনেরি মিছে কথায়।



আমি নস্টালজিয়া



বুকের ভেতরটা হটাৎ চিড়িক করে ওঠে
অঝোরে জল ঝরে প্রেমাতুর দু'নয়নে;
বিশাল শূন্যতায় ছেয়ে যায় হৃদয়তট
মনে করিয়ে দেয় আমি নস্টালজিয়া!

কত সময় হারিয়ে যায়, ঘটে কতকিছু
আমি নিশচুপ নিরালায় একা বসে;
কিছুতেই নয়নসম্মুখে  বৈপরীত্য আসেনাকো
শুধু একজনই স্বপ্নজাল বোনে নয়নজুড়ে।

শত বছর পিছিয়ে পড়ে থাকে অবুঝ মন
জানালায় ঠায় দাঁড়িয়ে প্রতীক্ষা অন্তহীন ;
প্রতিরাত জেগে চাঁদের সাথে কথোপকথন
ঝুম বৃষ্টিতে ভিজে একাকীত্বের তীব্র জ্বালা!
গোধূলী লগ্নে সুপারি বৃক্ষে তার নামাঙ্কন
নামটি মুছে গেল কিনা তা পর্যবেক্ষণ
এই যেন হয়ে উঠেছে নিত্যদিনের কর্ম
ভুল করেও তা ভুলে যাবার নয়।

একদিন তার রাজ্যপথ ভ্রমনে গিয়েছিনু
সারানিশি জেগে প্রার্থনা ছিল তার দর্শন;
অলৌকিকভাবে দেখা হলো তার রাজ্যে
সেদিনের দর্শন ভুলিনি, আমি নস্টালজিয়া!

মনি রায় ঘোষ এর অনুগল্প মধ্যেবিত্ত

মেয়েকে নিয়ে  কেনাকাটা করতে এসেছে বাবা।মেয়েটির বয়স খুব জোর দশ কি এগারো।
বাবার হাত ধরেই ঘুরছে আর এটা সেটা কিনছে।
হঠাত্ একটা মূর্তির গায়ে একটা পরানো জামা দেখে মেয়েটি ওখানেই দাড়িয়ে পরে বাবার হাত ছেড়ে।বাবা পেছন ঘুরে দেখে মেয়ে মূর্তি টার দিকে হা করে তাকিয়ে আছে।মেয়ের কাছে জিজ্ঞেস করল কিরে দাড়িয়ে পরলি যে?চল এবার আমার একটা জুতো কিনলেই কেনাকাটা মোটামুটি শেষ হবে।কিন্তু না মেয়েটি সেখান থেকে কিছুতেই নড়ছেনা।এক দৃষ্টে তাকিয়ে আছে মূর্তি টির দিকে।
বাবা আবারও জিজ্ঞেস করল কিরে কি দেখছিস হা করে,চল মা নয়ত ফিরতে দেরী হয়ে যাবে যে।
মেয়েটি আস্তে আস্তে বলল,বাবা এই জামা টা কিনে দেবে দেখ কি সুন্দর জামাটা,আমায় পড়লে খুব মানাবে।কথাটা বলে মেয়েটির চোখে একটা জিজ্ঞাসা চিন্হ ফুটে উঠল।বাবার কাছ থেকে উত্তরের প্রতীক্ষায় মেয়েটি ঘাড় উঁচু করে বাবার দিকে তাকালো।ইতিমধ্যে অন্য দোকান থেকে মেয়ের জন্য জামা জুতো কেনা হয়েছে।বাজেটও শেষ এবার শুধু নিজের জন্য একজোড়া জুতো কিনতে হবে।গতবছর ও কেনা হয়নি তার আগের বছরও না।বেশ কয়েকবছর ধরে এক জুতোতেই চলছে।সংসারের জাতাঁকলে নিজের সব চাহিদা গুলো কখন যেন চাঁপা পড়ে গেছে টেরও পায়নি।ছেলে মেয়ে স্ত্রী এদের ইচ্ছে পুরন করতে করতে নিজের ইচ্ছে অনিচ্ছের কথা আর ভাবা হয়ে ওঠেনা।
কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে বাবা হেসে বলল ঠিকআছে চল কিনে দিচ্ছি।শুনেই মেয়ে আনন্দে বাবা কে জড়িয়ে ধরলো।পুজোর সময় মেয়ে টাকে কষ্ট দিয়ে জুতো কিনতে চায়না তার মধ্যেবিত্ত বাবা।থাক এবারেও না হয় পুরোনো জুতো টা দিয়েই কাজ চালিয়ে নেয়া যাবে।পছন্দের জামা টা পেয়ে মেয়ের এই হাসি মুখ টা দেখে বাবা আবারও তার নিজের খুশির কথা বেমালুম ভুলে গেল।

শনিবার, ১৩ অক্টোবর, ২০১৮

ফাহমিদা ইয়াসমিন এর এক গুচ্ছ দেশাত্মবোধ কবিতা




 আমার বাড়ি
   

দেশের বাতাস দেশের মাটি
আপনের আপন,
স্বর্গ সুখে মন ভরে যায়
নয়তো স্বপন।
যে মাটিতে জেগে আছে
অতীত বেলার গান,
কত দিন পরে তার
নিলাম আবার ঘ্রাণ।
সাত সমুদ্র তেরো নদী
দিলাম যখন পাড়ি,
মনের মাঝে ঢেউ খেলেছে
আসব আমার বাড়ি।
আমার মাটি আমার বাড়ি
লাল সবুজের দেশ,
রক্ত মাংসে একটা নাম আমার বাংলাদেশ।


নিরাপদ সড়ক চাই
 

নিরাপদ সড়ক চাই
নিরাপদে প্রাণ
আর কিছু চাইনা
একটাই গান।
মুছে যাক হাহাকার
ঘুছে যাক কান্না,
আর কিছু চাইনা
একটাই বায়না।


দেশের কথা


দেশের কথা পড়লে মনে
চোখ ভরে যায় জলে
চোখ বুঁজে তাই দেখি মাগো
নিবিড় নিরব ছলে।

কেমন আছে মাযে আমার
আছে কি সে ভালো,
প্রবাস পাড়ে থাকি আমি
দেখি না তো আলো।

কেমন আছে স্রোতস্বিনী
মনু নদী আমার,
শিশুরাকি কাটে কাঁটে সাঁতার
তুলে জলের ছাড়।



শরতের কাশফুল
 

শরতের কাশফুলের ভীড়ে
তুমি আমি হেঁটে যাবো দূর
কোন এক ভোরের গাঁয়ে।
চলে যাবো
যেথা আছে সহজ সরল
মেঠোপথের সুর।
শরতের কুয়াশা মেখে দূর্বার
নিবিড় প্রেমে
হারাবো মোরা।
শরতের কাশফুল বনে
দেখে যাবো দু নয়নে
বিশাল আকাশ
মেখে যাবো জীবনের সুখ তারা
তোমাতে আমাতে ।

বুধবার, ১০ অক্টোবর, ২০১৮

কবি সোনাই মন্ডলের এক গুচ্ছ কবিতা



লোলিহান নারীমাংস


হাজার হাজার নারী মাংস একাকী দাঁড়িয়ে
নীল নির্জনে নিল ল্যাম্পোষ্টের নীলের অন্তরালে,
নীরবে নিভৃতে বাস ঐ ক্ষুধার রাজ্যে l

ক্ষতবিক্ষত দেহতরী সাজিয়ে কামুক প্রতীকের বনলতা
পেটের দায়ে উলঙ্গ নারী তাইতো রাজকুমারী পতিতা

কিছু বিক্ষত বুভুক্ষ পথিক অস্ত্র চালিয়ে ক্রমাগত নখরে সদন্তে,
রাতের আলেয়ায় সুখ খুঁজে চলে ওই লোলিহান স্তনবৃন্তে।

অসংখ্য নিরব অশ্রুকণা সেও নাকি রঙিন মাদকের মতো
ভাগ্যিস রঙিন
তাইতো রঙের আবরণে ঢাকা পড়ে লিপস্টিকের বিষাক্ত ক্ষত।
অশরীর বিস্তার নেই লাল লোলিহান সম্ভ্রম শূণ্য
উঁচু নিচু ঢেউ খেলানো শরীর সদাই প্রেমাগ্নিতে পূর্ণ

ভুল করে কিছু ভুল...
প্রেমাগ্নি নয়, শরীর মাঝে কামুকরস খুঁজে চলা পথিক
দিনের অন্ধকারে রুমালে চোখ চেপে রাতের আলোতে মত্ত অঙ্গ আঙিনা,
উত্থাল পাত্থাল ঘৃণ্যিত প্রেমে ভাসায় পুরুষত্বের কিনারা।

বিনিদ্র রাতের মুদ্রা সুখে বিকিয়ে পরম অনুভূতি
প্রতিনিয়ত চলছে বুনন সুশীলের বিকৃত শতাব্দি !
হাজার টাকায় বিকিয়ে বস্ত্র দেওয়ালে দেওয়ালে সম্মানিত পোস্টার,
খুদার রাজ্যে ফুঁপিয়ে কান্না নেয়নি কখনো দারিদ্রতার দায়ভার।

নষ্টা কেবল ভদ্র সমাজ বাহবায় ভরা অস্পৃশ্য ঘৃণ্য,
পেটের দায়ে সম্ভ্রম বিকিয়ে তবুও ওই নারী মাংস ধন্য।


যদি কখোনো


যদি কখনও সময় পাও একবার ছুঁয়ে দেখো শীতরাত্রি শেষের হিম ধরা শরীরটাকে 
যেখানে দীর্ঘ রাত্রির শরীরটি তোমাকে ছাপিয়ে যেতে পারে আরো স্থায়ী গহীন আঁধারে।
যা কিছু স্পর্শ নয়,অস্পর্শে ছড়িয়ে আছে আমার শত শত হিমশীতল শরীরে,
উদ্দেশ্যহীন অনিশ্চয়তার আশায় আমি না হয় থাকলাম কিছুটা নিরুদ্দেশে।
যদি কখনো ভুল করে চেয়ে থাকি তোমার অপেক্ষারত অলস মধ্যাহ্ন,
তবে শেষবারের মতন আমার বুকে এঁকো তোমার শৃঙ্খলহীন অসংলগ্ন পদ-চিহ্ন।

আমার বিশ্বাস এখনো ভাসমান বিকেলের নিরপেক্ষ রোদে
হাজার স্মৃতি নিয়ে এখনো মেঘমল্লা ঘুরে ঘুরে যায়,
তোমার অহর্নিশ ফেরার তাগিদে এখনো অপেক্ষারত দৃষ্টি
যেখানে রাস্তার দ-ুধারে অবহেলায় গজিয়ে ওঠা উদ্বাস্তু ঘাস ধূলোতে বাতাসে হয় অন্তলীন।

ঘুমকাতুর স্বপ্নগুলো আদ্র স্নিগ্ধতার বৃষ্টি শেষে অভিমান কুড়াচ্ছে হৃদপিন্ডের আনাচে-কানাচে
অসময়ের মেঘেরা বারবার জানান দেয় অলস ঘুমের পড়ন্ত বিকেলের কথা,
তাদের ভাষা বোধহয় বড়ই দুর্বোধ্য
অন্তহীন অস্পষ্ট দিনগুলি বারবার অতীতে প্রসারিত হয়ে গড়ে তোলে দূর্গম সমুদ্র।
যেখানে আদি-অন্ত নেই, আছে শুধু আনন্দনির্ঝর পরিসর।



ফেরারী মানবিকতা

মুঠো ভরা অভিনয় গুলো তর্ক জমিয়েছে রাস্তার মোড়ে
বলছে তাদের স্বপ্ন ছিঁড়েছে নাকি কোন অবেলায়,
বস্তা পচা সস্তা জীবিত ভয়ার্ত স্পর্শ গুলো
জানান দিল অগ্রিম অবক্ষয়।

ভয়টা নাকি শিরদাঁড়া বেয়ে মাটিতে নেমেছে
দুপায়ের হাঁটু মুড়ে বসে আছে মৌন পরাজয়,
প্রতিনিয়ত ভাগ্যের সাথে বোঝাপড়া শেষে
শবযাত্রী বাহীতো শবগুলোও কেমন পরাজয়ের গান গায়।

এক এক করে হারিয়ে ফেলেছি অপ্রিয় মানবিকতা আলমারি স্বরূপ কফিন গুলো বলছে নিজেকে সঁপে দাও ভাগ্যের হাতে,
ভিখারি পাগলিনী মা তো জানে না বাঁচার মানে কি?
তাইতো পাশবিকরা সুখ খোঁজে মায়ের বপুতে প্রতি রাতে।

ঘটা করে আগমনীর আবাহনে মত্ত বসুন্ধরা
চারি রাত্রির মহা ধুমধামে
পূজিতা মাটির প্রতিমাখানি,
প্রতি ঘরে ঘরে স্পর্শ জাগায় মা রুপী কপালিনী, ক্ষণদা
শূণ্য ভয়েতে আবার উঠবে জেগে অসুর নিধনকারী মানবিকতা।

সোমবার, ৮ অক্টোবর, ২০১৮

কবি সোনাই মন্ডলের গুচ্ছ কবিতা



আঁধারের কুয়াশা


শর্তহীন কিছু ভুলচুক,কিছু রজনীগন্ধার উত্তপ্ত বিষণ্ন উপহার হয়তো উদ্ভ্রান্ত জীবনশৈলী
সৃষ্টিশীলতার জন্যই এই সুদীর্ঘ জীবন রাখাটা হয়তো বড়ই জরুরী।

 রক্তের স্রোতে হেঁটে বেড়ায় এখনো তোমার কবরের বেদনাময় এপিটাফগুলোর কান্নাভেজা উপলদ্ধি,
খেই হারানো ঝাপসা কুয়াশাচ্ছন্ন ভোরের সূর্যদয় অবলোকন করা এখন শুধুই স্বপ্নবিলাসী ।

কুয়াশার দিগন্ত ছুঁয়ে অবিরাম প্রত্যক্ষকরা বেহিসাবি আদরমাখা ক্ষতচিহ্ন,
প্রহর গুনে যাওয়া শিশিরসিক্ত অশ্রু কোটরে অনুভূতিরা ক্রমশ হয়ে চলেছে জরাজীর্ণ !

 অনন্ত বসন্ত একাকী কাটিয়ে দেখা হয়নি কুয়াশাচ্ছন্ন ভোরের অপরূপ সৌন্দর্যের বৈভব্য,
প্রতি শেষরাতের স্নিগ্ধতা সমর্পিত ওই নিষ্ঠুর কবরের রজনীগন্ধা সজ্জায়,
গোলাপের ক্ল্যারিওনেট করেছি সংকীর্ণ ।



অন্তর্দহন
                       

অনু থেকে অনুপম সবই হৃদয় রাঙায় পোড়ামাটির রঙে,
যেখানে পরিত্রাণের নিঃশব্দ নির্মাণ খুঁজে ফেরে নিগূঢ়তম আস্বাদনে।
মোহের মধুরমধুরং ডাক দেয় প্রতিমুহূর্তে মৌনতার দিকে,
কোমল মৌন অন্তর হেঁটে চলে ভালোবাসার মাত্রাহীন মাপের সুখে ।
স্বপ্ন সৃষ্টির প্রেক্ষাপটে চির তৃষ্ণার্ত অন্তরের এ কোন অলীক কায়া ?
সুস্পষ্ট সর্বাঙ্গীণ মধুরিপু যেন মৌ-এর অন্তরের আলেয়ার মায়াখেলা।
নব প্রেমিকের পুনর্বাসন এর স্রোতে ভিজিয়ে যায় মেদুর মেঘমালা,
জোড়া বুকের নিঃশ্বাসে খেলেছিল যে দুর্লভ প্রজাপতি সৃষ্টির বেলা !
অন্তর জানলার স্থানাঙ্ক নির্মাণে হয়নি দেখা শিশির বাঁধানো জ্যোৎস্নার সুখ,
হৃদয় উপকূলে দাঁড়িয়ে একা,ঢেউ তুলে যায় তোমার অস্থির মুখ।
জ্যোৎস্নার বিরাট রুপালি সমুদ্রে হারিয়েছি গুপ্ত আশ্চর্যের খেলাঘর,
জানালার ভাঁজে ভাঁজে ঢুকে গেছে আজ মহাশূন্যের বিরল ঝড় ।
তোমার হৃদয় অলিন্দে আমার বসত ছিল সময়প্রকীর্ণ এক শূণ্যে,
অন্ধিসন্ধির দায়ভার টুকু বিরাজিত আজ তোমার পক্ষাঘাতের অরণ্যে।
ক্রমে ক্রমে রক্তক্ষরণ গুলি সব শুকিয়ে বেধেছে জমাট স্মৃতি,
বৈপরীত্যের অনুরেখায় আজ আমরা দুজন গভীর অভিনিবেশের চক্ষুঃশ্রবা গীতি।
অন্তর্দহনের আবহাওয়া আজ সন্তর্পণে সমর্পিত নির্জন স্থির নিশ্চুপে,
ছোট ছোট ক্রমজিজ্ঞাসা ভালবাসাগুলি স্থান পেয়েছে নাতিদীর্ঘ গাণিতিক মাপজোকে।

পরকীয়া প্রেম

না জাতি, না রং, না বর্ণ, না বয়সের অবসর,
বুকের পাঁজরে পরকীয়া তোলে প্রেমের উন্মত্ত ঝড়।

হৃদয়ে হৃদয়ে ওঠে প্রেমের তীব্র উষ্ণতা,
ঠোঁটে ঠোঁটে ওঠে বিষাক্ত হেমলকের মধুর ছোঁয়া।

প্রেমের বিষময় বাতাস ছুঁয়ে ছুঁয়ে বহুদূর,
 নিঃশব্দে অঙ্গে অঙ্গে রোমে রোমে ভাসে গভীর প্রেমের রোদ্দুর।

এ যে শুধুই প্রেমের পরশ, নয় প্রাণের ছলন
পরকীয়া মানে পূর্ণ প্রেমের অবৈধ আকর্ষণ।

টানাপোড়েনের এক বিষাদ যন্ত্রণা হাজার লুকানো দুখ,
নীরবে নিভৃতে সয়ে যাওয়া প্রেমের অকৃত্রিম নিষিদ্ধ সুখ ।

দুশ্চরিত্রা আখ্যায় নারী, এ যে উদাসী দখিন হাওয়া
অস্থিহীনতায় জিজ্ঞাসাচিহ্ণ ,সেমিকোলন ,দাড়ি, কমা

পরিপূর্ণ রেখায় , রঙে মনের  উচাটন
হাজার প্রতিলিপিতে প্রেম ফিরে পায় নতুন এক প্রাণ।

মনের কিনারা বেয়ে একটি মুচকি ঠোঁটের রেখা,
আলো আঁধারির দেওয়াল জুড়ে অসীম শূন্যতা আঁকা ।

পরিস্রুত জীবনের সুখ-দুঃখের অসীম পরিতাপ
পরকীয়া রেখে যায় অভ্রভেদী
প্রলয়ের মুহুর্মুহু প্রতিছাপ।

রবিবার, ৭ অক্টোবর, ২০১৮

বঙ্গবন্ধুকে নিবেদিত কবি পারুল নিশা'র এক গুচ্ছ কবিতা

ষোলো কোটি কাতর হিয়া


অথৈ সাগরে কতোই ডুবেছে
 ক্ষুধা বঞ্চনায় দরিদ্রতা
সব পার করেছো তোমার নায়ে।
হাবুডুবু খাওয়া বাঙ্গালি যতো
জীবন স্রোতে বান ভাসি,
বিশ্ব দুয়ারে জয়ের জোয়ারে বাংলা ভাষি।
বঞ্চিত মানুষের সঞ্চিত যতো বেদনা আহ্বান,
সব ব‍্যথা বুকে নিয়ে জুড়ায়েছে
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ।
মুজিব মানে একটি ,আদর্শ একটি দেশ
সবুজের বুক চিরে সূর্য্য ওঠা বেশ।
একটি পতাকা তোমারি কথা কয়।
যতো নদী আর যতো প্রান,
গায় তোমারি জয় গান।
ওই রূপসা থেকে পাথুরিয়া,
আজো খুঁজে ফেরে তোমায়
অশ্রুর ফোঁটায় ফোঁটায় ষোলো কোটি কাতর হিয়া ।



ফিরে পেতে আগামী


শুধু তোমার বাণী আর বিষাদ খানি,
সাথে লয়ে আছি আজো,
এখনো তুমি স্বপ্ন হয়ে মরমরে শুধু বাজো।
হারালাম তোমায় রক্ত নেশা
ঘাতকের গুলিতে ,
বার বার তুমি এসো ফিরে
বাংলা মায়ের কোলে
নবজাতকের হাসিতে ।
স্বাধ যা ছিল তোমায় রাখার ধরে,
সাধ্য দিলনা তোমায় রাখতে মোরে।
তাই সেদিনের মত আজো আকাশ গুমরে কাঁদে,
বিষাদের কি স্বাদে তোমায় হারালাম,
আবার ফিরে পাবো বলে।
দেশ মাতৃকার সেদিনের দরিদ্র গণতন্ত্রের ভীড়ে তোমায় হারালাম
কথা ছিল আবার আসবে ফিরে ,
তাই হাত বাড়ালাম
ফিরে পেতে আগামী ।


কি হারালো জাতি...


আগস্টের সন্ধ্যাগুলো গুমরে কাঁদে,
আজো রাত্রি কি ভোর
কালক্ষেপনের সময়গুলো কান্নায় বিভোর !
এখনো রক্ত ছাপিয়ে
কি ব্যথা চাপিয়ে ...
বাংলার সবুজ ঘাসে
ধূসর সে চলার পথ !
মরা ঘাসের চারপাশে,
ফুল ফোটে না শুধু কান্না
যার পিছনের রথ ।
কি হারালো জাতি;
চলার গতি
লাভ না ক্ষতি ?
যেতে যেতে অনেকটা পথ,
উল্টো যেন দেশের দুদিকের চলার রথ।
সম্মোহিতে মহিত মন
ভুলের স্রোতে অবগাহন!



সাহস টুকু কেড়না !



এক আকাশ কান্না চেয়ে পাঠালাম,
সব হারানো শোক !
কাঁদলো যত পাহাড় সাগর,
গাছ,ফুল, নদী আর স্বজন হারা লোক !
কাঁদলো বসে বাঁধভাঙা সব
ব্যথার তীরে ঢেউ !
কাঁদলো বাঙ্গালী দুঃখ শোকে
বিশ্ব জুড়ে সব ।
কাঁদবো আমি, কাঁদবে তুমি
পনেরো আগস্ট এলে ।
পিতৃহারা শোকে গুমরে কাঁদে
ষোলোকোটি প্রাণে  ।
কান্না শব্দে আকাশ ভারি
কান্না নয়ন জুড়ে,
কান্না বয়ে সাগর হয়ে
বাঙ্গালী শোকের কথা বলে ।
কান্না ভুলে জাগবে জাতি
নতুন প্রেরণায় ,
সব নিয়ে যাও;
সবুজ বাংলাদেশ গড়ার
সাহস টুকু কেড়না ।


এঞ্জেল নিপা'র কবিতা যার জন্য




আজকে মনে খুশির নাচন
সে এসেছে ফিরে,
ঘৃণাটুকুন ভুলে গিয়ে আজ
ফিরেছে প্রেমের নীড়ে।

যাকে ছাড়া আমি ভাবি না কিছু
যার জন্য বেঁচে থাকা,
যার জন্য এই হৃদয়ের মাঝে
প্রেম শুধু প্রেম রাখা।
যার বিহনে আমার আমিকে
অামি না পাই খুঁজে,
সকাল দুপুর বিকাল রাত্রিতে
যাকে শুধু মন বুঝে।

যার মুখের ঐ মুচিকি হাসিতে
স্বর্গ দেখে যাই,
যার ছোঁয়াতে এই অঙ্গে আমার
সুখের নৌকা বায়।

সে এসেছে ফিরে আজিকে
আমার হৃদয় মাঝে,
তাই দুঃখ ভুলেছি ছিল যত
এখন সুখের সাজে।

শুক্রবার, ৫ অক্টোবর, ২০১৮

নরসিংদীতে উন্নয়ন মেলার উদ্বোধন

জহিরুল ইসলাম,নরসিংদী:

সারাদেশের ন্যায় নরসিংদীতে বর্ণাঢ্য আয়োজনের মধ্য দিয়ে উন্নয়ন মেলার উদ্বোধন করা হয়েছে। উপলক্ষে বৃহস্পতিবার সকালে নরসিংদী জেলা স্টেডিয়াম থেকে এক বর্ণাঢ্য র‌্যালী জেলা শিল্পকলা একাডেমীতে গিয়ে শেষ হয়।পরে শিল্পকলা একাডেমীতে প্রধানমন্ত্রীর ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সারা দেশে উন্নয়ন মেলার উদ্বোধন করা হয়। পরে অর্থ মন্ত্রনালয়ের সচিব মো. মফিজুল ইসলাম ও নরসিংদী জেলা প্রশাসক সৈয়দা ফারহানা কাউনাইন বেলুন উড়িয়ে মেলার উদ্বোধন ঘোষনা করেন। পরে মেলার বিভিন্ন স্টল পরিদর্শন করেন অতিথিগণ। 
এসময় জেলার পুলিশ সুপার সাইফুল্লাহ আল মামুন, সিভিল সার্জন হেলাল উদ্দিন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মো. সাইফুল ইসলাম, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) আব্দুল আউয়াল, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সুষমা সুলতানাসহ অন্যান্য কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।

কবি পারুল নূর এ নিশা'র গুচ্ছ কবিতা



নিঃসঙ্গতার অনুষঙ্গ


নিঃসঙ্গ জীবনের অনুষঙ্গ একাকিত্ব
দেহ আর চিত্ত;
জীবন নিজেই একটা দোতারা।
কখনো প্রজ্জ্বলিত কখনো আঁধারময়
কিছু বিরহের গান কিছু পিছুটান,
হৃদের তানপুরা আর সেতারে একাকীত্বের
সব সুর রটে যায় হৃদের বেতারে ।
নিমগ্ন মন যখন একাকীত্বে ডুবে তখন,
স্বপ্নেরা সাথি হারা।
দুঃসময় প্রাচীর ঘিরে একাকীত্ব বুক চিরে।
আকাশে বাতাসে গোপনে কি প্রকাশে
সব ছন্নছারা, ছন্দহারা।
রাতের আকাশ পানে তাকালাম দেখি
চন্দ্রাটাও  সাথী হারা,
তাই দেখে হাসছে মিটি মিটি ধ্রুবতারা।
দিবসের সূর্য্য ও একলা দিশেহারা,
বিরহের যন্ত্রণার রোদ্দুরে পোড়ায় চারধারা।
আমার একাকীত্ব সময় ভুলে থাকা তোমায়
মর মরে ব‍্যথা জাগে দুর্নিবার
বিষাদের হাওয়ায় উড়ে চলা
শুকনো পাতার।
নিদ্রাহীন দুটিচোখে ভেসে ওঠে বার বার ;
সেদিনের সেই অকারণ...!
আজ দোলা দিচ্ছে যে বিচ্ছেদের জাগরণ ।




মুজিব বাংলার চিরদিনের



একটি আধার জাতির ভবিষ্যত,
ঘুমের ঘোরে বিভোরে স্বপ্ন দেখতে  ঘাত প্রতিঘাত।
সময় তোমায় অপেক্ষায় হারালো,
বিবেক বিশ্বাসে বঙ্গবন্ধু।
বিশ্বাস নদীর এপার ওপারে,
পারাপারে ঠাই নাই মধ্য পথে ডাকাতি,
চাঁরিদিকে বাঁচাও বাঁচাও চিৎকারে এখনো কাঁদে জাতি।
অবক্ষয়ের দূর্গতি।
বড় অপ্রস্তুত কাঁচা হাতে তুলে দিলে স্বাধীনতা মুজিবইতো,
আজ যে প্রানের সঞ্চার উজ্জ্ববিত
সেই ছিলো তোমার অহংকার,
আবার পুত্র হয়ে এসো পিতা,
কাধে পিঠে চড়িয়ে শোধ দেব
সে দিনের ঋনের।
আজন্ম বাংলার তুমি,
তোমার বাংলা চিরদিনের।
তুমি ছাড়া এঠো হাতে ঘেটে ফেলে,
সেই স্বাধীনতা,
ফিকে হতে শিখে গেছে
মায়ের সবুজ শাড়ি লাল টিপে টিপে মোড়া।
সম্ভ্রম ঢাকা বড় দায়,
তোমাকে হারানো পথে ফিরে ফিরে চায়।
বাংলার মা আজো,
আর একবার বজ্র কন্ঠ লয়ে বাজো।


উৎপিড়িত



অমিমাংসিত মাংসাশী জীব
হয়ে ওঠে মানুষ যখন ;
উজ্জিবিত  ধাবিত কেবল ।
হিংসার দুশ্চরিত্র চরিতার্থ করে ভক্ষণ
বিশ্বায়নের যুগে  দূর্গন্ধ ছড়ায়
কুসংস্কার বাতাসে।
আদি হিংস্রতা লোভ লালসা হানাহানি
কি হবে পরিচ্ছদে অপরিচ্ছন্নতা ঢেকে সমাজ।
অবিরাম বেড়ে চলছে সভ্যতা নামে
অসভ্যতা নাগ পাশ।
শিশু-নারীর প্রতি বৈরী,
কবে হবে তৈরী
সভ্য সমাজ ।
শোভা বর্ধনের আসবাব
নারীর প্রতি সদভাব।
চাকচিক্যময় খেলনা ভেবে নারী ,শিশু
ছুড়ে ফেলার এ কেমন মনোভাব !
মানসিকতা বিবেকের দায় ভার
অসহায় নিপিড়িত নির্যাতনের বেড়া জাল,
উৎপিড়িত হবে আর কতো কাল ?



জগৎ-জয়ী-নারী



চার দেয়ালে, মনের বেখেয়ালে
অন্তরের যন্ত্র বাজিয়ে,
নিরাশার সুরে গেয়েছ নিরন্তর।
নতুনের জাগরণে জাগো হে জননী,
ভগ্নি, জায়া প্রভাত করো পোহায়ে জীবনের রজনী।
বোরখার আবডালে শুধু সান্ত্বনা
আর মনের বিপরীত ইচ্ছার প্রবঞ্চনা !
তোমার ভালোবাসার কোমল ছোঁয়াতে জেগেছে,
সব পাষাণের সান্ত্বনা। বাহুডোরে বাঁধা
প্রেমের তৃষ্ণা মেটানো বীর,
রণাঙ্গনের জন্যে সাজিয়ে
মনে বিহবলতা বাজিয়ে
পাঠাও বীরাঙ্গনা।
মনের অঙ্গনে ব্যথার চিত্তে
চিতা সাজিয়ে দিতে, হও তুমি সুকঠিন।




এই পৃথিবী তোমার-আমার 
           



এই পৃথিবী তোমার-আমার
ভালোলাগার ভালোবাসার
হাজার রকম যুদ্ধ শেষে
কাঙ্খিত ক্ষণ কাছে আসার ।

এই পৃথিবী  তোমার-আমার
লক্ষ তারার আকাশ দেখার
বাতাস থেকে সুর নিয়ে
সমারোহে কীর্তন শেখার।

এই পৃথিবী তোমার-আমার
বন-বাদাড়ে ঘুরে বেড়ার
জীবন মাঝির নৌকো টানে
মান শেষে ঘরে ফেরার।

এই পৃথিবী তোমার-আমার
ছোট্ট একটি সংসার গড়ার
সেই সংসারে জন্ম নেবে
অভিনব সব কাব্য-ছড়ার।

এই পৃথিবী তোমার-আমার
সুখ সাগরে সাঁতার কাটার
সাঁতার শেষে পাতাল থেকে
ডুব মেরে মুক্তা আনার।

এই পৃথিবী তোমার-আমার
পরাজয় ভুলে যাওয়ার
ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে
বৃহৎ কিছু কাছে পাওয়ার।

এই পৃথিবী তোমার-আমার
স্বপ্ন গড়ার স্বপ্ন ভাঙ্গার
টুকরো টুকরো স্বপ্ন গুলো
জরিয়ে নতুন পৃথিবী গড়ার ।

এই পৃথিবী তোমার-আমার
ভালোবাসার অটুট বিশ্বাস
সেই বিশ্বাসে আমি তোমার
তুমি কেবল শুধুই আমার ।


বুধবার, ৩ অক্টোবর, ২০১৮

শামীমা সুলতানা'র এক গুচ্ছ কবিতা



কষ্টের ছুটি



গিয়েছিলাম তোমার কাছে মেঘের পালকী চড়ে,
অঝোর ধারায় ঝরেছি আমি শ্রাবণের বারি হয়ে,
দাওনি তুমি হৃদয় দ্বারের একটি কপাটও খুলে।
খুলেছিলে দ্বার গগণ পানে,
ভেবেছিলে বুঝি যাবো না সেখানে ?
আমি যে অধম!
গগনেও তাই চেয়েছি নিতে ঠাই ,
আত্ম আড়াল করেছিলে সেদিন
পাইনি খুঁজে তাই।
ফিরেছো আজ!
মেঘলা আকাশ থমথমে চারিদিক ...
আউলা হাওয়ায় ভেঙেছে কুঁড়েঘর,
হয়েছো তুমি খানিকটা পর।
হাজারো শঙ্কা আর অনুতাপে তুমি
আজ করেছো হৃদয় ভার।
দুঃখের তটিনী...
দুর্বার গতিতে দুঃখকে দিয়েছি ছুটি,
সুখের দ্বারে আমি দিয়েছি হানা,
সুখের সাথেই আজ বেঁধেছি জুটি।
সব ভুলে তাই...
তোমাকেও আজ নিতে হবে যে ছুটি !


মাতৃভূমি


মাগো আমি তোমার আরো কদর দেখতে চাই,
লাল সবুজ পতাকার যেন আরো ঊর্ধ্বে হয় ঠাই,
স্বাধীন ভূমিতে স্বাধীনতার স্বাদ সবটুকুই যেন পাই।
তোমাকে রক্ষার শপথ নিয়ে রাজপথে নেমেছিলো যারা,
অনেকেই আজ নাই।
আকাশে বাতাসে শহীদ ভাইদের রক্তের ঘ্রান পাই,
ছেলেহারা মায়ের ক্রন্দনের আওয়াজ আজও শুনতে পাই,
স্বাধীন ভূমিতে এখনো সবাই কেন স্বাধীন নাই !
মাগো তোমার স্বাধীনতার সবটুকু তবে কই ?
লজ্জা,কষ্ট,ঘৃনায় তোমাকে সুধাই,
স্বাধীনতার সুখ না পেয়ে আজ তোমাকে জানাই,
খুঁজে দেখো কত সন্তান আজ বিদেশে নিয়েছে ঠাই।
জালেমেরা জুলুম করে বসতি করেছে কত,
হিসেব যে তার নাই।
কত সন্তান ফুটপাতে ঘুরে মাথা গোঁজার নাই ঠাই,
কত মেধাবী মাথা ঠুকে মরে কোন মুল্য যে তার নাই,
মাথামোটা কত উচ্চ আসনে কিনে নিয়েছে ঠাই।
খোলা ময়দানে, ব্যাস্ত রাস্তায় কত খুনের খবর পাই,
স্বাধীন ভূমি, তবু প্রতিবাদের ভাষা কেন নাই ?
স্বাধীনতার সঠিক প্রয়োগ চাই।
তোমায় যদি সঠিক না দেখে যাই,
পরবর্তী প্রজন্মের হবে কোন ঠিকানায় ঠাই ?
তাইতো শান্তি চাই শান্তি,যার কোন বিকল্প নাই।


ভালোবাসায় ফরমালিন


রহিম উদ্দিন !
বয়স তার সত্তর এখনো পরিপাটি,
নিজেকে ভাবে সে নিরন্তর খাঁটি।

স্কুল জীবনের রহিমাকে আজো বলে
ভালোবাসি তোমায়।
কলেজ জীবনের লাইজু সেও জানে
শুধুই ভালোবাসে আমায়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের নিলুর ভালোবাসা !
সেতো রহিম উদ্দিনই ভরসা।
অর্ধাঙ্গিনী জায়েদা গর্ব করে বলে
ভালোবাসায় হৃদয় যায় গলে।

সবাইকেই বলে সে... 
তুমি হীনা কে আছে আমার ?
তুমি আমার জান তুমিই আমার প্রান!
তুমি ছাড়া বৃথা এ জীবন!

সবার অবস্থা এখন...
আলাদা সংসারে ভালোবাসার অভিনয়, 
শরীর স্পষ্ট কিন্তু হৃদয় অন্যের রয়,
সুখপাখীটা সবার এখন লাট সাহেবের কব্জায় ।

এ প্রেম যেন ফরমালিন যুক্ত
বাহিরে লাট সাহেব ভিতরে তিক্ত

রহিমা, লাইজু, নিলুর ভালোবাসা
জায়েদা সেতো বেঁচে থাকার আশা।

আজকের যা কিছু ফরমালিন যুক্ত
বিজ্ঞানীরা ধার করেছেন রহিম উদ্দিনের সূত্র।

এঞ্জেল নিপা'র এক গুচ্ছ কবিতা




 নারী সত্ত্বা



নারী সুহাসিনী নারী মহীয়সী
নারী মমতার পথ,
নারী সাহসীনি নারী পুষ্পশশী
যুদ্ধ জয়ের রথ।

একটি নারী একটি পৃথিবী
মিলেমিশে একাকার,
নারী সত্ত্বায় প্রশান্তি যেমন
তেমনই হাহাকার।

নারী মানে মায়ের রূপে
ঈশ্বর আসা ভবে,
নারী প্রেমে বাগান সৃষ্টি
ক্রোধে ধবংস তবে।

নারী মা, নারী বোন,
নারী প্রেয়সী রূপে,
নারী ফুল, নারী যোদ্ধা
জীবন নামের ঝোপে।

নারী কবির লেখার প্রেরণা
নারী বুদ্ধিমত্ত্বা।
কবিতার মাঝে খুঁজে পাবে
হাজার নারীসত্ত্বা।



শরীর সাজাই-



নিমগ্ন মন চুরি যায় সারাক্ষন,
জীবন জুয়ায় বাজি ধরে।
অহেতুক মিথ্যে আলাপনে প্রলুব্ধ ,
জীবনকে করে তোলে কৌতুক।

যে যার মত নিঃসংকোচে বলে যায়।
নির্বোধ আমিত্বের দায় ভার কাঁধে তুলে,
হিংসার ফাঁদে।
খোলা আকাশের কাছে স্বপ্ন গুলো
দাও দেখো কত রঙে  খেলে।

বৈরী বাতাসের কাছে সপে দাও আঁচল,
টেনে তোলে করে নাজেহাল।
উন্মাদ শরীর দেখো তোমার চোখের
কি জিজ্ঞাসায়।

তারায় তারায় খচিত স্বপ্ন গুলো,
জ্যোৎস্নার আলোর বিলাসিতায় রচিত।
এখনো বসে আছি কাব্য কথায় ধ্রুপদী
চেতনা বহির্ভূত সন্দিহান।

সমাজের কাছে পরাভুত,
আমার ইচ্ছার দায় ভার।
এ পুরুষ শাষিত সমাজে,নিজেকে করে তুলে
ক্রিতদাসী, আপন জীবন প্রবাহে উদাসী।

এখনো আমি স্বপ্ন কুড়াই,
অন্যের ইচ্ছার আধুলিতে,
ছুড়ে ফেলে আমার ভিক্ষার থালাতে।
অন্যোর ইচ্ছায়  শরীর সাজাই রূপবতী।


তুমি আছো বলে আমি


হাত বাড়িয়ে দাও
আমি তোমার কাছে যাবো,
আঁখি পল্লবে এঁকেছি মেঠোপথ
গোধুলীর আলোয় ধুলোমাখা আলতা
রাঙা পায়ে নুপুর পরিবেষ্টিত
ভালোবাসার সীমানা ছুঁয়ে দেবো কাছে এসে,
তুমি যতো দূরেই থাকো না কেন
 তোমার কাছে যাবোই ।
-
নীরবে জাগরণে প্রকাশ্য গোপনে
ক্ষতবিক্ষত হৃদয় আমার
প্রতীক্ষার তিন প্রহর সময় পেরিয়ে
পৌঁছে গেছে তোমার তুমিতে,
তাই আমি এখন তুমি হয়ে গেছি ।
কেন দূরে থাকো, হুম ?
বাড়িয়ে দাও হাত,
আমি তোমার কাছে যাবো।
-
সূর্যের জ্যোতির মতো অবিকৃত উদ্ভাসিত প্রেম
ধ্বনিত সেতারার আলোর বলয়ে
 স্বপ্ন বুনি,
আমার ভিতরেও একটা আকাশ আছে
যা জগৎকে জিঙ্গেস করে জেনে নিয়েছি
 প্রাক্কালেই,
প্রেম আছে বলেইতো পৃথিবী আছে
যেমন তুমি আছো বলে আমি আছি চিন্ময় ।
হ্যালো প্রিয় ,শুনতে পাচ্ছো?
হাত বাড়িয়ে দাও
আমি তোমার কাছে যাবো।।

সোমবার, ১ অক্টোবর, ২০১৮

কবিতা দ্বিধা কবি এম তাহের খান


আমাকে ছোঁতেই তোমার যত দ্বিধা
অথচ তোমার দালান ঘেষে পথটাকে দেখো প্রতিটা অপরাহ্নে তার বুক ছুঁয়ে যায় তোমার পদযুগল।
আমার চুমুতেই শুধু বাড়ে সংক্রমণ,
অথচ তোমার বালিশটা প্রতি মধ্যরাতেই তোমার উষ্ট অধরের চুমু পাই।
আমার কাছে আসলেই তোমার নির্মেঘ মুখ থেকে ঝরে কঠিন বজ্রপাত।
অথচ তোমার আয়নাকে দেখো সে জমা রেখেছে তোমার অযুত লক্ষ হাসি।
আমি জড়ালেই রুদ্ধ হয়ে আসে তোমার ঘন দীর্ঘশ্বাস।
অথচ তোমার পরনে নীল শাড়িটাকে দেখো সে জড়িয়ে আছে তোমার সর্বাঙ্গে।

পরকীয়া - কবি মনি রায় ঘোষ এর কবিতা



এক শরীর থেকে অন্য শরীর
নারী পুরুষের অবাধ বিচরণ।
প্রেম থাকুক বা না থাকুক
শরীরী চাহিদা ভীষণ রকম।
কেউ তো আবার জ্বালা মেটাতে
সংসার ও ত্যাগকরে।
হারিয়ে যায় একটু একটু করে
অচেনা অন্ধকারে।
রাধাকৃষ্ণ পারে যদি আমরা কেন নয়?
তাদের প্রেমেরদোহাই দিয়ে মন শান্ত হয় ।
কেউ কি জানে তাদের মনে ছিলনা কোন কাম।
মূর্খ যারা দিয়েছে তারা পরকীয়া নাম।
বৈধতার নাম নিয়ে কামনার হয় জয়।
প্রেম ভালবাসার মৃত্যু ঘটে পরিনতি শুধুই ক্ষয়।

সোমবার, ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৮

ছোট গল্প -তুমি আমার আপন মানুষ যে..



লেখক-:
জাকওয়ান হুসাইন

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের দুপুরটা আজ কেমন যেন বিষন্নতায় ভরা। সময় যেন থমকে দাঁড়িয়েছে। সকাল থেকে বেশ কয়েকটা লাশ এসেছে এ পর্যন্ত। চারদিকে অসংখ্য পুলিশ আইনশৃংখলা বাহিনীর সদস্যরা সতর্ক অবস্থান নিয়েছে। বিভিন্ন রাজনৈতিক ইস্যুতে সকাল থেকেই রাস্তায় ছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা। সরকারের অগনতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে রাজপথে নেমে এসেছিল অসংখ্য ছাত্র তরুণ। মিছিলে পুলিশের হামলায় নিহত হয় অনেকেই। ফরেনসিক বিভাগের প্রধান ডা. সুদীপ্ত শাহরিয়ার  সকাল থেকে ব্যস্ত লাশগুলোর পোষ্ট মর্টেম করা নিয়ে। আজ তার মন ভাল নেই। তার দীর্ঘ চিকিৎসক জীবনে বহু লাশের পোষ্টমর্টেম করেছেন। একটুও খারাপ লাগেনি। কিন্তু আজ তার নিপুন অভ্যস্ত হাতটা কেন যেন কাপছিল এই তরুণদের শরীরের ছুড়ি কাচি চালাতে। ৬টা লাশের পোষ্টমর্টেম শেষ করে ৭ নম্বরটার কাছে যেতেই প্যান্টের পকেটে অর্ধেক বের হয়ে আসা একটা মানিব্যাগ দেখতে পায়। অ্যাটেনডেন্টকে দেয়ার জন্য মানিব্যাগ তুলতেই একটা সাদা কাগজ দেখতে পায় মানিব্যাগে। কৌতুহলবশত কাগজটা খুলতেই বুঝতে পারে এটা একটা চিঠি। মনে পড়ে যায় আবু জাফর ওবায়দুল্লাহর সেই বিখ্যাত কবিতার কথা। এক ভাষা শহীদের পকেটে পাওয়া মায়ের কাছে লেখা সেই রক্তে ভেজা চিঠিটার কথা। কৌতুহল বেশ ভালই পেয়ে বসে ডা.সুদীপ্ত শাহরিয়ারকে। পকেটে রেখে দেয় চিঠিটা। পোষ্টমর্টেম শেষ হতে হতে রাত হয়ে যায়। সংশ্লিষ্ট সব কাজ শেষ করে যখন বাসায় ফেরে তখন মাঝরাত।  কোন রকম ফ্রেশ হয়ে ব্যালকনিতে গিয়ে বেতের চেয়ারে বসে পড়ে চিঠিটি পড়ার জন্য। এখন কৃষ্ণপক্ষ চলছে। আকাশে চাঁদ নেই। আছে অগুনতি তারকারাজি। ব্যালকুনিতে বসতেই জোরে একটা দমকা হাওয়া ভেসে আসলো। বৃষ্টিও আরম্ভ হয়ে প্রায় সাথে সাথেই। ব্যালকনিতে টবে লাগানো হাস্নাহেনা গাছ থেকে মাতাল করা সুবাস আসছে। ডা.সুদীপ্ত অচেনা সেই যুবকের চিঠিটা পড়ার জন্য চোখের সামনে মেলে ধরে। পড়তে শুরু করে চিঠির লেখা…..
প্রিয়তমা, ভাল আছ কি না জানি না। তবে ভাল থেকো এই প্রার্থনাই সবসময় করি। তোমাকে আবারও চিঠি লেখবার ইচ্ছে হলো। জানি এই চিঠিটাও তোমার কাছে পৌছবে না। আমি পৌছানোর কোন চেষ্টাই করবো না। মানিব্যাগে রেখে দেব। বরাবরের মতো আবার কিছুদিন পর টুকরো টুকরো করে ছিড়ে ফেলবো। তোমাকে চিঠি লেখা আর ছিড়ে ফেলা এক অদ্ভুত খেলা আমার কাছে। এবার কিন্তু অনেকদিন পর চিঠি লিখছি। কোন একটা কাজে পল্টনে এসেছিলাম। ফেরার পথে শাহবাগের কাছে আসতেই ঝুম বৃষ্টি শুরু হয়ে গেল। বৃষ্টিতে আমার বড্ড তোমার কথা মনে পড়ে। তাই পরিবাগের একটা বারে চলে আসলাম। এখানে বসেই চিঠিটা লিখছি। আলো আধারের ছায়া আর সিগারেটের ধোয়ায় একটা অপার্থিব পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে কামরাটায়। দীর্ঘদিনের পরিচিত ওয়েটারের কাছে যখন কাগজ আর কলম চাইলাম সে বেশ অবাকই হলো। বারে এসে সচরাচর কেউ কাগজ কলমের খোঁজ করে না। তার তো অবাকই হবার কথা। যাইহোক,হুইস্কির সাথে বেনসন সিগারেট সবসময়ই স্বর্গীয় সুখ অনুভব করায়। তুমি যদি চিঠিটা কখনো পড়তে বেশ অবাকই হতে তাই না? আমি তো তোমার ভয়ে সিগারেটও খেতাম না। কিরকম একটা হাস্যকর ব্যাপার ছিল বলো তো? কি ভয়টাই না পেতাম তোমায়। চির অগোছালো আমি তোমার ভয়ে তোমার করে দেয়া রুটিন মাফিক চলতাম। রাতের প্রথম প্রহরে ঘুমোতে যাওয়া,ভোরে ওঠা সহ সব কাজ রুটিন ধরে ধরে করার অভ্যাস করিয়ে দিয়েছিলে। বেশ ভালই লাগতো কিন্তু। আর এখন দেখো! কতটা বদলে গেছি। তুমিই তো বলেছিলে, তোমার বিকল্প খুজে নিতে। বিশ্বাস করো অ্যালকোহল,নিকোটিন আর নির্ঘুম প্রত্যেকটি রাতের চাইতে ভাল কোন বিকল্প পাইনি  আমি। তোমার বিকল্প হিসেবে এসব কিন্তু খুব একটা খারাপ না! আমাকে বেশ ভালই বাঁচিয়ে রেখেছে।
সূর্য কতবার উদিত হয়ে পশ্চিমে অস্ত গিয়েছে,চাঁদ তার মাসিক সফর শেষ করেছে অসংখ্যবার,লাখোবার ভোরের আলোয় আত্মগোপন করেছে রাতের অন্ধকারে দীপ্তি ছড়ানো সিতারার দল। কত লক্ষ মূহুর্ত পার হয়ে গেছে তোমাকে না দেখার। তবুও তো বেঁচে আছি। আর বেশ ভালই তো আছি। চাওয়া পাওয়ার হিসেবগুলো আমার সব মিটে গেছে।
সেদিন পাহাড়ে গেছিলাম। একদিন তুমি আমি যেখানে একসাথে বসে নেকড়ে পূর্ণিমার চাঁদ দেখেছিলাম একসাথে সেই জায়গায় বেশ কিছুক্ষন সময় কাটিয়েছি একা একা। আমার না হাসি পাচ্ছিলো। কত না পাগলামি আর ছেলেমানুষি করেছিলাম দুজন মিলে। জানো সেদিনও বৃষ্টি হয়েছিল। তোমার আমার সবকিছুতেই বৃষ্টির অংশগ্রহণ যেন একটা নিয়ম ছিল। তোমাকে পাওয়া থেকে শুরু করে বিচ্ছেদের দিনটাতেও বৃষ্টি হাজির হয়েছিল তার স্বমহিমায়। প্রথম চুমু খাওয়া,প্রথম হাত ধরা সবদিনই কিন্তু বৃষ্টি স্বাক্ষী ছিল আমাদের। থাক স্মৃতিচারণ আর না করি। চিনচিনে কেমন যেন একটা ব্যথা অনুভূত হয়ে বুকে স্মৃতিচারণে।
শুনলাম তুমি নাকি তুমুল সংসারী হয়েছ? অথচ একদিন আমরা সন্যাস নেয়ার প্ল্যান করেছিলাম। হাহাহা। আমি পুরো সন্যাসী না হলেও আধা সন্যাসী কিন্তু আমাকে বলায় যায়। হিহিহি। আমি কিন্তু বেশ ভালই আছি। কখনো আমার কথা ভেবে অপরাধবোধে ভেবো না। পারলে আমাকে অনেকখানি ঘৃণাই করিও। অন্তত অপরাধবোধ থেকে বাঁচবে তাহলে। তোমার প্রতি আমার কিন্তু কোন রাগ,অভিমান বা অভিযোগ নেই। তুমি আমায় অনেক দিয়েছ। যা আমার মতো অভাগার পাবার যোগ্যতা ছিল না। তোমার মনে আছে? এক বিকেলে দখিনা আকাশে একখন্ড কালো মেঘ দেখিয়ে বলেছিলাম, দেখেছ নৈঃশব্দবতী দখিনা আকাশে মৃত্যুর ছায়া আঁকা আছে, একদিন আমিও ছায়া হবো তুমি ছবি এঁকো..
আমি কিন্তু সত্যিই ছায়া হয়ে গেছি নৈঃশব্দবতী। শুধু মৃত্যুটুকুই বাকী। জানো,অনেকেই অনেকরকম প্রশ্ন করে। কিন্তু আমি চুপ করে থাকি। চোখের নীচের কালো দাগ দেখে আড়ালে আবডালে অনেকে বাজে কথা বলে। তাদের কি করে বুঝাই বলো তো! আমি রাতে ঘুমুইনা কারণ তোমাকে কথা দিয়েছিলাম যে তোমাকে ঘুম না পাড়িয়ে আমি ঘুমুবো না। তোমাকে দেয়া কথা কি আমি না রেখে পারি বলো? এখন তো আমি জানি না তুমি ঘুমাতে পারো না কি না। তাই জেগে থাকি সারাটি রাত্রি ধরে। আমার কিন্তু কোন কষ্ট হয় না। আমি এখনো তোমাকে ঈশ্বরের দৃষ্টিতে দেখি। বিশ্বাসের জায়গায় আমার কাছে তোমার অবস্থান ঈশ্বরের থেকে বেশি কাছাকাছি…
তোমাকে আজ অনেক কিছুই লিখতে ইচ্ছে করছিলো। কিন্তু হাত কাপছে। ঝাপসা হয়ে আসছে চোখের দৃষ্টি। হুইস্কি তার প্রভাব শুরু করেছে আমার উপর। অথচ একদিন প্রভাব শুধু তোমারই ছিল। ভালই থেকো প্রিয়তমা।  আর হা আমি এখনও তোমাকে ভয় পাই। তাই এই অগোছালো জীবনের খবর লুকিয়েই রাখতে চাই। বরাবরের মতো এই চিঠি কিছুদিন পকেটবন্দী হয়েই থাকবে। পরে আবার কোন এক বৃষ্টির দিনে হয়তো টুকরো টুকরো করে ছিড়ে ফেলবো। আবার হয়তো নতুন করে লিখবো কোন একদিন।
দখিনা হাওয়ায় সেদিনই মৃত্যুর গন্ধ পেয়েছিলাম যখন তোমার আমার বিচ্ছেদ ঘটেছিলো সময় আমাকে একটি চিরস্থায়ী মৃত্যু উপহার দিয়েছে তোমার বিচ্ছেদের প্রতিটি সেকেন্ড,আমার একেকটি মৃত্যু মুহুর্ত।
সব শেষ হয়ে যায়। হৃদয়ে থেকে যায় শুধু তোমার নাম। তুমি আমার আপন মানুষ যে…..

চিঠি পড়া শেষ হয়। কিছুক্ষন স্তব্ধ হয়ে থাকে ডা,সুদীপ্ত। বাইরে বৃষ্টির বেগ আরো বেড়ে গেছে। জলের ছাট এসে ভিজে গিয়েছে শরীরের একপাশ। পাশ থেকে সিগারেটের প্যাকেট টা হাতে নিয়ে একটা সিগারেট ধরায়। তারপর এসে দাঁড়ায় গ্রিলের কাছে। টুকরো টুকরো করে ছিড়ে ফেলে চিঠিটা। চোখের সামনে তার ভেসে ওঠে লাশকাটা ঘরে রাখা সেই অচেনা প্রেমিকের ছবি। বৃষ্টির বেগ বাড়তেই থাকে……

নীলিমা নীলু'র কবিতা কলম


আমার আছে একমাত্র পরম বন্ধু
তার নাম কলম
এ যে শত্রুর যম
কলম তুমি নও শুধু ক্ষুদ্র তুচ্ছ হাতিয়ার
কাগজের বুকে খসখস শব্দে ধেয়ে চল
সে শব্দ যেন চলমান ট্যাংক বহরের গর্জন
নিধন কর শত্রু,জয় কর কত জনপথ রাজধানী।
তোমার মহান আসন
মানুষের হৃদয় বরাবর জামার এক ছোট্ট পকেটে
তোমার আয়তন ত সুবিশাল নয়
অথচ তোমার দাপট এটমের চেয়েও ভয়ংকর।
ধ্বংস কর, কর নির্মাণ, কত মানব মন
জ্ঞানী গুণীরাই জানে তোমার মহিমা অপার
কেবল তারাই তোমাকে করে সদ্ব্যবহার,
করে ধারণ আমরণ পণ...।

মিঠুন সাহা নরসিংদী ছাত্র-যুব ঐক্য পরিষদের সভাপতি নির্বাচিত

জহিরুল ইসলাম :
 নরসিংদী হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সভায়, প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি মণ্ডলীর সদস্য, সাবেক রাষ্ট্রদূত ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক ড. নিমচন্দ্র ভৌমিক| উপস্থিত ছিলেন সভাপতি/ সাধারণ সম্পাদক নরসিংদী জেলা পূজা উদযাপন পরিষদ| সভাপতি/ সাধারণ সম্পাদক নরসিংদী হিন্দু মহাজোট|

সভাপতিত্ব করেন নরসিংদী হিন্দু-বৌদ্ধ ঐক্য পরিষদের অধ্যাপক অহিভূষন চক্রবর্তী, সভা সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক রঞ্জন সাহা| সভায় বক্তব্য রাখেন নরসিংদী জেলা যুবলীগের সভাপতি বিজয় কৃষ্ণ গোস্বামী সহ হিন্দু সমাজের নেতৃবৃন্দ| উক্ত সাধারণ সভায় নরসিংদী জেলা ছাত্র যুব ঐক্য পরিষদের সভাপতি এলটন গোস্বামী মিঠুন সাহা কে সভাপতি ও সুমন ঘোষ কে সাধারণ সম্পাদক হিসেবে নির্বাচিত করে নরসংদী শহর শাখার কমিটি ঘোষণা করে|

শনিবার, ২২ সেপ্টেম্বর, ২০১৮

কবিতা নীলিমা নীলু



কবিতা!  তুমি আমার পরম আনন্দ

আমার প্রিয়তম সখা

আমার স্বপ্নচারিনী তুমি

আমার কল্পনায় অদেখা।

তুমি আমার অন্তরের সুখ বসন্তের সুস্নিগ্ধ সমীরণ

দুঃখে বেদনায় তুমি জননীর আকুল স্নেহভাজন।

সংগ্রামে সংকটে তুমি প্রেরণাদায়িনী একান্ত সুহৃদ

তোমার সাধনায় জাগি নিরব রজনী চোখে নাই নিদ।

চির সাথী হয়ে তুমি থাক মোর জীবনে মরণে

অস্ত না যাওয়া গ্রহ তাঁরা তুমি আমার গগনে।

আমার ভাষা আর শব্দের নৈপুণ্য হও মূর্তিমান

জেগে থাকো তুমি হৃদয়ে উজ্জ্বল মহীয়ান।

শুক্রবার, ২১ সেপ্টেম্বর, ২০১৮

ছোট গল্প আমার কথা গল্পকার মনি রায় ঘোষ



"ছোটবেলা থেকেই আমি একটু সাহিত্য প্রেমী।যেকোন ধরনের গদ্য পদ্য দেখলেই জল দিয়ে গিলে খেতে ইচ্ছে করতো।কারো বাড়িতে গেলে যদি পছন্দের লেখকের বই দেখতাম তাহলে হ্যাংলার মত চেয়ে নিয়ে আসতাম।যদি না দিত তাহলে চুরি করে নিয়ে আসতাম।।।পড়ে আবার সময়মত ফেরতও দিয়ে আসতাম।একদম ই অভদ্র চোর ছিলাম না।একদিন পড়ার বই এর মধ্যে লুকিয়ে গল্পের বই পড়তে গিয়ে কাকিমার কাছে ধরা পড়ে গেছিলুম।সে বাপু এক কেলেঙ্কারি কান্ড হয়েছিল বটে।সেত প্রায় কান ধরে আমার মাতৃ দেবীর কাছে নিয়ে যাওয়ার জন্য উদ্যত।
যাই হোক পায়ে ধরে কান্নাকাটি করে সে যাত্রা রক্ষা পেয়েছিলাম বটে।তবে সেই অভ্যাস টা কিন্তু ছিলই।শুধু আরেকটু সতর্ক হতে হয়েছিল এই যা।

লুকিয়ে লুকিয়ে গল্পের বই কবিতার বই পড়ার অপরাধে কত যে মার খেয়েছি মা এর কাছে তা আর মনে না করাই ভাল।আসলে পড়া লেখাতে কোন কালেই বাবা মা কে খুশি করতে পারিনি আমি।কোনদিনই তাদের পছন্দ মত রেজাল্ট করতে পারিনি তাই একরকম বাধ্য হয়েই বোধহয় মা আমার সাহিত্য প্রেমের বিরুদ্ধা চারন করত।আমি বুঝতাম সেটা।কিন্তু কি করতাম।ওই পড়া শুনা নামক ব্যাপারটা আমার কাছে বরাবরেরই অপ্রিয় বিষয়বস্তু ছিল।তা আর কে বুঝত।কাকেই বা বোঝাতে পারতাম।

একটু বড় হতে নিজেই কলম ধরলাম কবিতা লেখার চেষ্টায়।লিখতাম ও হিজিবিজি।সেসব কবিতা হত কিনা সেটা বলা মুশকিল।আমার এক মাষ্টার মশাই ভাল কবিতা লিখতেন।তার পর থেকে ওনাকেই আমার কবিতার গুরু ভাবতে শুরু করলাম।সেটা অবশ্য ওনার অজান্তেই।রোজ একখানা হিজিবিজি লিখে ওনার হাতে ধরিয়ে দিতাম।উনি ভুল ত্রুটি শুধরে দিতেন।উনিও মনে মনে এই কাজখানা ওনার ডিউটির মধ্যেই ফেলেছিলেন যদিও এর জন্য আলাদা কোন মাইনে দেয়া হতনা।তবুও উনি আগ্রহের সহিত এই কাজখানা করতেন।

আমার পরিবারে দুর দুর পর্যন্ত তাকালেও একজন সাহিত্য প্রেমী খুজে পাওয়া যাবে না এটা আমি হলফ করে বলতে পারি।ছোটবেলায় অবশ্য মা কে গল্পের বই পড়তে দেখতাম।আমার এক দুর সম্পর্কের মামা ছিলেন যিনি কড়া দামে গল্পের বই ভাড়া দিতেন।মা কে দেখতাম ওনার কাছ থেকে বই ভাড়া করে এনে পড়ত।সন্ধ্যে বেলা মা আমাকে পাড়া থেকে কুড়িয়ে নিয়ে আসত।গায়ের ধুলো কাদা ঝেড়ে মানুষের রুপ ফিরিয়ে পড়তে বসাত।আর তখন মা ও গল্পের বই নিয়ে বসত ঠিক আমার পাশটিতে।একেই তো নাচুনি বুড়ি তার মধ্যে আবার ঢোলের বাড়ি।নাচতে তো ইচ্ছে জাগবেই।আমার আর কি দোষ।কিন্তু মা সেটা বুঝলে তো।মা তো সময় কাটানোর জন্য কড়া দামে বই আনত যাতে আমাকে পড়াতে অধর্য না হতে হয়।কিন্তু ওই গল্পের বই এর মধ্যেই যে আমার প্রেম লুকিয়ে আছে সেটা মা বুঝবেই বা কি করে।

আমি সেই ছোটবেলা থেকেই তাসলিমা নাসরিন এর অন্ধ ভক্ত।ওনাকে মনে মনে গুরু মেনে এসেছি বরাবরই।ওনার মত বাস্তববাদী লেখিকা আমি আজ অবধি খুব কমই দেখেছি।সারাজীবন উনি মেয়েদের সন্মান নিয়ে ভেবেছেন।ওনার লেখার মাধ্যমে প্রতিবাদ করেছেন।তার জন্য ওনাকে অনেক অপমান লাঞ্ছনা সইতে হয়েছে।দেশ থেকে পর্যন্ত তারিয়ে দেয়া হয়েছে।এত কিছুর পরেও উনি ওনার কলম থামান নি।প্রতিবাদ বন্ধ করেন নি।নিজের জায়গা থেকে এক চুল নড়েন নি।
আমার বাবা মাঝে মধ্যে ওনার বই নিয়ে আসত হাতে করে দু এক খানা মা এর জন্য।আমি ওগুলো লুকিয়ে লুকিয়ে পড়তে গিয়েও কম পিঠ ফোলাই নি।যাই হোক সেসব এখন অতীত।ভাগ্য টা বরাবরই আমার এমনি উল্টো।
বিয়ে করলাম একজন ঘোর অসাহিত্যিক কে।
যিনি কোনদিনই ধর্য ধরে একখানা গল্প পড়ে শেষ করতে পারেন নি।আর ওনার কাছে এটা খুবই আশ্চর্যের যে কেউ কি করে গল্পের বই এর মধ্যে মুখ গুঁজে বসে থাকতে পারে।তাই আমিও এনার কাছে বেশ আশ্চর্যেরই বটে।
অবশ্য এসবে আমার দুঃখ নেই কোনকালেই।
যা লিখি যা পড়ি তা আমার একান্ত আপনার।আমার বেচে থাকার শক্তি ।
কেউ পড়ল কিনা কেউ দেখল কিনা তা নিয়ে মাথা ব্যাথা খুব একটা হয়না।আমি আমার কথা লিখি।রাগ হোক কিংবা আনন্দ।আমার সবেতেই ছন্দ।
যা আমি মুখে বলতে পারি না তা আমার কলম বলে।আমার সবথেকে কাছের বন্ধু আমার কলম।

বৃহস্পতিবার, ২০ সেপ্টেম্বর, ২০১৮

কবি লুফাইয়্যা শাম্মীর এক গুচ্ছ কবিতা



 রাত

আমি বিষণ্ণ রাত-
চাঁদ হেলে পড়লে ঢলে পড়ি।
এক হাতে সূর্য নিয়ে আমার বুকে ছুড়ে জিউস,উত্তপ্ত বিছানায় প্রেমিকার প্রত্যাখ্যানে।অভিশাপ দিতে দিতে সরে যাই,নেমে আসে দিন।

ফিরে আসি বারংবার, প্রেমিকার টানে।একটা প্রগাঢ়  চুম্বন, কিছু বিষণ্ণ স্মৃতি ছুঁয়ে ভাবি-হয়তো আমি কোনো চর্বির পিণ্ড- যে ভার সইতে না পেরে জিউসপত্নী সরে যায় দূরে।
নেমে আসে বিষণ্ণ রাত।


স্বপ্ন

আমার কোনো স্বপ্ন নেই-
বৃষ্টির মত ঝরেছে যে ফুল সেখানে আমার কোনো গন্ধ নেই,শুধু মুগ্ধতার মায়া কান্নায় কেঁদে চলেছি স্রোতের মত।
স্বপ্ন স্বর্ণলতার মত তরতর করে বেয়ে উঠেনা আমার ঘরের কার্নিশে,
বাগানবিলাস আজকাল আর ফুটেনা তাই।
এই যে আজ সত্যি কথার মত মেঘ ও আমায় বৃষ্টি হয়ে ছোঁয় না যেন আমি নিষিদ্ধ কোনো পাপ।
তবুও আমার মেঘের মতো জমাট বাঁধা সেই স্বপ্ন ছুঁতে ইচ্ছে করে,জানতে ইচ্ছে করে তারা বৃষ্টি হয়ে ঝরে নাকি আকাশ হয়ে রয় মাথার উপর।
আমি একটা আকাশ চাই,যেখানে বিস্তৃত থাকবে আমার অধিকার আর স্বপ্নেরা।


ভালোবাসি

শব্দের বাহুল্যতায় জটিল কাব্য তুমি,
যেখানে ইচ্ছের ঘুরপাকে শব্দ সাজাতে যেয়ে পা পিছলে যাই বারংবার ;আঙুল ছুঁইয়ে যদি ভরসা দাও
অপেক্ষা সেই সময়ের-
ব্যাকরণের "তীর্থের কাক" হয়ে অপেক্ষা সেই অমোঘ ক্ষণের -ক্লান্ত -ঘুম ঢুলো ঢুলো চোখে।

পদচিহ্ন খুঁজে ফেরা সেই পথ-যে আঙিনায় শুকোতে দিয়েছি আমার আদ্র হৃদয়।

সমুদ্রের মত বিশাল তোমাতে যখন আকাশ নামে-আমি পথ খুঁজেফেরা এক নদী ;তোমার বুকে আছড়ে পড়ার অপেক্ষায় কাটে এক একটা মুহূর্ত।
যেখানে বিলীন এক গাঙচিলের সুখ!

অপেক্ষার ভার পাহাড়সম -তবুও আকুল প্রতীক্ষা সেই মুহূর্তের!
যখন সকল দ্বিধা কিংবা জড়তা ভেঙে;চলমান সময়ের মতই চঞ্চল হয়ে
বুকে আছড়ে পড়ে বলবে 'ভালোবাসি'।

বুধবার, ১২ সেপ্টেম্বর, ২০১৮

নীলিমা নীলুর কবিতা উপমা

উপমা

সাগর আকাশ যখন দেখলো মোর চোখে...
শুধালাম -কি  মনে হয়?
বললো আমায় এবার হয়েছে পরাজয়।।         
যখন  দেখলো মোর হাসি...
বললাম নয়ন ভরে দেখো                         
আমাকে  ম্লান করেছে এ কোথা থেকে এসে । 
স্বপ্নে যখন বললাম তাকাও ভালো করে     
বললো শেষে,,,উপমা  দেই কিসে                   
আমি যে হেরে গেছি তোমার রুপে                             
তোমাকে  খোঁজার মতো দুটো চোখ 
অপলক তাকিয়ে নয়নে নয়নে রেখে
তোমার কপলে আলতো ছোঁয়া
 এঁকে দিলেম মনের অজান্তে।।।

কবি ফারহানা নিমগ্ন দুপুর পেলেন বিচারপতি এস এম মজিবুর রহমান সম্মাননা স্মারক ২০১৮

ফখরুল হাসান :--

কবি ফারহানা নিমগ্ন দুপুর
পেলো বিচারপতি এস এম মজিবুর রহমান সাহিত্য সম্মাননা স্মারক-২০১৮  অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মহামান্য বিচারপতি এস এম মজিবুর রহমান ও মিসেস মজিবুর।
গ্লোরিয়াস চাইনিজ রেস্টুরেন্ট কাঁটাবন ১১-০৯-১৮ সন্ধ্যায় বেশ কয়েকজন তরুণ কবিদের এই সম্মাননা দেয়া হয়। অনুষ্ঠানটি সঞ্চলনা করেন কবি ফারিহা রহমান স্নেহা। অনুষ্ঠানে আগত কবিদের উৎসাহ দেয়ার জন্য।  বিচারপতি এস এম মজিবুর রহমান বলেন। এটা আমার নিজস্ব আয়োজন , নবীন লেখকদের উৎসাহ দেয়াই একমাত্র উদ্দেশ্য । ষোল কোটি জনগণের এই দেশে হাতে গোনা গুটিকয়েক ভালো লেখক আছে । এখন থেকে ভালো লেখক তৈরি না হলে এই দেশ মেধাশূন্য হয়ে যাবে । তাই যারা লেখালেখি করছে তাদের উৎসাহ উদ্দীপনা দিয়ে। ভালো লেখক হওয়ার জন্যই আমার এই প্রচেষ্টা ।